চাঁদপুর শহরের নিউ ট্রাক রোডস্থ খান সড়ক এলাকায় রাহী আক্তার (২৬) নামে এক নববধূ নিহত হওয়ার ঘটনায় চাঁদপুর মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহত রাহীর পিতা মোহাইমিনুল ইসলাম ভঁূইয়া বাদী হয়ে পাঁচ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। আসামীদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার এ মামলা দেয়া হয়। এদিকে ঘটনার দিন রাতে পুলিশ নিহত ওই গৃহবধূর শ্বশুর আলহাজ্ব এমএ তাহের পাটওয়ারীকে (৭০) যে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে আটক করেছিল, গতকাল শুক্রবার তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ওয়ালী উল্লাহর সাথে কথা বলে এ বিষয়গুলো নিশ্চিত হওয়া গেছে।
১৩ সেপ্টেম্বর বুধবার রাত আনুমানিক ৯টায় গৃহবধূ রাহী আক্তার তার শ্বশুর বাড়ির (নিউ ট্রাক রোডস্থ খান সড়ক এলাকায়) চার তলার ছাদ থেকে নিচে লাফিয়ে পড়ে বলে এলাকাবাসী জানায়। পরক্ষণেই তাকে মুমূর্ষ অবস্থায় চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে কর্মরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। রাহীর শ্বশুর তাহের পাটওয়ারী ও এলাকার লোকজন রাহীকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। ঘটনার সময় রাহীর শ্বশুর এলাকার মসজিদে এশার নামাজে ছিলেন। নামাজ শেষ করে তিনি বাসায় ঢুকতে যখন বাড়ির গেটের কাছাকাছি এসেছেন, ঠিক তখনই উপর থেকে রাহী তার সামনেই পড়ে বলে তিনি বৃহস্পতিবার এ প্রতিবেদকের কাছে বলেন। পুত্রবধূর এ অবস্থা দেখে তিনি নিজেও জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। হাসপাতালে জরুরি বিভাগে তাকেও চিকিৎসা দেয়া হয়। বুধবার রাত প্রায় সোয়া ১টা পর্যন্ত তিনি হাসপাতালেই ছিলেন। পরে তাকে মডেল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
গত ২৮ জুলাই ২০১৭ খ্রিঃ তারিখে হাজীগঞ্জের টোরাগড় এলাকার মোহাইমিনুল ইসলাম ভূঁইয়ার ছোট মেয়ে চাঁদপুর সরকারি কলেজের সমাজকর্ম বিভাগের ৪র্থ বর্ষের ছাত্রী রাহী আক্তারের সাথে চাঁদপুর শহরের নিউ ট্রাক রোডস্থ খান সড়ক এলাকার বাসিন্দা আলহাজ্ব এম এ তাহের পাটওয়ারীর একমাত্র ছেলে মোঃ জিয়াউল হক মামুনের বিয়ে হয়। মামুন ঢাকায় একটি ট্রাভেল এজেন্সীতে চাকুরি করে। মামুনরা ২ বোন ১ ভাই। এক বোন জার্মানিতে থাকেন। ক’দিন আগে তিনি দেশে এসেছেন। রাহী আক্তার চার তলা থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে তার স্বামীর পরিবারের দাবি। তবে কী কারণে আত্মহত্যা করতে পারে সেটা তাদেরও বুঝে আসছে না। মাত্র ৪৮ দিনের সংসারে এমন মর্মান্তিক ঘটনায় শ্বশুর বাড়ির সবাই নির্বাক।
এদিকে স্বামীর পরিবার এটাকে আত্মহত্যা বললেও রাহীর বাবার পরিবারের লোকজন বলছে এটা পরিকল্পিত হত্যাকা-। তাকে হত্যা করা হয়েছে। তার এমন মৃত্যু পরিবারের কেউই স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারছে না। তবে এটি আত্মহত্যা না কি হত্যাকা- তা নিশ্চিত হতে ময়না তদন্ত রিপোর্ট আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। আর আত্মহত্যা হলে সেটা কী কারণে হতে পারে তা অধিকতর তদন্তে বেরিয়ে আসবে বলে মনে করেন উভয় পরিবারের সদস্যরা।