সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট: চাঁদপুরের প্রবীন ও বিশিষ্ট আওয়ামীলীগের নেতা আব্দুর রহিম গাজী (৭২) অর্থের অভাবে কঠিন রোগে (হৃদরোগ ও ডায়াবেটিক রোগে) আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা করতে পারছেনা। বর্তমানে সে মারাত্মক অসুস্থ্য হয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে বলে জানা গেছে। আব্দুর রহিম গাজী শহরের পৌর আওয়াম ীলীগের ৭নং ওয়ার্ডের সাবেক সভাপতি। তিনি ৫২ বছর যাবত ছাত্র জীবন থেকেই তিনি রাজনীতি করে যাচ্ছেন। তিনি এখন বর্তমান সরকার প্রধান ও দেশরত্ন,বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চাঁদপুর-৩ আসনের সাংসদ শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনি’র আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, বিগত প্রায় ৫২ বছর যাবত আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে জীবনের উপার্জিত সব অর্থ শেষ করে এখন কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়ে বিনা চিকিৎসায় তিনি এখন মরন পথের যাত্রী হয়ে নিজ বাসভবনে ধুকে-ধুকে মরতে যাচ্ছে। তাকে দেখার ও খোঁজ খবর নেওয়ার জন্য দলীয় কেউই তার বাড়িতে আসছেন না।
রহিম গাজী বিগত বছর হঠাৎ মারাত্মক ডায়াবেটিক ও হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। পরে দেশে কয়েক লাখ টাকা ব্যয় করে চিকিৎসা করেও কোন প্রতিকার পাননি।
তিনি জানান, অবশেষে ব্যবসা পরিচালনার কয়েক লক্ষ টাকা ব্যয় করে ১৯৯৮ সালে ভারতের কলিকাতা বিড়লা (বিএম বিল্লাহ) হাসপাতালে হার্টের চিকিৎসা করান। তিনি সেখানে ওপেন হার্ট সার্জারী করান চিকিৎসক শেঠির মাধ্যমে। বিগত ১০-১২ বছর যাবত তিনি ভাল থাকার পর আবারও মারাত্মক ডায়াবেটিক ও হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন।
বর্তমানে তিনি অর্থের দিক থেকে নি:শ্ব হয়ে যাওয়ায় চিকিৎসা করতে পারছেন না। চিকিৎসক তাকে বলেছে, তার হার্টে আবার কয়েকটি ব্লক হয়ে গেছে। এ জন্য উন্নত চিকিৎসা করতে হবে। হার্টে ব্লক সাড়াতে হলে ওপেন হার্ট সার্জারী অথবা এনজিও প্লাস্টি (রিং পড়ানো) সার্জারী করতে হবে। এরই মধ্যে তিনি পূনরায় আবার গত ২ সপ্তাহ পূর্বে তার হার্ট এর্টাক হলে তাকে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দিয়ে চিকিৎসক ঢাকায় গিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য পরামর্শ দেন।
তার পরিবারের লোকজন জানায়, তিনি অর্থের অভাবে ঢাকা গিয়ে চিকিৎসা করাতে পারছেন না।
রহিম গাজী জানান, দীর্ঘ বছর যাবত আমার ব্যবসা বন্ধ রয়েছে। রাজনীতি করতে গিয়ে সব অর্থ ব্যয় করে এখন আমি নি:শ্ব হয়ে পড়েছি। তিনি ২ ছেলে ও ২ মেয়ের জনক। এক মেয়ে বিয়ে হলেও ছোট মেয়েটি বর্তমানে অধ্যায়নরত।
দুই ছেলে ও আওয়মী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। এক ছেলে যুবলীগের সদস্য ও অপর ছেলে ছাত্রলীগের সদস্য বলে জানা গেছে।
রহিম গাজীর ৫ সদস্যের পরিবারের সংসার এখন চলতে হচ্ছে অনেক কষ্ট শিকার করে। তার মধ্যে এ প্রবীন আওয়ামী লীগ নেতার চিকিৎসা করানোর মত অর্থ ব্যয় করার অবস্থা এখন এ পরিবারের নেই। তার শারীরিক অবস্থা দিনদিন অবনতির দিকে যাচ্ছে। জীবনের ৫২টি বছর যে দলের রাজনীতি করলো রহিম গাজী সে দলের কেহ তাকে তার এ বিপদের দিনে তাকে দেখতে আসছেনা এবং তার খোজঁ ও কেহ নিচ্ছে না বলে তার পরিবারের সদস্যরা অভিমান ও অভিযোগ করে এ কথা বলেন।
তিনি স্বাধীনতার পূর্ব থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হয়ে বিরোধীদলের বহু নির্যাতনের শিকার হয়ে ও বহু মামলার আসামী হয়ে জেল ও হুলিয়া মাথায় নিয়ে জীবনের ৫২টি বছর যাবত নিজ অর্থ ব্যয় করে রাজনীতি করে গেছেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধো অংশ গ্রহন না করলেও এ দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের সকল প্রকার সহযোগিতা করেছেন।
রহিম গাজী চাঁদপুর শহরের উত্তর শ্রীরামদী জামতলা এলাকার মৃত-আহাম্মদ আলী গাজীর ছেলে। তিনি যুবক বয়সে শহরের ৫নং ঘাট এলাকায় ডিজেল, পেট্রোল ও কেরেনাসিন তেলের এক বড় ধরণের ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শকে লালন করে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতিকে মনে প্রানে ভাল বেসেগেছেন।
জীবনের শুরু থেকেই রাজনীতি করতে গিয়ে বহু চড়াই-উৎরাই সহ্য করে মামলা মোকদ্দামার আসামী হয়ে নির্যাতিত হয়ে সেসব মামলা থেকে নিজেকে রক্ষা করার চেষ্টা ও দলীয় অন্য সদস্যকে সহযোগিতা করে দলের জন্য কাজ করে গেছেন। সেই সময় বিএনপি নির্যাতনের শিকার হয়েও দল ত্যাগ করেনি। বিগত ৫২ বছর রাজনীতি করে বিভিন্ন পদ মর্যাদা পেলেও দলটিকে বাদ দিয়ে অন্যদলে যাননি। তিনি দলের জন্য নি:স্বার্থ ভাবে কাজ করে গেছেন।
তিনি গত ১০টি বছর যাবত শহরের পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে দলীয় নেতা কর্মীদের সুখেদুখে পাশে থেকে দলকে ঘুচিয়ে রেখেছেন। তিনি পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন ২০১৯ সাল পর্যন্ত। বর্তমান সময়ে আওয়ামী লীগ দেশের দায়িত্ব পালন কালে কোন সহযোগিতা তিনি দল থেকে পাননি। তিনি তার এ কঠিন রোগের চিকিৎসার জন্য বর্তমান সরকার প্রধান ও দেশরত্ন,বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চাঁদপুর-৩ আসনের সাংসদ মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রী ডা:দীপু মনির একান্ত সহযোগিতা কামনা করছেন।
চাঁদপুরনিউজ/ এমএমএ/