মেঘনা নদী পাড়ি দিয়ে কত তরী যায় উজান-ভাটির দেশে। এমনি একটি তরীর মালিক গফুর মাঝি। গফুর তার ছন্দ নাম।তার বসতি নিবাস মেঘনার কূলে। শাদী করেছে ছাওয়াল সংখ্যা হালি চারেক্ সংসার বেশ ভারী। বেশ ভালোই চলছে গফুরের সংসার। সুখের কমতি নেই। কমতি শুধু বিদ্যার।
গফুর পণ করেছে সে তার সন্তানদেরকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলবে। এরুপ আর কত উচ্চ বয়ান। গফুর যথেস্ট ভালো মনের মানুষ। তার অন্যতম গুণ হল অতিথি আপ্যায়ন। সেই সভ্য মানুষটি হাটা ধরল অসভ্য জগতের দিকে।
দিনশেষে মাঝিরা তাদের তরীগুলো নিদিস্ট গন্ডির মধ্যে নোঙ্গর ফেলে অবস্হান করে সবাই এক জায়গায়। তাদের মধ্যে আবার কয়েকজন মেতে উঠে ৫২তাসের ভানুমতি খেলায়। ৫২ তাসের আড্ডায় গফুর একজন নিত্যসঙ্গী। গফুর মাঝির আর্থিক অবস্হা ভালো পিছুটান নেই বললেই চলে। তাই গফুর তার সঞ্চিত অথ দ্বারা ভাগ বসায় ইশকা, রুইতনের আড্ডায়।
সোজাকথা গফুর নিত্যদিন এখন পূজা করে ইশকা, রুইতনের। এর দায়ে শেষ পযন্ত জেলের ঘানি টানতে হয়েছে গফুরকে। তবুও কমেনি বিন্দুমাএ ইশকা, রুইতনের প্রতি তার ভালো লাগার টান। কমেছে সংসারের প্রতি মায়া। গফুর বেখেয়ালী বনি আদম তাই সংসারের প্রতি উদাসীন। ঘরে তার শাদীর উপযুক্ত মেয়ে এ নিয়ে গফুরের কোনরুপ মাথা ব্যথা নেই।বাপের অপবাদ তার ছাওয়ালদের
উপর প্রভাব পড়ে তাই এ পথ হতে বাবাকে সরাতে তাদের মাথা ছুঁয়ে কসম কাটায় গফুর সহজ-সরল মানুষের মত কসম কাটে।প্রতিবেশী বয়স্ক লোকরা এসে গফুরকে বোঝায় তোর বাপ-মা বেঁচে নেই তুই এখন পরিবারের প্রধান বয়স হইছে একটু মাটির দিকে তাকিয়ে চল।
তারা তাকে ৩০পারা কোরআন ছুঁয়ে শপথ করায় সে কসম গ্রহণ করে এবং এ পথে আর যাবে না বলে প্রতিশ্রুতি দেয়।কিছুদিন গত হলে গফুর ফিরে যায় পুরানো স্বভাবে।
৫২ তাসের ভানুমতি খেলায় গফুর এক এক করে সব হারিয়ে মাঝি থেকে মাল্লা হয়ে পরের নৌকায় এখন কম যোগান দেয়।মাল্লা হওয়ার পর গফুর আরো বেশী অগ্রণী ভূমিকা পালন করে ইশকা, রুইতনে।
রাত-নিশিতে গফুর নেশাকরের মত নিবাক দৃস্টিতে তাকিয়ে থাকে তার ভানুমতি খেলার সহযোগী বন্ধুদের অপেক্ষায়।
লোকবল কম হলে গফুর অন্যের টাকা-পয়সার দায়ভার কাধেঁ নিয়ে পূণ দল গঠন করে ভানুমতির খেলায় মাতে। এ অপরাধের দায়ে সালিশ পযর্ন্ত গড়ায়। অপরাধের দায়ে পরিবারের অন্য সদস্যরা চাপ প্রয়োগ করলে গফুর আত্নভোলা মানুষের মত বলে আমাকে বেশী জ্বালাতন করিস না তা হলে চলে চিরতরে না ফেরার দেশে।
লেখক,
এম.এইচ.মাহিন