মতলব উত্তর প্রতিনিধি: মতলবে এক সপ্তাহে সংঘর্ষে দিনমজুর মজিবুর রহমান ঢালী, দোকানী শাহআলম ও সন্ত্রাসী হামলায় যুবলীগ নেতা খবির হোসেন নিহত হয়। এ নিহত হওয়ার ঘটনায় মতলবে ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। ৩টি খুনের ঘটনা নিয়ে সাধারণ মানুষ আতঙ্কে রয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে মানুষ চিন্তিত হয়ে পড়েছে।
৩ জুন মতলব উত্তর উপজেলার পূর্ব নাউরী গ্রামে মজিবুর রহমান ঢালী নিজ বসতঘরের উপরের গাছের ডালা পরিস্কার করার সময় পাশের বাড়ির ইদ্রিস মিজির সাথে ঝগড়া বাধে। ঝগড়ার এক পর্যায় ইদ্রিস মিজি মজিবুর রহমান ঢালীকে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে। ইটের আঘাতে মজিব গুরুতর আহত হয়। প্রথমে তাকে মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। ঢাকায় চিকিৎসাকালে তার ক্যান্সার ধরা পরে। ২৯ আগস্ট মজিবুর রহমান মারা যায়। মজিবুরের ছোট ভাই তৈয়ব আলী বাদী হয়ে ইদ্রিস মিজিকে প্রধান আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেছে। নিহত মজিব ঢালীর স্ত্রী মরিয়ম বেগম স্বামীর হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে বলেন, ৪ শিশু নিয়ে নির্ঘুম রাত কাটে, চোখে ঘুম আসে না সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে। আসামিপক্ষ বিভিন্নভাবে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছে। একটি মহল আসামিদের সহযোগিতা করছে।
২৭ আগস্ট মতলব উত্তর উপজেলার ফরাজীকান্দি ইউনিয়নের নয়াকান্দি গ্রামের সমির ও রাজিব উত্তর সর্দারকান্দি গ্রামের বাদামতলী বাজারে মোবাইলে টাকা লোড দেয়ার জন্য গেলে পার্শ্ববর্তী জমিতে ধানের চারা রোপণ করা দেখে তারা শ্রমিকদের সাথে কথা বলে। এ সময় উত্তর সর্দারকান্দি গ্রামের সহিদউল্ল¬াহ, শাহজালাল, বোরহানসহ কয়েকজন তাদের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে হাতাহাতি পর্যন্ত হয়। ওইদিন বিকেলে উত্তর সর্দারকান্দি গ্রামের ২/৩শ’ লোক সমবেত হয়ে নয়াকান্দি গ্রামে লাঠি, রড, সাবল দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে হামলা দেয়ার জন্য আসে। পথিমধ্যে নয়াকান্দি গ্রামের মোস্তফা গাজীর ছেলে দোকানদার শাহআলম (২৫) বাড়ি থেকে ভাত খেয়ে দোকানে আসার পথে সর্দারকান্দির লোকজন তার উপর হামলা করে। হামলায় শাহ আলম গুরুতর আহত হয়। আহত শাহআলমকে প্রথমে মতলব দক্ষিণ উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে পরবর্তীতে চাঁদপুর সদর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চাঁদপুর সদর হাপাতাল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায়
৩০ আগস্ট রাতে মারা যান। মামলায় ও ঘটনার সাথে জড়িত নয়াকান্দি গ্রামের নূর হোসেন মিজির ছেলে মোঃ বোরহানকে আটক করে আদালতে পাঠায়। আদালত তার জামিন মঞ্জুর করে।
২৯ আগস্ট গভীর রাতে মতলব দক্ষিণ উপজেলার টিঅ্যান্ডটি এলাকায় নিজ দলীয় স্বার্থান্বেষীদের হামলায় চাঁদপুর-২ আসনের সাংসদ এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) এম রফিকুল ইসলামের পিএস যুবলীগ নেতা খবিরকে চাপাতি আর রাম দা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে পালিয়ে যায়। ঐ রাতেই খবিরকে ঢাকার ধানমন্ডি গ্রীনলাইফ হাসপাতালে আইসিইউতে রাখা হয়। ৪ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৯ টায় খবির হাসপাতালে মারা যায়। এ ঘটনায় পুলিশ মো. নজরুল ইসলাম (২১) এবং মো. নুরুন্নবী (২৩) নামে দু’জনকে আটক করে। খবিরের মৃত্যুতে এলাকায় বিক্ষোভ চলছে। স্বজনদের আহাজারিতে আকাশ ভারি হয়ে উঠছে।
শিরোনাম:
মঙ্গলবার , ১৪ জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ১ মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।