ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তার কাছ থেকে মোহাম্মদপুর থানার একজন পুলিশ কর্মকর্তা টাকা দাবি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। টাকা না দেওয়ায় তাঁকে পুলিশের গাড়িতে তুলে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। প্রায়ে সাড়ে তিন ঘণ্টা পর তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
শনিবার রাতের এই ঘটনায় ব্যাংক কর্মকর্তা রোববার সকালে ওই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
এ ব্যাপারে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জামাল উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
অভিযোগকারী ব্যাংক কর্মকর্তার নাম গোলাম রাব্বী। তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের যোগাযোগ ও প্রকাশনা বিভাগের কর্মকর্তা। জানতে চাইলে আজ রাতে গোলাম রাব্বী মুঠোফোনে প্রথম আলোর কাছে অভিযোগ করেন, গতকাল শনিবার রাত ১১টার দিকে তিনি মোহাম্মদপুরে তাঁর খালার বাসা থেকে কল্যাণপুরে নিজের বাসায় যাচ্ছিলেন। পথে হঠাৎ পেছন থেকে এক পুলিশ সদস্য তাঁর শার্টের কলার ধরে বলেন, ‘তোর কাছে ইয়াবা আছে।’ তিনি অস্বীকার করলে তাঁকে ধরে কিছু দূরে দাঁড়িয়ে থাকা মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাসুদ শিকদারের কাছে নিয়ে যান ওই পুলিশ সদস্য। এসআই মাসুদও তাঁকে বলেন, তাঁর (রাব্বী) কাছে ইয়াবা আছে। তিনি আবারও অস্বীকার করলে এসআই মাসুদসহ পুলিশ সদস্যরা তাঁকে নিয়ে টানা-হেঁচড়া শুরু করেন। একপর্যায়ে তাঁকে জোর করে পুলিশের গাড়িতে তোলা হয়। সেখানে তাঁকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়।
রাব্বী অভিযোগ করে বলেন, ‘আমি পুলিশকে আমার পরিচয় দিই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী বলেও পরিচয় দিই। এটা শুনে এসআই মাসুদ আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। গালাগালি করেন। একপর্যায়ে আমার কাছে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে ক্রসফায়ারের হুমকি দেন।’ রাব্বী অভিযোগ করেন, পুলিশ প্রথম দিকে ফোনে কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেয়নি। পরে রাত আড়াইটার দিকে ফোন করার সুযোগ দেওয়া হয়। এসআই মাসুদ তাঁকে বলেছিলেন, যেন কেউ একজন এসে তাঁকে নিয়ে যায়। তখন রাব্বী তাঁর এক বন্ধুর কাছে ফোন করেন। ওই বন্ধু আরও কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে গিয়ে পুলিশের কাছ থেকে তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে যান।
রাব্বী জানান, পরে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে থেকে চিকিৎসা নেন। আজ এ ব্যাপারে মোহাম্মদপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে এসআই মাসুদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘দেহ তল্লাশি করতে না দেওয়ায় তাঁকে (রাব্বী) গাড়িতে তোলা হয়েছিল। তবে মারধর ও টাকা দাবি করা হয়নি। ক্রসফায়ারের হুমকিও দেওয়া হয়নি।’ সুত্রঃপ্রথম আলো ।