শহর প্রতিনিধি-
চাঁদপুর সদর উপজেলার আশিকাটি ইউনিয়নে একই বাড়ির জায়গা-জমি সংক্রান্ত সংঘর্ষের ঘটনায় প্রাইমারী স্কুলে পড়া আশিক (১২) নামে এক ছাত্র নিহত হয়েছে। দু’ পক্ষের সংঘর্ষে কমপক্ষে ১০জন আহত হয়। এরা হচ্ছেন : মুন্না (২৬), কালাম (২৬), মর্জিনা (২২), আমির হোসেন (৭০), হারিছ (৪০), শাহাআলম (৪৫), ফাতেমা (৪২), মাসুদ (২৮), বিলস্নাল (২৫) ও হারুন (৩৫)। হত্যার সাথে জড়িত ৪ জনকে চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশ আটক করেছে। এই ৪ জনই চিকিৎসার জন্য চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। দুপুর ১২টায় হাসপাতালে স্লিপ কেটে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালের বেডে শুয়েছিলেন তারা। বিকেলবেলা তারা শুনতে পান তাদের সংঘর্ষের সময় আশিক নামে যে শিশুটিকে মাথায় ও পিঠে আঘাত করেছে সে মারা গেছে। এ ঘটনা শুনে পুলিশ তাদেরকে আটক করার জন্য চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে অভিযান চালায়। পুলিশের অভিযানের খবর পেয়ে তারা হাসপাতাল থেকে পালিয়ে চাঁদপুর লঞ্চঘাটে চলে যায়। এদের মধ্যে মাসুদ ও বিল্লাল পুলিশ দেখে নদীতে ঝাপ দেয়। চাঁদপুর মডেল থানার এসআই মানিক নৌকা দিয়ে তাদেরকে নদীর মাঝখান থেকে আটক করে মডেল থানায় নিয়ে আসে। আটককৃতরা হলেন মাসুদ (২৮), বিল্লাল (২৫), হারুন (৩৫) ও ফজিলাতুননেছা (৪২)।
জানা যায়, দক্ষিণ আশিকাটি ইউনিয়নের শাহতলী রাস্তার মাথায় মাইনুদ্দীন খান বাড়িতে জায়গা জমি সংক্রান্ত ঘটনা নিয়ে মুন্না-কালামদের সাথে দীর্ঘ ২ বছর ধরে বিল্লাল, হারুন ও মাসুদ গংয়ের বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে এলাকায় স্থানীয়ভাবে বেশ কয়েকবার সালিসও বসে। গতকাল সকালে মাইনুদ্দীন খান বাড়িতে কালামদের ভাবী মর্জিনা (২৮) ঘাটের পাড় থেকে মাটি আনতে যায়। মাটি কেনো নিচ্ছে এ নিয়ে বিল্লাল ও মাসুদ মর্জিনার গলায় ওড়না দিয়ে ফাঁস দেয়ার চেষ্টা করে। পরে উভয় পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় একই বাড়ির জসিমের ছেলে আশিক উঠানে গেলে বিলস্নালদের লোকজন তাকেও মারধর করে। তাকে প্রথমে চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করে। ঢাকা যাত্রাবাড়ি পৌঁছার আগেই সে মারা যায়। রাতেই তার লাশ চাঁদপুর মডেল থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে পুলিশ লাশটির ময়না তদন্ত শেষে নিহতের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন।
নিহত আশিকের মা শাহানাজ বেগম চাঁদপুর থানায় কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, আমি আমার ছেলেকে নিয়ে ঢাকা থাকতাম। মাত্র তিন মাস আগে এ বাড়িতে এসে উঠি। দু’ পক্ষের সংঘর্ষে আজ আমার ছেলেকে বিদায় নিতে হলো। আমি প্রশাসনের কাছে আমার ছেলে হত্যার বিচারের দাবি জানাচ্ছি।