বাজুস প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীরের নেতৃত্বে অচিরেই বিশ্ববাজারে স্বর্ণ রপ্তানি করা হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংগঠনটির সাবেক সভাপতি ও বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ডিস্ট্রিক্ট মনিটরিংয়ের চেয়ারম্যান ডা. দিলীপ কুমার রায়।
তিনি বলেন, আমাদের নতুন প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীরের নেতৃত্বে শিগগিরই বিশ্ববাজারে আমরা স্বর্ণালংকার রপ্তানি করব।
আমাদের দেশের স্বর্ণালংকার বিদেশে রপ্তানি হবে। গার্মেন্টস শিল্পের পর যদি কোনো অর্থনৈতিক শিল্প থাকে, বৈদেশিক আয়ের কোনো শিল্প থাকে, সেটা হবে বাংলাদেশ জুয়েলারি শিল্প।
তিনি বলেন, আমরা এক সময় ব্যবসা করতাম চোরের মতো। শত শত ভরি স্বর্ণলংকার নিয়ে আমরা দুশ্চিন্তায় রাতে ঘুমাতে পারতাম না, কখন পুলিশ আসে, কখন এনবিআরের লোক আসে, এ ভয়ে। স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের কথা চিন্তা করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর কন্যা মাত্র এক হাজার টাকার বিনিময়ে এ স্বর্ণের বৈধতা দিয়েছেন। স্বর্ণ নীতিমালা ঘোষণা করেছেন। ফলে আমরা বুক ফুলিয়ে ব্যবসা করতে পারছি। আর এশিয়ার বৃহত্তম শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি হওয়ার পরও অবহেলিত জুয়েলারি শিল্পের উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিয়েছেন সায়েম সোবহান আনভীর। এ জন্য আমরা তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।
প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া স্বর্ণ নীতিমালার আলোকে আমরা স্বনির্ভর হবো। এখন আর মেড ইন সুইজারল্যান্ড নয়, এখন আমাদের বাংলাদেশের স্বর্ণের বারের একদিকে থাকবে বঙ্গবন্ধুর ছবি, আর অন্যদিকে থাকবে মেড ইন বাংলাদেশ। আমরা বিদেশে রপ্তানি করে জিডিপিতে ভূমিকা রাখব, যোগ করেন তিনি।
সোমবার (২ জানুয়ারি) বিকেলে সিরাজগঞ্জ শহরের শহীদ এম মনসুর আলী অডিটোরিয়ামে বাজুস সিরাজগঞ্জ জেলা শাখা আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. দিলীপ কুমার রায় বলেন, আমরা যে কয়টি জেলায় অনুষ্ঠান করেছি, তার মধ্যে সিরাজগঞ্জ প্রথম হয়েছে। এরই মধ্যে আমাদের প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীর মেসেজে দেখেছেন এবং তিনি সিরাজগঞ্জবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে আমাদের মেসেজ পাঠিয়ে লিখেছেন, এগিয়ে যান।
সব স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে বাজুসের সদস্য হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, যেখানেই অনিয়ম দেখবেন, যেখানে নিম্নমানের স্বর্ণ বিক্রি করতে দেখবেন এবং যাদের চোরাই স্বর্ণ কিনতে দেখবেন, তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করবেন, এ ধরনের ব্যবসায়ীদের তালিকা করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে দিয়ে তাদের দোকান সিলগালা করা হবে। রাতারাতি ধনী হওয়ার জন্য যা ইচ্ছা তাই বাজারজাত করবেন, মূল্য ঠিক থাকবে না, ক্যারেট ঠিক থাকবে না-এমন হযবরল ব্যবসা বাংলাদেশে আর হবে না। আমরা বৈধ ব্যবসা করেই তো লাভ করতে পারি, অসৎ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আমরা থাকব না।
বাজুস সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি সন্তোষ কুমার কানুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক গোবিন্দ কর্মকারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন-বাজুসের সহ-সভাপতি ডা. দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহীন, সহ-সম্পাদক মো. জয়নাল আবেদীন খোকন, সহ-সম্পাদক ও ভাইস চেয়ারম্যান বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন এক্সিবিশন, ট্রেড অ্যান্ড ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট নারায়ণ চন্দ্র দে, কার্যনিবার্হী সদস্য ও সদস্য সচিব বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ল’ অ্যান্ড মেম্বারশিপ মো. রিপনুল হাসান, কার্যনির্বাহী সদস্য ও সদস্য বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ডিস্ট্রিক্ট মনিটরিং পবিত্র চন্দ্র ঘোষ ও সিরাজগঞ্জ শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেলিম আহম্মেদ। এছাড়া বাজুসের বিভিন্ন উপজেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা বক্তব্য দেন।
এর আগে দুপুরের দিকে শহীদ এম মনসুর আলী অডিটোরিয়াম থেকে বর্ণাঢ্য র্যালী শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এতে ছিল ঐতিহ্যবাহী ঘোড়ার গাড়ি। র্যালীতে সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ নেতৃত্ব দেন।
সন্ধ্যায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন ঢাকা, কুষ্টিয়া ও সিরাজগঞ্জের শিল্পীরা।