প্রতিনিধি =
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের অবরোধ আরো ৩ দিন বাড়ানো হয়েছে। আজ ভোরে অবরোধ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সেটা বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে বলে গতকাল বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাউদ্দিন আহমদ ঘোষণা দেন। এর আগে সারাদেশে ৭২ ঘণ্টা অবরোধের কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব (বর্তমানে জেল হাজতে) রুহুল কবির রিজভী। অবরোধের প্রথম দিন বিভিন্ন স্থানে অগ্নিসংযোগসহ ভাংচুর চালায় অবরোধকারীরা। অবরোধের ২য় দিন চাঁদপুরে ঢিলেঢালাভাবে পালিত হয়।
অবরোধের ৩য় দিনে গতকাল চাঁদপুর শহরের বাস স্ট্যান্ড এলাকায় অবরোধকারীদের উপর পুলিশের ব্যাপক লাঠিচার্জ চলে। ঘটনাটি ঘটে সকাল সাড়ে ৯টার সময়। অবরোধের সমর্থনে বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন চাঁদপুর জেলা ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল নেতৃবৃন্দ শহরের বাস স্ট্যান্ড এলাকা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি বাস স্ট্যান্ড এলাকা থেকে ষোলঘর এলাকা প্রদক্ষিণ শেষে বিপণীবাগ এলাকায় যেতে চায়। এ সময় নেতা-কর্মীদের সামনে যেতে পুলিশ বারণ করে। অবরোধকারীদের সাথে পুলিশের কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মিছিলের পেছন থেকে পুলিশ সদস্যরা অবরোধকারীদের ব্যাপক লাঠিচার্জ করে। এ সময় বাস স্ট্যান্ড এলাকা থেকে সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক ও সাবেক ছাত্রনেতা সোলায়মান ঢালীসহ ৬ জনকে আটক করে পুলিশ থানায় নিয়ে আসে। পুলিশের লাঠিচার্জের এক পর্যায়ে অবরোধকারীরা ওই এলাকা ছেড়ে দিলে রাস্তাঘাট অনেকটা অবরোধমুক্ত হয়ে যায়। অবরোধের সমর্থনে সকাল বেলায় শহরের বকুলতলা এলাকায় রেল লাইনে অগি্নসংযোগ করে অবরোধকারীরা। সন্ধ্যায় স্টেডিয়াম রোড এলাকায় অবরোধকারীরা একটি অটোরিক্সা ভাংচুর করে এবং অগ্নিসংযোগ করে। এ ছাড়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে। পুলিশ বিভিন্ন স্থান থেকে অবরোধের সাথে জড়িত ১০ জনকে আটক করেছে।
গতকাল অবরোধের সমর্থনে জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে থেকে মিছিল বের করে ১৮ দলীয় জোট নেতৃবৃন্দ। মিছিলটি দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বের হয়ে শপথ চত্বর প্রদক্ষিণ শেষে পুনরায় জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়। এতে অংশ নেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি এসএম কামাল উদ্দিন চৌধুরী, যুগ্ম সম্পাদক দেওয়ান সফিকুজ্জামান, শহর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আক্তার হোসেন মাঝি, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান গাজী, জেলা যুবদলের সভাপতি শাহজালাল মিশন, সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির বিল্লাল মিয়াজী, শহর জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আরিফুল্লাসহ ১৮ দলীয় জোট নেতৃবৃন্দ।
বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন চাঁদপুর জেলা ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল নেতৃবৃন্দ বাস স্ট্যান্ড এলাকা থেকে মিছিল বের করে। মিছিলে অংশ নেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি জসীম উদ্দিন খান বাবুল, কাজী গোলাম মোস্তফা, জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক অ্যাডঃ জাহাঙ্গীর হোসেন খান, জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক ইখতিয়ার উদ্দিন শিশু, সদস্য সচিব হযরত আলী ঢালী, সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সোলায়মান ঢালী, যুগ্ম আহ্বায়ক খোকন মিজি, শহর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মেরাজ চোকদার, যুগ্ম আহ্বায়ক আকবর মাতাব্বরসহ নেতৃবৃন্দ। মিছিলটি নিয়ে আসার পরই বাস স্ট্যান্ড এলাকায় জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর খান ও জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক ইখতিয়ার উদ্দিন শিশুর সাথে ডিউটিরত পুলিশের পিএসআইদের সাথে কথা কাটাকাটি হলেই শুরু হয় ব্যাপক লাঠিচার্জ।
সকাল সাড়ে ৯টার পর থেকেই শহরে বিভিন্ন যানবাহন চলাচলসহ লঞ্চ ও ট্রেন চলাচল ছিলো স্বাভাবিক। এ ছাড়া কচুয়া উপজেলায় অবরোধকারীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এতে পুলিশসহ ১৫ জন আহত হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কয়েক রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছোড়ে।