শহর প্রতিনিধি ==
চাঁদপুরে ১৮ দলীয় জোট কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ৪৮ ঘন্টার অবরোধ কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন চাঁদপুর শহরে সাংবাদিকদের উপর ককটেল নিক্ষেপ, পুলিশের গাড়ি ভাংচুর, রেললাইন উৎপাটনসহ ব্যাপক সহিংসতার মধ্যদিয়ে দ্বিতীয় দিনের অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। শহরের ২টি স্থানে পুলিশের সাথে অবরোধকারীদের সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশ কয়েক রাউন্ড টিয়ারসেল ও সর্টগানের গুলি ছুড়ে। পুরো শহর থেকে পিকেটিং করা অবস্থায় পুলিশ ৭ পিকেটারকে আটক করেছে।
গতকাল ২৭ নভেম্বর বুধবার সকালে জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি মানিকুর রহমান মানিক, সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ বাহারের নেতৃত্বে ছাত্রদল নেতা-কর্মীরা শহরের মিশন রোড এলাকায় চাঁদপুর-কুমিল্লা রেলপথের একটি কালভার্টের উপর আগুন জ্বেলে রেল লাইন অবরোধ করে। একই জায়গায় অবরোধকারীরা মূল রেললাইনের উপর পরিত্যক্ত লাইন উঠিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করে। এ সময় পুলিশ অবরোধকারীদের ধাওয়া করলে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট, পাথর, নিক্ষেপ করে। এতে কয়েকজন পুলিশ আহত হয়। অবরোধকারীরা পুলিশকে বহন করা একটি মিনি ট্রাকে হামলা চালায় ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে ভাংচুর করে।
এ সময় পুলিশ ৩ রাউন্ড টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে। অপরদিকে চাঁদপুর সরকারি কলেজ এলাকায় করিম পাটওয়ারী সড়কের উপর (শেখ হাসিনা ছাত্রীনিবাস সম্মুখে) ছাত্রদল কর্মীরা রাস্তার উপর কাগজ স্তুপ দিয়ে তাতে আগুন ধরিয়ে অবরোধ করার চেষ্টা চালায়। এসময় পুলিশ তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করতে ধাওয়া দিলে, অবরোধকারীরা পুলিশের দিকে চুনের পানির বোতল ও ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে। এ সময় পুলিশ ৩ রাউন্ড সর্টগানের গুলি ছুড়লে অবরোধকারীরা পালিয়ে যায়। একই দিন ভোররাত ৪টায় চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথের উয়ারুক নামক স্থানে শাহরাস্তি উপজেলা ১৮ দলীয় জোট নেতা-কর্মীরা প্রায় ১৫০ ফিট রেল লাইন উপড়ে ফেলে দেয়। সকাল ৬টা থেকে ৮টা পর্র্যন্ত প্রায় দেড় শতাধিক যাত্রী নিয়ে চাঁদপুর থেকে চট্টগ্রাম অভিমুখে ছেড়ে যাওয়া আন্তঃনগর মেঘনা এক্সপ্রেস ট্রেন ঐস্থানে আটকা পড়ে। লাকসাম থেকে ইঞ্জিনিয়ার টীম এসে সকাল সাড়ে ৮টায় রেল লাইন মেরামত করলে রেল চলাচল স্বাভাবিক হয়। সকাল ৯টায় জেলা বিএনপির কার্যালয় থেকে অবরোধের সমর্থনে একটি মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি দলীয় কার্যালয় থেকে বের হয়ে কালীবাড়ি শপথ চত্বর এলাকায় এসে পুলিশের তৎপরতা দেখতে পেয়ে পুনরায় মিছিলটিকে ঘুরিয়ে দলীয় কার্যালয়ে নিয়ে যায়। মিছিল শেষ হলে দলীয় কর্মীরা জেএম সেনগুপ্ত রোডে ব্যাডমিন্টন ও ক্রিকেট খেলায় মেতে উঠে। মিছিলের নেতৃত্ব দেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি এসএম কামাল উদ্দিন চৌধুরী, শরিফ মোঃ ইউনুস, যুগ্ম সম্পাদক দেওয়ান মোঃ সফিকুজ্জামান, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক খলিলুর রহমান গাজী, যুব বিষয়ক সম্পাদক ফেরদৌস আলম বাবু, জেলা যুবদলের সভাপতি শাহজালাল মিশন, সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন, শহর যুবদলের আহ্বায়ক আঃ কাদের বেপারী, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মানিকুর রহমান মানিক, সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ বাহারসহ ১৮ দলীয় নেতা-কর্মীরা।
সকাল থেকেই ছাত্রদল নেতা-কর্মীরা চাঁদপুর সরকারি কলেজের সামনে অবস্থান নেয়। তারা শেখ হাসিনা ছাত্রী নিবাসের সামনে খরকুটা কুঁড়িয়ে বিশালাকারে স্তুপ দিয়ে আগুন ধরিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করে। ঐসব কাগজের মধ্যে পবিত্র কুরআন শরীফ শিক্ষার প্রথম স্তর নূরানী আমপারার পাতা পর্যন্ত আগুনে পুঁড়িয়ে দেয়। দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা আগুন নেভাতে গেলে ঐ বইটি দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে তা পানিতে ভাসিয়ে দেয়। তখন অনেকেই সেখানে মন্তব্য করেন, এ কেমন জ্বালাও পোড়াও রাজনীতি। এদের কাছে আরবী বিষয়টিও যেন দৃষ্টি গোছর হয়নি। একদিন এর জবাব দিতে হবে।
এদিকে সকাল ১১টায় বাসস্ট্যান্ড এলাকার অবরোধ সমর্থনকারী পিকেটাররা সময় টিভি ও এস টিভির চাঁদপুর প্রতিনিধি ফারুক আহমেদ ও জিএম শাহিনের মোটরসাইকেল লক্ষ্য করে ককটেল নিক্ষেপ করে। এ ককটেল বিষ্ফোরণে বিকট শব্দে তারা আহত হয়। এ ছাড়াও চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের বাবুরহাট, কুমারডুগী, ঘোষেরহাট, মান্দারীসহ বিভিন্ন স্থানে প্রায় শতাধিক টায়ারে আগুনে জ্বালিয়ে রাখা হয়।
শিরোনাম:
মঙ্গলবার , ১৭ জুন, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ৩ আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।