ভোজনরসিকদের এখন সুসময়! সাগরে যেমন ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ছে তেমনি বাজারেও সরবরাহ প্রচুর। ফলে দাম অনেকটাই নাগালের ভিতর। একটু দরদাম করে কিনলেই এক কেজি ওজনের একটি ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে কমবেশি ৬’শ টাকায়।
সুবাতাস বইছে পিঁয়াজের বাজারেও। গত সপ্তাহের তুলনায় নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যটির দাম আরো কমেছে। দাম কমার তালিকায় আরো আছে সয়াবিন তেল ও চিনি। তবে দাম বেড়েছে আদার। এছাড়া সবজির বাজার চড়া।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর কাওরানবাজার, নিউমার্কেট ও শান্তিনগরবাজার ঘুরে বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দামের এই চিত্র পাওয়া যায়। মাছ বাজারে গিয়ে দেখা যায়, প্রচুর ইলিশের আমদানি। আকারেও বেশ বড় বড়। রীতিমতো চকচক করছে ইলিশের গা।
ভোজনরসিকরাও সুযোগ বুঝে ঝুঁকছেন ইলিশের দিকে। কাওরানবাজারের ইলিশের ক্রেতা আব্দুল হাকিম বলেন, সবসময়ই ইলিশের দাম থাকে মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে। এবার সে তুলনায় দাম বেশ কম। তিনি ৯’শ গ্রাম ওজনের একটি ইলিশ ৫৬০ টাকায় কিনেছেন বলে জানালেন।
এই বাজারের মাছ ব্যবসায়ী আনিছার বলেন, সাগরে এখন প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। ফলে বাজারগুলোতে ইলিশের আমদানি বেড়েছে। এক কেজি ওজনের একটি ইলিশ ৬’শ থেকে ৭’শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে তিনি জানান। কিন্তু এক মাস আগেও এক কেজি ওজনের একটি ইলিশ হাজার টাকার নিচে পাওয়া যায়নি।
তিনি বলেন, বাজারে ইলিশের সরবরাহ বাড়ার আরেকটি কারণ এর রফতানি বন্ধ থাকা। তবে এরপরও ভারতে প্রচুর পরিমাণে ইলিশ পাচার হচ্ছে বলে তিনি জানান।
গতকাল বাজারে অন্যান্য মাছের মধ্যে রুই আকারভেদে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা, কৈ ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, পাঙ্গাস ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা, তেলাপিয়া ১২০ থেকে ১৫০ টাকা ও চিংড়ি আকারভেদে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়।
বর্তমানে প্রতি কেজি দেশি পিঁয়াজ ৫৮ থেকে ৬২ টাকা ও আমদানিকৃত পিঁয়াজ ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহের শুরুতে কেজিতে ২ থেকে ৩ টাকা বেশি দরে বিক্রি হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সরকারের বিপণন সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) ৪৭ টাকা কেজি দরে পিঁয়াজ বিক্রি করায় বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। ফলে কমতির দিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যটির দাম।
গতকাল বাজারে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন ১০৪ থেকে ১০৬ টাকা, ১ লিটারের বোতল ১২২ থেকে ১২৬ টাকা ও ৫ লিটারের বোতল ৫৯৫ থেকে ৬১০ টাকা দরে বিক্রি হয়। কিন্তু এক সপ্তাহ আগে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন ১০৬ থেকে ১০৮ টাকা, ১ লিটারের বোতল ১২৮ থেকে ১৩১ টাকা ও ৫ লিটারের বোতল ৬১০ থেকে ৬৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়। চিনির কেজি বিক্রি হয় ৪৪ থেকে ৪৫ টাকা। যা গত সপ্তাহে ছিল ৪৬ থেকে ৪৮ টাকা।
বাজারে মানভেদে প্রতি কেজি আদা বিক্রি হয় ১৪০ থেকে ১৬০ টাকায়। যা গত সপ্তাহে ছিল ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা। এছাড়া সবজির বাজার বেশ চড়া। বাজারভেদে প্রতি কেজি সিম ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ঝিঙ্গা ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, বেগুন ৫০ থেকে ৬০ টাকা, মুলা ২৫ থেকে ৩০ টাকা, আলু ১৬ থেকে ১৮ টাকা, ঢেড়স ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, পটল ২৮ থেকে ৩০, কচুর লতি ও বরবটি ৩৫ থেকে ৪০, টমেটো ৮০ থেকে ১০০ ও চিচিঙ্গা ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হয়। কাঁচা মরিচের কেজি বিক্রি হয় ৫০ থেকে ৬০ টাকায়।