যৌতুকের জন্য শশুর বাড়ীর নির্যাতনে
চাঁদপুরের বিষ্ণুদীতে দুই সন্তানের জননী
সখিনা বেগমকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা
স্টাফ রিপোটার ঃ চাঁদপুর শহরের বিষ্ণুদী ছৈয়াল বাড়ীতে দুই সন্তানের জননী সখিনা বেগমকে (২৭) আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে । যৌতুকের জন্য শশুর বাড়ীর লোকজন নির্মম এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে দুই সন্তানের জননী সখিনা বেগমের ভাই জয়নাল আবেদীন তপাদার । সখিনা বেগমের বাড়ী চাঁদপুর সদর উপজেলার ৪নং শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের কর্দিপাঁচগাঁও গ্রামে। তার দুটি শিশু পুত্র রয়েছে । একজনের নাম সিয়াম (৩ ) আরেকজনের নাম আবু হানিফ ( ১) । ঘটনাটি ঘটেছে গত ২০ মে শুক্রবার বিষ্ণুদী ছৈয়াল বাড়ীতে । এ ঘটনায় সখিনা বেগমের ভাই জয়নাল আবেদীন তপাদার গত ২৫ মে নিজে বাদী হয়ে প্রথমে নারী নির্যাতনের অভিযোগ এনে চাঁদপুর মডেল থানায় এজহার দাখিল করেন (মামলা নং ৫৪ )। এজহারে সখিনার বেগমের স্বামী বাবুল ছৈয়াল (৩৫ ) ,শাশুড়ী আয়েশা বেগম (৫৫) ও ননদ শারমিন আক্তার (২০) কে আসামী করা হয়েছে । এজহারভুক্ত সকল আসামী বর্তমানে পলাতক রয়েছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে । গতকাল ২৬ মে বৃহস্পতিবার আগুনে পোড়া সখিনা বেগম (২৭) ৬দিন মৃত্যু সাথে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে মারা যায় । বিকেলে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে সখিনা বেগমের পোষ্টমটেম করার পর গ্রামের বাড়ী ৪নং শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের কর্দিপাঁচগাঁও জানাজা শেষে পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয় । এ ব্যাপারে চাঁদপুর পুলিশ সুপার সামছুন্নাহার বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেই সাথে সাথে এজহার করার নির্দেশ দিয়েছি । সেই সাথে দ্রুত আসামীদের গ্রেফতার করতে পুলিশকে বলেছি । এক প্রশ্নের জবাবে বলেন ,সির্যাতনের স্বীকার সখিনা বেগমের মারা যাওয়ার খবর পেয়েছি । এ ব্যাপারে কঠোর আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে । এ ব্যাপারে চাঁদপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ওয়ালীউল্যাহ জানান,বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সাথে তদন্ত করছি । এ ঘটনা যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর বব্যস্থা নেওয়া হবে । এ ব্যাপারে চাঁদপুর মডেল থানার তদন্ত কারী কর্মকর্তা এস আই প্রদিপ জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থলে তদন্তে গিয়েছি । ঘটনার সত্যতাও পেয়েছি । আগুনে পোড়া নির্যাতিত সখিনা বেগম চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে মারা যাওয়ার খবর আমি পেয়েছি । এখন এ ঘটনার এজহারটি হত্যা মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হবে । আমি নিজেই হত্যা মামলা রুজুর জন্য আবেদন করবো । এ ব্যাপারে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে নিহত সখিনার বেগমের ভাই জয়নাল আবেদীন তপাদার কান্নাজনিত কন্ঠে বলেন,আমার বোনকে গত ২০ মে রাতে যৌতুকের জন্য তার স্বামী ও শশুর বাড়ীর লোকজন আগুনে পুড়িয়েছে । তখন তার পুরো শরীর ঝলসে যায় । পরে অবস্থা বেগতিক দেখে স্থানীয় লোকজন আমার বোনকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করে । তিনি জানান, বোনের সুখের কথা চিন্তা করে একবার তার স্বামীকে ২লাখ ৭০হাজার টাকা দিয়েছি । এখন আবার ৩লাখ টাকার জন্য চাপ প্রয়োগ করে । কিন্তু ওই টাকা দিতে না পারায় তার শরীরে কেরোসিন ঢেলে তাকে আগুনে পোড়ানো হয় । আমি এ ঘটনার দোষীদের গ্রেফতার করে দ্রুত বিচার দাবী করছি । এ ব্যাপারে নিহত সখিনার চাচাতো ভাই সুজন তপাদার জানান, এ ঘটনায় এখনো কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ । অবিলম্বে আসামীদের গ্রেফতার দাবী করছি । আমরা এ ঘটনার সঠিক বিচার চাই । আসামীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই ।