স্টাফ রিপোর্টার:
চাঁদপুর শহরের জেটিসি কলোনীতে গৃহবধূ মুক্তা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে নাকি তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে এ নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন। তবে পরিবারের দাবি মুক্তাকে শ্বশুর বাড়ির লোকজন শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। মুক্তার পিতা দিনমজুর মোঃ মনির হোসেন ভূঁইয়া কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, মুক্তাকে যৌতুকের টাকার জন্যে প্রায়ই মারধর করা হতো। আমার মাইয়া গলায় ফাঁস দেয় নাই। স্বামী সুজন, শাশুড়ি শাহানারা বেগম ও ননদ শান্তা দুপুরে খাবারের পর মুক্তাকে বালিশ চাপা দিয়া মাইরা ফেলাইছে। তারে মাইরা ওড়না দিয়া ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলাইয়া রাখছে। মাটি থেকে মাত্র ২ থেকে ৩ ইঞ্চি উপরে মানুষ কেমনে ফাঁসি দেয়। আমি এর বিচার চাই।
এ বিষয়ে চাঁদপুর মডেল থানার এসআই ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ত্রিনাথ সাহা বলেন, লাশ ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পোস্ট মর্টেমের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত কিছুই বলা যাচ্ছে না। পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, চলতি জানুয়ারি মাসের ৩ তারিখ চাঁদপুর পৌরসভার ১৪নং ওয়ার্ড শিলন্দিয়া গ্রামের মোঃ মনির হোসেন ভূঁইয়ার একমাত্র মেয়ে ফারজানা আক্তার মুক্তার সাথে রেলওয়ে জেটিসি কলোনীর আলমগীর বেপারীর ছেলে কাউছার বেপারীর (সুজন) পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় সুজনকে ৫০ হাজার টাকা নগদ ও ৬ আনি স্বর্ণ দেয়া হয়। বিয়ের আগে সুজন ঢাকায় নকশার কাজ করত। বিয়ের পর সুজন ঢাকায় কাজ ছেড়ে দিয়ে চাঁদপুর চলে আসে। পরে সুজনের মা শাহনারা বেগম ২৬ জুলাই এলাকায় সুজন দোকান দিবে বলে মুক্তাকে বাড়ি থেকে ৫০ হাজার টাকা এনে দিতে বলে। মুক্তা টাকার কথা পরিবারকে বলতে পারবে না বললে স্বামী সুজন, শাশুড়ি ও ননদ শান্তা তাকে মারধর করে। পরে মুক্তা বিষয়টি পরিবারের সদস্যদের জানায়।
গত মঙ্গলবার মুক্তার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হলে বাদ আসর শহরের বাবুরহাট এলাকার শিশু সদনে নামাজে জানাজা শেষে বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন পৌর কবরস্থানে দাফন করা হয়।
উল্লেখ্য, চাঁদপুর শহরের জেটিসি শ্রমিক কলোনিতে গত ৮ আগস্ট সন্ধ্যায় যৌতুকের জন্যে নববধূ ফারজানা আক্তার মুক্তার (২০) লাশ তার স্বামীর ঘরে ফাঁস দেয়া অবস্থায় পুলিশ উদ্ধার করে।