ঢাকা: পল্লবীর ডিওএইচএসের ডাস্টবিন থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার হওয়া গৃহকর্মী আদুরি শনিবার পরিবারের কাছে ফিরছে। তার শরীরিক অবস্থা আগের চেয়ে অনেক ভালো। শিশুটি বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাসিস সেন্টারে (ওসিসি) চিকিৎসাধীন। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢামেক হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেল আদুরি খেলা করছে। তার চেহারায় খুশির ছাপ লক্ষ্য করা গেছে। আদুরি এবার ঈদে সাতটি নতুন জামা ও দুই জোড়া জুতাসহ বিভিন্ন জিনিস পেয়েছে। প্রায় এক মাসের বেশি সময়ে আদুরির শরীরে নির্যাতনের ক্ষত অনেকটাই শুকিয়েছে। কপালে টিপ পরেছে সে। নাকে ফুল, কানে দুল আর রঙ করা নখ নিয়ে বেশ হাসিখুশি দেখাচ্ছিল তাকে। আদুরি বলে, ‘নদী আমাকে প্রায়ই মারতো। আমারে খাইতে দিতো না। না খাইয়া থাকতাম। না খাইতে খাইতে শরীরে বল পাইতাম না। শেষে নদী আমারে ময়লার মইধ্যে ফালাইয়া দিছে। গ্রামে যেতে ইচ্ছে করে কি না জানতে চাইলে সে বলে, ‘খুব ইচ্ছা করে। ভাইয়েরা আমারে আদর কইরা তারপর সাগরে জাল বাইতে যাইবো। ওসিসির প্রধান ডা. বিলকিস বেগম ঢাকাটাইমসকে বলেন, আদুরি এখন সম্পূর্ণ সুস্থ। তাকে আগামী শনিবার দুপুরে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। সেখানে সাংবাদিকসহ মিডিয়া ব্যক্তিত্বদের আমন্ত্রণ জানানো হবে। তিনি বলেন, যদি গ্রামের বাড়িতে গিয়ে আদুরি সমস্যায় পড়ে সেক্ষেত্রে আবার ঢাকায় ফিরিয়ে এনে সরকারি সেল্টার হোমে রাখা হবে। গত ২৩ সেপ্টেম্বর আদুরিকে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ২৬ সেপ্টেম্বর ওসিসি বিভাগে স্থানান্তর করা হয়। ২৮ সেপ্টেম্বর আদুরির উন্নত চিকিৎসার জন্য মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। বর্তমানে তার ওজন আট কেজি বেড়েছে। আদুরির মা শাপিয়া বেগম বলেন, ‘ডাক্তারদের সহযোগিতায় আল্লাহর রহমতে আমার মেয়ে এখন অনেকটা সুস্থ। আদুরির গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফলের জৈনকাঠিতে। তিন বছর আগে বাবা আব্দুল খালেক মারা যাওয়ার পর নয় সন্তান নিয়ে গ্রামেই ছিলেন শাফিয়া বেগম। গত ২৩ সেপ্টেম্বর রবিবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে মিরপুরের পল্লবীতে ময়লার স্তূপ থেকে অচেতন অবস্থায় আদুরিকে উদ্ধার করেন ক্যান্টমেন্ট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল মান্নান। এরপর ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার বেনজীর আহমেদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে মহানগর পুলিশ উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশনের সহায়তায় তাকে ২৬ সেপ্টেম্বর ঢামেক হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করা হয়। ওই দিন পল্লবীর নিজ বাসা থেকে আদুরির গৃহকর্তী নওরীন জাহান নদীকে গ্রেপ্তার করা হয়। নদীর স্বামী সাইফুল ইসলাম মাসুদ এমএলএম ব্যবসায় জড়িত থাকায় আগে থেকেই পলাতক।
শিরোনাম:
বৃহস্পতিবার , ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ , ২৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।