কৃষকের স্বার্থ বিবেচনায় সরকার আপাতত পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেবে না। যাতে পেঁয়াজের দাম বাড়লে কৃষক উপকৃত হয়। এদিকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের প্রভাবে রাজধানীর খুচরা বাজারে গত দুই দিনের ব্যবধানে প্রতি কেজি পেঁয়াজে মানভেদে পাঁচ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৯ মার্চ পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদনের মেয়াদ শেষ হয়। সে সময় রমজানে দেশে পেঁয়াজের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে চলতি মাসের ৫ মে পর্যন্ত আমদানির সময় বাড়ানো হয়। এরপর নতুন করে আমদানির অনুমোদন না দেওয়ায় পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে।
হিলি স্থলবন্দর কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, এই বন্দর দিয়ে সর্বশেষ গত ৩০ এপ্রিল ১ হাজার ৯০২ টন পেঁয়াজ এসেছে। ঈদের জন্য ১ মে থেকে ৬ মে পর্যন্ত হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ ছিল। কিন্তু ছুটি শেষে বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি শুরু হলেও আর কোনো পেঁয়াজ আসেনি। জানা গেছে, ব্যবসায়ীরা নতুন করে পেঁয়াজ আমদানির জন্য অনুমতি চেয়ে আবেদন করলেও তা দেওয়া হচ্ছে না। এদিকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের প্রভাবে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়তে শুরু করেছে। গত দুই দিনের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজে মানভেদে পাঁচ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি ও আমদানিকৃত পেঁয়াজ ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হয়। অথচ দুই দিন আগে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ২৫ থেকে ৩০ টাকা ও আমদানিকৃত পেঁয়াজ ২৫ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সরকারের বিপণন সংস্হা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশও (টিসিবি) গতকাল তাদের বাজারদরের প্রতিবেদনে পেঁয়াজের দাম বাড়ার বিষয়টি জানিয়েছে। রাজধানীর কাওরান বাজারের পাইকারি পেঁয়াজ বিক্রেতা আমিনুল বলেন, পেঁয়াজের আমদানি বন্ধের খবরে দাম বাড়তে শুরু করেছে। ভারত থেকে আমদানিকৃত যে পেঁয়াজ এখন ৩০ টাকা বিক্রি হচ্ছে, তা গতকালও ২৭ টাকা ছিল।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকার যে কৃষকের কথা বিবেচনা করে নতুন করে পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দিচ্ছে না। কিন্তু কৃষক কি আদৌ পেঁয়াজের ন্যাঘ্যমূল্য পাবে? কারণ, প্রান্তিক কৃষকরা খেত থেকে ফসল তোলার সঙ্গে সঙ্গে তা বিক্রি করে দেয়। ফলে পেঁয়াজ এখন মধ্যস্বত্তভোগীদের কাছে চলে গেছে।
এ প্রসঙ্গে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক গতকাল ইত্তেফাককে বলেন, আমরা কৃষকের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে আপাতত পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দিচ্ছি না। আমরা চাচ্ছি, কৃষক যেন তার ফসলের দাম পায়। তবে, বাজার পরিস্থিতি আমরা পর্যালোচনার মধ্যে রাখব। অবস্থা বুঝে পেঁয়াজ আমদানির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।