দেশের বেসরকারি মেডিকেল কলেজে পড়তে লাগে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা। পাঁচ বছর মেয়াদি ব্যাচেলর অব মেডিসিন অ্যান্ড ব্যাচেলর অব সার্জারি (এমবিবিএস) কোর্সে ভর্তি হওয়ার পর কোর্স শেষ পর্যন্ত ব্যয় করতে হয় প্রায় ৫০ লাখ টাকা। যদিও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক নির্দেশনায় ভর্তি ফি ও টিউশন ফি বেঁধে দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে- সরকারের নির্দেশনার বাইরে নামে বেনামে বিভিন্ন ফি আদায় করছে মেডিকেল কলেজগুলো। সব মিলে এমবিবিএস কোর্সে শিক্ষার্থীদের খরচ গিয়ে ঠেকছে ৪০ লাখ থেকে ৫০ লাখে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের গত ১৬ ফেব্রুয়ারির প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বেসরকারি বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে বিভিন্ন ফি নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ভর্তি ফি ১৯ লাখ ৪৪ হাজার টাকা, ইন্টার্নশিপ ফি ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়। এ ছাড়া প্রতি মাসে টিউশন ফি ১০ হাজার টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। সে হিসাবে পাঁচ বছরের কোর্স শেষ করতে শিক্ষার্থীদের শুধু টিউশন ফি পরিশোধ করতে হবে মোট ৬ লাখ টাকা। সব মিলে বেসরকারি মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস কোর্স শেষ করতে ২৭ লাখ ২৪ হাজার টাকা লাগার কথা থাকলেও খরচ হচ্ছে অনেক বেশি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর ইস্কাটনে একটি মেডিকেল কলেজে ভর্তি ফি ও টিউশন ফি বাদে ইউনিভার্সিটি রেজিস্ট্রেশন, অ্যাফিলিয়েশন, বিএমডিসি রেজিস্ট্রেশন, মার্কশিট ভেরিফিকেশন, কলেজ ম্যাগাজিন, আইডি কার্ড, লাইব্রেরি চার্জসহ বিবিধ খাতে ভর্তির প্রথম তিন মাসেই দিতে হয় আরও ৭০ হাজার টাকা। ক্লিনিক্যাল ট্রেনিং ফি দিতে হয় ২০ হাজার টাকা। এ ছাড়া ফিল ভিজিট বা স্টাডি টুর নামে নেওয়া হয় আরও ২০ হাজার টাকা। এ ছাড়াও বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে আদায় করা হয় ভূতুড়ে অনেক ফি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভর্তিচ্ছুর অভিভাবক শরিফুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমার সন্তান ভর্তির সুযোগ পাওয়ার পর একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে যোগাযোগ করলে পাঁচ বছরের কোর্স শেষ হওয়া পর্যন্ত ৪০ লাখ টাকা খরচের একটি ফর্দ ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এমন খরচের তালিকা দেখে ওই অভিভাবক আর বেসরকারি মেডিকেলে সন্তানকে ভর্তির সাহস দেখাননি।