মহামারী করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব চাঁদপুরে আবার বেড়ে গেছে। নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা হিসেব করলে আক্রান্তের হার দিন দিন বাড়ছে। গতকাল একদিনে আক্রান্তের হার ছিলো ২৬.৬৬%। এর মধ্যে মৃত্যুও আছে একজন। তবে মানুষ এখন নমুনা পরীক্ষা করাচ্ছে খুবই কম। পরীক্ষার সংখ্যা বাড়লে আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মহামারী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ কমে গেছে বলে অনেকের ধারণা হলেও তা যে সঠিক নয় সেটা গতকাল এ সংক্রান্ত রিপোর্টেই বুঝা যাচ্ছে। একদিনে ৩০টি নমুনা পরীক্ষার রিপোর্টে ৮ জনের পজিটিভ আসে। এই ৮ জনের মধ্যে সদর উপজেলায় ৬জন এবং মতলব উত্তর ও ফরিদগঞ্জ উপজেলায় একজন করে দুইজন। নতুন করে আক্রান্তের এ অবস্থা করোনাকালের শুরুর ৩/৪ মাসের অবস্থার মতই। তবে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা আরো বাড়লে আক্রান্তের হারও বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তখন দেখা যাবে যে, প্রথম সময়কার পরিস্থিতিকেও ছাড়িয়ে গেছে।
গতকাল রাতে চাঁদপুর সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত রিপোর্টে দেখা যায় যে, একদিনে ৩০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে পজিটিভ রিপোর্ট আসে আটটি। এই তথ্য সূত্রে আরো জানা যায়, আক্রান্ত আরো একজন মারা গেছেন। এ নিয়ে জেলায় মৃত্যুর সংখ্যা হচ্ছে ৮৪ জন। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ২৭ জন, ফরিদগঞ্জে ১২, হাজীগঞ্জে ১৭, শাহরাস্তি ৭, কচুয়া ৬, মতলব উত্তর ১০, মতলব দক্ষিণ ৪ ও হাইমচরে ১জন।
গতকাল নতুন করে যে একজন মৃত্যুর তথ্য জানা গেছে, তিনি হচ্ছেন চাঁদপুর শহরের গুয়াখোলা এলাকার জায়েদা বেগম (৭০)। এই মৃত্যু সম্পর্কে জানা গেছে, এই বৃদ্ধা ১৯ ডিসেম্বর শনিবার চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে স্যাম্পল দিয়ে আসেন। রাতে তাঁর রিপোর্ট পজিটিভ আসে। আর সে রাতেই তিনি মারা যান। স্যাম্পল দিয়ে তিনি নিজ বাসায়ই চলে যান এবং সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। আরো জানা গেছে, তাঁর পরিবারের আরো কয়েকজনের মধ্যে করোনা ভাইরাসের লক্ষণ থাকায় তারাও পরীক্ষার জন্য নমুনা দিয়েছেন। তবে রিপোর্ট এখনো আসে নি বলে জানা গেছে।
সূত্র থেকে আরো জানা যায়, গতকাল ২১ ডিসেম্বর ভাষাবীর এমএ ওয়াদুদ আরটি পিসিআর ল্যাবে ৩০টি স্যাম্পলের করোনা টেস্ট করা হয়। এসব স্যাম্পল গত রোববার সংগ্রহকৃত। চাঁদপুর সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে গতকাল সোমবার রাতে এ রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। এর মধ্যে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয় ৮ জনের, বাদবাকি ২২ জনের রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। এদিকে গতকাল একদিনে ৯ জনকে সুস্থ ঘোষণা করা হয়। এরা হচ্ছেন- চাঁদপুর সদরে ৭, মতলব দক্ষিণে ১ ও হাজীগঞ্জে ১ জন। সুস্থ এবং মৃতের সংখ্যা বাদ দিয়ে বাদবাকি ৪৪ জন বর্তমানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন।
সূত্র থেকে আরো জানা যায়, চাঁদপুরে এ পর্যন্ত ১৪ হাজার ৩শ’ ৬৪ জনের স্যাম্পল সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে রিপোর্ট আসে ১৪ হাজার ২শ’ ৯২ জনের। প্রাপ্ত রিপোর্টের মধ্যে করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে ২হাজার ৬শ’ ২৭ জনের। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে যান ২ হাজার ৪শ’ ৯৯ জন।