মিজান লিটন *
মতলব আইসিডিডিআরবিতে প্রতিদিন ভর্তি হচ্ছে প্রায় দেড় শতাধিক রোগী। এদের মধ্যে বেশির ভাগই শিশু। শিশুদের মধ্যে ব্যাপক হারে ভাইরাস জনিত ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়েছে। এ রোগে আক্রান্ত হয়ে গড়ে দেড় শতাধিক রোগি প্রতিদিন আন্তজার্তিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর,বি) চাঁদপুর শাখা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে।
হঠাৎ তিব্র কুয়াশা ও ঠান্ডা জনিত করনে শিশুদের নিমোনিয়া ও রোটা ভাইরাস জনিত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে বলে জানিয়েছে চিকিৎসকরা ও হাসপাতাল কর্তপক্ষ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন প্রায় ১৫০ থেকে ১৭০ রোগী ভর্তি হচ্ছে। ভাইরাস জনিত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালটিতে শিশু রোগী ভর্তি হচ্ছে বেশী। এদের বাড়ী চাঁদপুর সদর, ফরিদগঞ্জ, মতলব উত্তর, মতলব দক্ষিণ, হাজীগঞ্জ, কচুয়া, শাহরাস্তি, কুমিল্লা সদর, বরুড়া, রায়পুর, লক্ষীপুর ও রামগঞ্জ উপজেলায়। এছাড়া ব্রাহ্মনবাড়ীয়া জেলা সহ কুমিল্লা জেলার আরও কিছু এলাকা থেকে এসে শিশু রোগী ভর্তি হচ্ছে।
হাসপাতাল সূত্রে আরো জানা যায়, বর্তমানে যে হারে রোগী ভর্তি হচ্ছে, তা বছরের স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে তিন গুন। স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন গড়ে এখানে প্রায় ৫০-৬০ জন রোগী ভর্তি হতো। ভর্তি করা শিশুদের ৭০ শতাংশেরই বয়স পাঁচ বছরের মধ্যে। শুধু গতকাল বিকাল ৪টা পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১৪৭জন।মতলব আইসিডিডিআরবি হাসপাতালের ইনর্চাজ ডাঃ আল ফজল খাঁন ও সিনিয়র মেডিকেল অফিসার চন্দ্র শেখর দাস বলেন, দূষিত পানি পাণ, ময়লা খাবারের কারনে শিশুরা এই রোগে আক্রান্ত হয় বেশি। সাধারণত শীতে শিশুরা এই রোগে আক্রান্ত হয় বেশী। শিশুদের ঘনঘন পাতলা পায়খানা, বমি বমি ভাব এর রোগের প্রদান লক্ষন। তখন সাথে সাথে হাসপাতালে নিয়ে আসার পরামর্শ দেন হাসপাতাল কৃর্তপক্ষ। এই রোগে আক্রান্ত শিশুদের খাওয়ার স্যালাইন, বুকের দুধ, বেবীজিং, সুজি, খিচুড়ি, ডাব, চিড়ার পানি, ভাতের মার সহ অন্যান্য খাবার খেতে দিতে হয়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আরো জানায়, বর্তমানের রোগীর প্রকোপ বৃদ্ধি হওয়ায় সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ভাইরাসে আক্রান্ত হলেই শিশুকে হাসপাতালে না এনে বাড়ীতে প্রাথমিক চিকিৎসা করানো সম্ভব। তবে স্যালাইন গুলানোর সময় অবশ্যই আধা লিটার পানিতে ১প্যাকেট স্যালাইন গুলাতে হবে। অনেক রোগীর অভিভাবক একটু স্যালাইন ও একটু পানি মিশিয়ে শিশুকে খাওয়ানোর ফলে শিশুর শরীরের লবনের অংশ বেড়ে যায়। যার ফলে শিশুরা বেশী দূর্বল হয়ে পড়ে। তিনি শিশুদের অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বলেন, বারে বারে পানির মত পাতলা পায়খানা, খুব বেশী পিপাসা, ঘন ঘন বমি হলে, পায়খানায় রক্ত গেলে, জ্বর থাকলে ও শিশু না খেতে চাইলে অবশ্যই নিকটস্থ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অথবা আইসিডিডিআর,বি হাসপাতালে নিয়ে আসার জন্য পরামর্শ দেন এবং এ রোটা ভাইরাস জনিত ডায়রিয়া স্বাভাবিক ভাবে ৫-৭ দিন থাকতে পারে বলেও তিনি জানান।