বছরের প্রথমদিন সারাদেশের ন্যায় চাঁদপুরের শিক্ষার্থীর মধ্যে নতুন বই বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। করোনার কারণে গতবারের মতো এবারও উৎসব ছাড়াই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে বই। আর বছরের প্রথম দিনে নতুন বই হাতে পেয়ে উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের এমন আনন্দে অভিভাবকরাও দারুণ খুশি।
এবারের শিক্ষাবর্ষে ৪ কোটি ১৭ লাখ ২৬ হাজার ৮৫৬ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩৪ কোটি ৭০ লাখ ২২ হাজার ১৩০ কপি পাঠ্যপুস্তক বিনামূল্যে বিতরণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য ব্রেইল পদ্ধতিতে পাঠ্যপুস্তক ও ৫টি ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের মাতৃভাষায় মুদ্রিত পাঠ্যপুস্তকও রয়েছে। তবে, এ বছরের প্রথমদিনে সব শিক্ষার্থীকে বই দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। পর্যায়ক্রমে নতুন বই পাবে শিক্ষার্থীরা ।
১ জানুয়ারি চাঁদপুর শহর এলাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও বছরের প্রথম দিন থেকে বই বিতরণ শুরু হয়েছে। ১০টায় চাঁদপুর হাসান আলী উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে নতুন বছরের বই বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন জেলা প্রশাসক (ডিসি) অঞ্জনা খান মজলিশ।
এসময় জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, সরকার বছরের প্রথম দিন তোমাদের কাছে নতুন বই পৌঁছে দিয়েছে। তোমরা অবশ্যই আজকে বইগুলো খুলে দেখবে এবং পড়বে। নতুন বই হাতে পেলে একটি অন্যরকম অনুভুতি আসে। যেটা তোমরা পাচ্ছ এবং তোমরা সৌভাগ্যবান। আমরা যখন বিদ্যালয়ে পড়েছি, তখন একসাথে সব বই পাইনি। কয়েকবার আমাদের বই দেয়া হত। আমরা তখন লাইব্রেরীতে গিয়ে বার বার বলে বই হাতে পেতাম এবং পড়তাম।
শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আগে এই বিদ্যালয়ে লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে ভাল ভাল ছেলেদের আপনারা ভর্তি করাতেন। এবছর লটারীর মাধ্যমে সব ধরণের ছেলেরা ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। আপনারা অব্যশই তাদের প্রতি যতœবান হবেন এবং সবার প্রতি সমান দৃষ্টি রাখবেন। কারণ এই বিদ্যালয়ের অনেক সুনাম রয়েছে।
বই বিতরণ উপলক্ষে গণমাধ্যমের উদ্দেশ্যে ডিসি বলেন, আজকে আমরা চাঁদপুরে বই বিতরণ উৎসব করিনি, তবে আমরা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী ৬ষ্ঠ শ্রেণীর এক তৃতীয়াংশের মধ্যে বই বিতরণ করেছি স্বাস্থবিধি মেনে। শিক্ষার্থী যারা এসেছে তারা দুরত্ব বজায় রেখে এবং মাস্ক পরে বসেছে। এদের মধ্যে কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থীকে বই দিয়েছি এবং পর্যায়ক্রমে বাকীদেরকেও বইগুলো দিয়ে দিব। তারা যাতে বছরের প্রথম দিন বই পায়, আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর যে নির্দেশনা, সেটি আমরা বাস্তবায়ন করব ইনশাআল্লাহ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুলতানা ফেরদাউস আরা। সঞ্চালনায় ছিলেন সিনিয়র শিক্ষক আ. আল মামুন।
উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মঞ্জুরুল মোর্শেদ, বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মমিনুল হক সরদার, আ. আজিজ শিশির, আ. মান্নান, মজিবুর রহমান ও হাফিজুর রহমান প্রমূখ। সভাপতির বক্তব্য শেষে প্রধান অতিথি ৬ষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলেদেন।
এদিকে চাঁদপুর সদর উপজেলার বালিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও ফরাক্কাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় বই বিতরণে আনুষ্ঠানিকতা না থাকলেও প্রধান শিক্ষক ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও সদস্যদের নিয়ে শিক্ষার্থীদের শ্রেণী ভিত্তিক বই বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। ফরাক্কাবাদ ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা, বালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,পুরাণবাজার ২নং বালক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দেখা গেছে সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক বই বিতরণ করা হচ্ছে।
শিক্ষকবৃন্দ জানান শুধু শিক্ষার্থী নয় অনেক অভিভাবক তার সন্তানকে নিয়ে বই নেওয়ার জন্য স্কুল এসেছে। ছেলে মেয়েদের পাশাপাশি তাদের অভিবাবকরাও খুশি।