শহরিয়ার খাঁন কৌশিক ॥
চাঁদপুরে পদ্মা ও যমুনার অয়েল কোম্পানীর এজেন্টারের তেল বিক্রিত টাকা অচেতন করে ছিনতাইয়ের নাটকের অবশান ঘটেছে। শনিবার দুপুরে শহরের ৫ নং কয়লাঘাট থেকে মডেল থানার এসআই অনুপ চক্রবর্তী সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে অভিযান চালিয়ে আত্বসাৎ করা ৪ লক্ষ ২২ হাজার ৩৬০ টাকা উদ্ধার করেছে। এই ঘটনায় ট্রাংক লরীর হেলপার কালু গাজী (২০)সহ তার সহযোগি সাইফুল(২২)কে আটক করেছে পুলিশ।
জানা যায়, চাঁদপুর কালিবাড়ি মোড় থেকে মাইক্রোবাস যোগে অপহরনের পর অচেতন করে টাকা ছিনতাই এর নাটক করার ঘটনায় পুলিশ জানতে পেরে অবশেষে হেলপার কালু গাজীকে তার বাড়ি থেকে আটক করে। শুক্রবার সন্ধ্যায় চাঁদপুর মডেল থানার এসআই অনুপ চক্রবর্তী সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে খবর পেয়ে তাকে আটক করার পর বর্তমানে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। পরে হাসপাতাল থেকে তাকে থানায় এনে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করলে পুলিশের কাছে টাকা আত্বসাৎ করার ঘটনা স্বীকার করে। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ি তার সহযোগি ৫ নং কয়লাঘাট ছায়েদ মাঝীর ছেলে রং মিস্ত্রি সাইফুলকে আটক করে। সাইফুলের কথামত তার বাসায় অভিযান চালিয়ে আলমারি থেকে আত্বসাৎ করা ৪ লক্ষ ২২ হাজার ৩৬০ টাকা উদ্ধার করেছে পুলিশ। আত্বসাৎ করা টাকার মধ্যে ১১ হাজার টাকা কালু খরচ করায় কম পায় পুলিশ। আটক হেলপার কালু জানায়, কাচা কলোনী এলাকার একসময়কার ভাড়াটিয়া সোহাগ নামের এক ছেলের সাথে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তুলে। সোহাগ বর্তমানে বাসষ্টেন্ড এলাকায় ভাড়া থেকে চিত্রলেখা রোডে থাই গ্লাসের দোকানে কাজ করে। তার কথা মতো মালিকের টাকা আত্বসাৎ করা পরিকল্পনা করে। মঙ্গলবার সকালে কয়লা ঘাট এরাকার রং মিস্ত্রি বন্ধু সাইফুলের কাছে টাকাগুলো গচ্ছিত রেখে সোহাগসহ ঢাকায় গিয়ে অপহরনের নাটক সাজাই। পরে চাঁদপুরে আসলে পুলিশ গ্রেফতার করে।
উল্লেখ্য, লক্ষীপুর জেলার রামগঞ্জ থানার নন্দনপুর গ্রামের তাপস কুমার ভৌমিকের মালিকাধীন ঢাকা মেট্রো ড-১৪-৪০২০ তেলের লরীটিতে দীর্ঘ ৩ বছর যাবত যাবত কাচা কলোনীর রতন গাজীর ছেলে কালু গাজী হেলপার হিসেবে চাকুরী করে। তাপস কুমার পদ্মা ও যমুনার অয়েল কোম্পানীর ডিপোর তেল বিক্রির টাকা চালকের মাধ্যমে ব্যাংকে জমা দেন। গত সোমবার রাতে তেলের লরীর চালক আব্দুল রহিম হোটেলে থেকে তেল বিক্রির নগদ ৪ লক্ষ ৩৩ হাজার ৩শ’৬০ টাকা ও ৩ লক্ষ ৯৭ হাজার ২শত ৬০ টাকার পে-অর্ডার ব্যাংকে জমা দেওয়ারর জন্য হেলপার কালু গাজীর হাতে তুলে দেয়। পরদিন মঙ্গলবার সকাল ৮ টায় কালু গাজী টাকা ও পে অর্ডার নিয়ে বাসা থেকে বের হওয়ার পর ৩ দিন যাবত নিখোজ থাকে। এ ঘটনার পর তেলের লরির মালিক তাপস কুমার বাদী হয়ে চাঁদপুর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করে মামলা নং ৪০ তাং ২৪/২/২০১৬ । কালু গাজী শুক্রবার ঢাকা থেকে ময়ুর লঞ্চে চাঁদপুরে এসে বাড়িতে যায়। এসময় স্থানীয় লোকজন তাকে সুস্থ অবস্থায় বাড়িতে আসতে দেখে পুলিশকে খবর দেয়। অবশেষে খবর পেয়ে পুলিশ তাকে বাড়ি থেকে আটক করে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সে অচেতন হওয়ার নাটক করে সে বিছানায় পরে থাকে। পরে পুলিশ তাকে সেখান থেকে আটক করে চাঁদপুর সরকারী জেনারেল হাসপাতালে এনে ডাক্তারকে দেখায়। হাসপাতালের ডাক্তার পুরিশকে জানায়, অচেতন হওয়ার কোন সিনটম পাওয়া যায়নি। অচেতন হৗযার নাটক বুঝতে পেরে পুলিশ তাকে হাসপাতাল থেকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন হয় ও আত্বসাৎ করা টাকা উদ্ধার করা সম্ভব হয়।