নিজস্ব প্রতিনিধিঃ-
চাঁদপুরে দ্রুত মোটাতাজা করতে গরুকে ভারতীয় নিষিদ্ধ স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ খাওয়ানো হচ্ছে। কোরবানির হাটে আসা ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ এবং বেশি দামে পশু বিক্রির জন্য মালিক ও ব্যবসায়ীরা গরুকে এসব ওষুধ খাওয়াচ্ছেন। এগুলো খেয়ে গরু নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। আক্রান্ত গরুর মাংস খেলে মানুষও নানা রোগে আক্রান্ত হতে পারে।
স্থানীয় লোকজন ওষুধ বিক্রির দোকানগুলোতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে এসব ওষুধ বিক্রি বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।
স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ খাওয়ানো গরুর মাংস খেলে মানুষের শরীরে স্টেরয়েডের উপাদান ঢুকে পড়ে। এতে কিডনির সমস্যাসহ মানুষ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হতে পারে।
প্রাণিসম্পদ কার্যালয়, ওষুধ বিক্রেতা ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ঈদুল আজহা উপলক্ষে গত এক সপ্তাহ ধরে গরুকে স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ যেমন—ডেক্সামেথাসন বা ডেকাসন, বেটামেথাসন ও পেরিঅ্যাকটিন খাওয়ানো হচ্ছে। বাজারের ওষুধ ও মুদি দোকানেও এসব বড়ি বিক্রি করা হয়। দোকানগুলোতে এসব বড়ির গোপন নাম ‘লাল-সাদা ট্যাবলেট’।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গরুর মালিকেরা জানান, লোকমুখে শোনার পর গত বছর তাঁরা এসব বড়ি এনে গরুকে খাইয়েছেন। এতে গরু কিছুটা নিস্তেজ হলেও শরীর মোটা হয়েছিল। পরে সেই পশু এক থেকে দেড় মাস বাড়িতে পালার পর বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। সহজে ও কম সময়ে গরু মোটা হওয়ায় তাঁরা এ বড়ি গরুকে খাওয়াচ্ছেন।
ভারতীয় ওষুধের পাশাপাশি এসব দোকানে বাংলাদেশি স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধও বিক্রি করা হয়।
এসব বড়ি খেলে গরুর কিডনি ও যকৃতের কার্যকারিতা নষ্ট হওয়ায় শরীর থেকে পানি বের হতে পারে না। এ কারণে শোষিত হয়ে পানি সরাসরি গরুর মাংসে চলে যায়। এ কারণে গরু একটু মোটা দেখায়। পাকস্থলীতে ক্ষতের সৃষ্টি হওয়ায় রক্ত পায়খানা শুরু হয়। গত এক সপ্তাহে তিনি এ ধরনের তিনটি গরুর চিকিৎসা দিয়েছেন। প্রথমে স্বীকার না করলেও চাপ সৃষ্টির পর গরুর মালিকেরা ভারতীয় বড়ি খাওয়ানোর কথা স্বীকার করেছেন। স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ খাওয়ানো হলে গরুর মাংস নষ্ট হয়ে যায়। এ মাংস মানুষের জন্যও নিরাপদ নয়। তা ছাড়া এ ওষুধ খাওয়ানো একটি গরু তিন মাস পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। এর পর এমনিতেই পশুটি নিস্তেজ হয়ে পড়ে।
চাঁদপুর নিউজ সংবাদ