প্রতিনিধি
চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় দফার তফসিলে হাজীগঞ্জ ও কচুয়া উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন এ তফসিল ঘোষণা করে। এ ধাপে হাজীগঞ্জ ও কচুয়াসহ দেশের ৮৩ উপজেলার নির্বাচন হবে। ঘোষিত তফসিল হচ্ছে : মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ১৫ ফেব্রুয়ারি, বাছাই ১৭ ফেব্রুয়ারি, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ২৪ ফেব্রুয়ারি এবং ভোটগ্রহণ ১৫ মার্চ শনিবার।
এদিকে তফসিল ঘোষণার সাথে সাথেই নির্বাচনের তোড়জোড় ও প্রার্থীদের দৌড়ঝাপ পুরোদমে শুরু হয়ে গেছে। বড় দলগুলো থেকে দলীয় একক প্রার্থী হতে নানা চেষ্টা-তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। তারা তৃণমূলের মতামত নিজেদের আয়ত্ত্বে আনতে সকল ধরনের চেষ্টা ও লবিং চালাচ্ছেন। এক্ষেত্রে এগিয়ে আছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ থেকে তিনজন দলের একক প্রার্থী হিসেবে সমর্থন পেতে তালিকায় আছেন। তাঁদের ভাগ্য নির্ধারণ হবে আজ। আওয়ামী লীগের প্রার্থী নির্ধারণের জন্য আজ শনিবার দলের বিশেষ বর্ধিত সভা আহ্বান করা হয়েছে। চেয়ারম্যান পদে তিন জন হেভিওয়েট প্রার্থী দলের সমর্থন পাওয়ার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। এরা হলেন বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য অধ্যাপক আব্দুর রশিদ মজুমদার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব হেলাল উদ্দিন মিয়াজী ও সাধারণ সম্পাদক গাজী মোঃ মাঈনুদ্দিন।
অপরদিকে বিএনপির সমর্থন পেতে প্রার্থী তালিকায় রয়েছেন গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ও কেন্দ্রীয় ওলামা দলের সহ-সভাপতি মাওঃ নজরুল ইসলাম তালুকদার, বিএনপি সমর্থক, হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদের মোতাওয়াল্ল�ী ও হাজীগঞ্জ মডেল ইউনিভার্সিটি কলেজের অধ্যক্ষ ড. মোঃ আলমগীর কবির পাটওয়ারী, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোল্লা মোহাম্মদ হোসেন মাহমুদ, পৌর বিএনপির কার্যকরী সদস্য ইবনে মিজান রনি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতা, ৬নং বড়কুল (পূর্ব) ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা আবু জাফর ছিদ্দিকী।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতা-কর্মীদের হিসেব নিকেশে কেউই উপজেলা পরিষদের চেয়ারটি হারাতে চান না। তাই চুলচেরা বিশ্লে�ষণ করে দু� দলই একক প্রার্থী দেয়ার সিদ্ধান্তে উপনীত হবে বলে দলের নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে। সাধারণ নেতা-কর্মীদের ধারণা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন দলীয় নির্বাচন না হলেও দুই দল থেকেই চূড়ান্ত প্রার্থী দেয়া হবে। তবে মাঠ জরিপে দেখা যায়� তৃণমূল নেতা-কর্মীরা তাকিয়ে আছে দলীয় সিদ্ধান্তের উপর। তারা বলছে, দল যাকে সিদ্ধান্ত দিবে তাকে নিয়েই মাঠে কাজ করবো আমরা।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব হেলাল উদ্দিন মিয়াজী প্রার্থী হওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দলীয় সিদ্ধান্ত আমার পক্ষে আসলে এবং নেতা-কর্মীরা চাইলে আমি নির্বাচন করতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত। বর্তমান চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুর রশিদ মজুমদার বলেন, জীবনের বেশিরভাগ সময় পৌরসভায় ও উপজেলায় থেকে দলমত নির্বিশেষে জনগণের সেবা করে এসেছি। এবার দল থেকে আবার সুযোগ দেয়া হলে নির্বাচন করতে প্রস্তুত রয়েছি।
কেন্দ্রীয় ওলামা দলের সহ-সভাপতি মাওঃ নজরুল ইসলাম প্রার্থী হওয়া প্রসঙ্গে বলেন, গত নির্বাচনে দলের প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছি। এবারও দল থেকে সমর্থন পেতে আমি শতভাগ আশাবাদী। তৃণমূল নেতা-কর্মীদের এবং দলের সিদ্ধান্ত পেলে আমি বিজয়ী হয়ে আসতে পারবো।
এদিকে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পূর্বেই কয়েক সপ্তাহ যাবৎ হাজীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে নিজেকে চেয়ারম্যান প্রার্থী ঘোষণা করে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন অধ্যক্ষ ড. মোঃ আলমগীর কবির পাটওয়ারী। নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি দীর্ঘদিন যাবৎ বিএনপির রাজনীতির একজন সমর্থক হিসেবে কাজ করে আসছি। ২০০৬ সালে বিএনপি দু�ভাগে বিভক্ত হওয়ার পর আমার প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বার্থে সক্রিয়ভাবে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়াইনি। ইতোমধ্যে হাজীগঞ্জে আমার বিভিন্ন অর্জন হাজীগঞ্জবাসী প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দেখেছে। এক প্রশ্নের জবাবে আলমগীর কবির পাটওয়ারী বলেন, জনগণের কাছাকাছি যাওয়ার জন্য নির্বাচন ছাড়া বিকল্প কোনো পথ নেই। বিএনপির সমর্থন পাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমি দলের সমর্থন পাওয়ার জন্য জেলা বিএনপির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মমিনুল হকসহ স্থানীয় সব নেতা-কর্মীর সাথে যোগাযোগ করেছি। দলের সমর্থন পেলেও প্রার্থী হবো আর না পেলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবো।
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোল্লা মোহাম্মদ হোসেন মাহমুদ বলেন, তৃণমূলের সিদ্ধান্তে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে। আমি নিজেও প্রার্থী হিসেবে দলের সিদ্ধান্তকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বলে মেনে নেবো। আগামী বৃহস্পতিবার দলের প্রার্থী চূড়ান্ত করার জন্য দলের সভা আহ্বান করা হয়েছে।