স্টাফ রিপোর্টার:
চাঁদপুরের শাহরাস্তি মডেল থানার উঘারিয়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের মূল ভবনটি ডাকাতিয়ার ভাঙ্গনের মুখে রয়েছে।গত কিছু দিন পূবে তিন কোটি টাকার উপরে অর্থ ব্যয়ে নবনিমির্ত এ কেন্দ্রে আসা-যাওয়ারও নেই কোনো রাস্তা। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বর্ষার প্রবল পানির ¯্রােত বইছে। ডাকাতিয়া নদীর পূর্ব দক্ষিণ কোনে পুলিশ বিভাগ থেকে নতুন এ ভবনটি নির্মাণ করা হলেও ভাঙ্গনের আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। নদীর তীর ঘেঁষেই হবে রাস্তা। জরুরী ভিত্তিতে ভাঙ্গন প্রতিরোধমূলক ব্যাবস্থা গ্রহন না করা হলে সুসজ্জিত নতুন পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রটির ভবিষ্যৎ হুমকির মধ্যে পড়বে এমন শঙ্কার কথাই জানালেন ওই এলাকার প্রবীন ব্যক্তি আলী হোসেন (৬৫) এবং উঘারিয়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের বর্তমান ইনচার্জ এসআই রফিকুল ইসলাম। তারা আরও জানান, সম্প্রতি নবনির্মিত পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র ভবনসহ চলমান অন্যান্য কাজ পরিদর্শনে আসেন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কুমিল্লা গণপূর্ত সার্কেল, নির্বাহী প্রকৌশলী চাঁদপুর গণপূর্ত বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।
তারা প্রকল্প কাজের সাইড পরিদর্শনের সময় যাতায়াতের রাস্তা ও নদী শাসন বিষয়টির উপর গুরুত্ব আরোপ করেন এবং ভবনটি রক্ষায় প্রয়োজনীয় কাজের চাহিদা নিরূপণ করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রেরণের জন্য নির্বাহী প্রকৌশলী গণপূর্ত বিভাগ চাঁদপুরকে নির্দেশ দেন।
এদিকে এলাকা সূত্রে জানা যায়, হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তির বর্তমান এমপি মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালীন কুমিল্লার লাকসাম ও চাঁদপুরের শাহরাস্তির শেষ সীমানায় একটি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র করার অনুমোদন দেন। তখন চাঁদপুরের এসপি ছিলেন বর্তমান পুলিশের আইজিপি একেএম শহীদুল হক। পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রটি হবে উঘারিয়ায়। কিন্তু সেখানে জমি পাওয়া যায়নি। প্রকল্পটি ফেরত চলে যাবে এই শঙ্কা থেকে লাকসামের সাবেক বিএনপির এমপি কর্নেল (অবঃ) আনোয়ারুল আজিম তখন নিজের জায়গা এ কেন্দ্রের জন্য দান করেন। পুলিশের পক্ষ থেকে বর্তমান আইজিপি সেই জমির রেজিস্ট্রি করে নেন। শাহরাস্তি উপজেলার চিতোষী পূর্ব ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন সংলগ্ন ডাকাতিয়া নদীর পাশে মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে অতঃপর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হয়। তিন কোটি টাকার উপরে ব্যয়ে এ প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ করেছে গণপূর্ত বিভাগ চাঁদপুর।
কয়েক মাস পূর্বে প্রকল্পের মূল ভবনের ডাইনিং কিচেনসহ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখন বাউন্ডারি নির্মাণ কাজ চলছে। এরপর রাস্তা ও ভিতরের মাঠ ভরাটসহ উক্ত প্রকল্পের অঙ্গ ভিত্তিক কাজগুলো চলমান।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিজনেস অ্যাসোসিয়েট ইন্টারন্যাশনাল প্রকল্পটির কাজ করছে। এর পরিচালক মোঃ হাসান সারোয়ার জানান, ভবন ব্যবহারের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এখন সীমানা দেয়াল ও মাঠ ভরাট এবং রাস্তার অবশিষ্ট অংশে কাজ করা হবে। গণপূর্ত বিভাগ চাঁদপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী রিপন কুমার রায় জানান, নদীর পাড় ঘেঁষে যেহেতু মূল ভবন এবং সেখানে রাস্তা ও পাকা ঘাটলা হবে, নদী ভাঙ্গনের আশঙ্কা থাকায় সেখানে রিটার্নিং ওয়াল করার একটা প্রস্তাব সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রেরণ করা হবে। এখন দেখার অপেক্ষা উঘারিয়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের নবনির্মিত মূল ভবন এবং রাস্তা নদী ভাঙ্গন থেকে রক্ষায় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় কিনা?