শহরিয়ার খাঁন কৌশিক ॥
চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নের পশ্চিম সকদিতে গৃহবধূকে অপহরন করে ঘরে আটকে রেখে প্রতিবন্ধির সাথে জোর করে ভুয়া বিয়ে দেওয়ার ঘটনায় ৮নং বাগাদি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী মাদক মানিক মিয়া তার ভাই প্রতিবন্ধি অপু সহ ৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
সোমবার আটকৃতদের বিরুদ্ধে গৃহবধুর বাবা বাদি হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ সুপারের নির্দেশ্যে ভুয়া তালাক করে বিয়ে দেওয়ার অপরাধে কাজী খোরশেদ আলম(৪৫)কে আটক করা হয়েছে। জানা যায়, রবিবার বিকেলে মডেল থানার এসআই মাসুদ সামিম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে বাগাদী ইউনিয়নের পশ্চিম সকদি গ্রামের মো. রফিকুল ইসলামের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে প্রতিবন্ধি অপুকে আটক ও গৃহবধূ পান্না বেগমকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। গত ১৩ তারিখ শুক্রবার দুপুরে গৃহবধূ পান্না বেগমকে বাড়িতে আটকে রেখে প্রতিবন্ধির সাথে বিয়ে দেয়। ঘটনার পর খবর পেয়ে গৃহবধূ পান্নার প্রথম স্বামী করিমের বাবা শহর আলী বাদি হয়ে চাঁদপুর মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করে। পুলিশ অভিযোগের ভিত্তিতে প্রতিবন্ধি অপুকে আটক ও গৃহবধূ পান্না বেগমকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। চাঁদপুর পুলিশ সুপার শামসুরনাহার গৃহবধূ পান্না বেগমকে জিজ্ঞাবাদ করলে সে লোমহর্সক পুরো ঘটনার বিবরন দেয়। তার পর প্রতিবন্ধির অপু ও তার ইয়াবা সম্ম্রাট বড় ভাই মানিক মিয়াকে আটক করে।
পুলিশ জানায়, গৃহবধূকে অপহরন করে ঘরে আটকে রেখে প্রতিবন্ধির সাথে জোর করে ভুয়া বিয়ে দেওয়ার হয়েছে । গৃহবধূ পান্না বেগম পুলিশ সুপারের কাছে পুরো ঘটনার বিবরন দিয়েছে। ঘটনার ৩ দিন পূর্বে মানিক মিয়া গৃহবধুর কাছ থেকে জোর করে তালাক নিয়ে কাজী রফিকুল ইসলাম ও খোরশেদ আলম ৭/১/২০১৫ তারিখে তাদের রেজিঃ খাতায় লিপিবদ্ধ করেছেন। পুলিশ এই ভুয়া তালাক হয়েছে জানতে পেরে কাজী খোরশেদ আলমকে আটক করে। ঘটনার পর থেকে কাজী রফিকুল ইসলাম পালিয়ে রয়েছে। এই ঘটনায় গৃহবধুর বাবা আবু তাহের বাদি হয়ে ৬ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করে। মামলা নং ৪৬ তাঃ ২৩/১১/২০১৫।
এলাকাবাসিরা জানায়, ৮নং বাগাদি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী এলাকার মাদকের স্বর্গরাজ্য গড়ে তুলেছে। সে রাজনৈতিক দলের নাম ভাঙ্গীয়ে ইয়াবা সহ বিভিন্ন মাদক বিক্রি করে এলাকার যুব সমাজকে নষ্ট করে দিয়েছে। তার বিরুদ্ধে এছাড়া অনেক অভিযোগ রয়েছে। পরের স্ত্রীকে বিয়ে করতে হলে ১ম স্বামীকে তালাক দেওয়ার ৩মাস পুনরায় বিয়ে করতে পারবে। তা না হলে বিয়ে বৈধ নয়, অবৈধ। ঠিক সে কাজটি পশ্চিম সকদি গ্রামের রফিকুর রহমানের ছেলে প্রতিবন্ধী তাজুল ইসলাম অপু করেছে।
উল্লেখ্য, চাঁদপুর সদর উপজেলার ১১নং ইব্রাহিমপুর ইউনিয়নের পশ্চিম জাফরাবাদ এমদাদিয়া মাদ্রাসার পিছনে গফুর আলী শেখ বাড়ির আবু তাহের শেখের মেয়ে পান্না বেগমের সাথে মানিকগঞ্জ জেলার পাল্লা গ্রামের শহর আলীর ছেলে করিমের সাথে ২ বছর পূর্বে বিয়ে হয়। পশ্চিম সকদি গ্রামে প্রতিবন্ধী অপুর বাড়ির পাশে গৃহবধূ পান্না বেগমের বড় বোন সুমির শশুর বাড়ি। ১০ নভেম্বর পান্না বেগম চাঁদপুর এসে খালার বাড়ি হয়ে বোনের বাড়িতে বেড়ানোর উদ্দেশ্যে রওনা হয়। পথিমধ্যে প্রতিবন্ধী অপু তার সহযোগীদের নিয়ে সিএনজি স্কুটার যোগে বাবুরহাট নিয়ে তার বন্ধুর বাড়িতে আটকে রাখে। এ খবর জানাজানি হলে প্রতিবন্ধীর বড় ভাই বাগাদি ইউনিয়নের চেয়াম্যান প্রার্থী রাজনৈতিক দলের নামধারী নেতা মানিক মিয়া বাবুরহাট থেকে গৃহবধূকে এনে তার বাড়িতে ৩ দিন যাবৎ আটকে রাখে।