মিজান লিটন-
চাঁদপুর: জাতীয় সম্পদ ইলিশ রক্ষায় প্রজনন মৌসুমে চাঁদপুর পদ্মা-মেঘনার ১০০ কিলোমিটার এলাকায় ১১ দিন জাল ফেলা যাবে না। বন্ধ থাকবে সব ধরনের মাছ শিকার। আগামি ১৩ অক্টোবর থেকে ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা থাকবে।
এ নির্দিষ্ট সময়ে মাছ ধরা, পরিবহন, বিক্রি ও মজুদ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।
সরকারি এ আদেশ অমান্য করলে দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে অভিযুক্তদের ১ মাস হতে সর্বোচ্চ ৬ মাসের কারাদণ্ড এবং ১ হাজার টাকা জরিমানা গুণতে হবে। তাই এ নির্দিষ্ট সময়ে স্থানীয় প্রশাসন নদীতে জাল ফেলা নিষিদ্ধ করেছে।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য অফিস বাংলামেইলকে জানায়, সরকারের এ মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে নোয়াখালীর চর আলেকজান্ডার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার এলাকার তদসংলগ্ন নদী, মাছ বাজার ও আড়তগুলোতে প্রজনন মৌসুমে ২৪ ঘণ্টা অভিযান অব্যাহত থাকবে। সেই সঙ্গে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ইতোমধ্যে নদী উপকূলীয় এলাকায় মাইকিং, ব্যানার, লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে।
এছাড়াও ইলিশ সম্পদ রক্ষায় গত ৩০ সেপ্টেম্বর চাঁদপুর সদর উপজেলা মিলনায়তনে এক সভায় ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডভিত্তিক কমিটি গঠন করা হয়। আগামি ১০ অক্টোবর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এ ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা হবে বলে সূত্র জানায়।
চাঁদপুর মৎস্য ও গবেষণা ইন্সিটিটিউট সূত্র জানায়, আশ্বিনে ভরা পূর্ণিমায় মা ইলিশ প্রচুর ডিম পাড়ে। পূর্ণিমার আগের ৫ দিন ও পরের ৫ দিনকে ইলিশের প্রজনন মৌসুম হিসেবে ধরা হয়।
এ নির্দিষ্ট সময়ে মা ইলিশ উপকূলীয় এলাকা থেকে ডিম ছাড়ার জন্য পদ্মা-মেঘনায় চলে আসে। আর তখনই যদি ইলিশ ধরা বন্ধ করা যায়, তবেই ইলিশের সংখ্যা বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে।
সে অনুযায়ী এ বছর ১৩ অক্টোবর থেকে ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত ১১ দিন ইলিশের প্রজনন মৌসুম হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রতন দত্ত বাংলামেইলকে বলেন, সরকারের এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে মৎস্য বিভাগের সঙ্গে জড়িত সরকারি সব কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
এ বছর সরকার প্রজনন মৌসুমকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দিয়ে এ কার্যক্রম সফল করার পরিকল্পনা নিয়েছে। আমরাও এ কার্যক্রম শতভাগ বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি।
তবে সাফল্য অর্জনে মৎস্য পেশার সঙ্গে সম্পৃক্তদের সহযোগিতা প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।