স্টাফ রিপোর্টার:
সন্ত্রাসী কার্যকলাপ, জঙ্গিরোধ ও সর্বসাধারণের নিরাপত্তা জোরদার করতে চাঁদপুরে বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়াদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহে ব্যাপক তৎপরতার চালাচ্ছে এখানকার পুলিশ। ইতিমধ্যে জেলার সর্বত্র কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মাধ্যমে পৌর এলাকা ও বিভিন্ন ইউনিয়নে বসবাসকারীদের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের জন্য ফরম প্রদান শুরু করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রতিটি এলাকায় সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ বিরোধী কমিটিও গঠন করা হচ্ছে কমিটিউনিটি পুলিশিংয়ের মাধ্যমে। এ ব্যাপারে চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান বলেন, দেশব্যাপী বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাসীরা ছদ্মনামে অবস্থান করে নানা কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছে। তারা বিভিন্ন বেশে অবস্থান করে যাতে জননিরাপত্তা বিঘিœত করতে না পারে সেজন্য বাসা-বাড়ির তথ্য পুলিশ নিচ্ছে। এসব তথ্য বিশ্লেষণ করলে জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের তালিকা পাওয়া যাবে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরো বলেন, ইতোমধ্যে চাঁদপুর পৌরসভার তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে। স্থানীয় কমিউনিটি পুলিশিং কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় বাড়ির মালিক ও ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। গত ১১ জুলাই জেলার ৮ উপজেলায় তথ্য সংগ্রহের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় ইউনিয়ন কমিউনিটি পুলিশিং কর্মকর্তারা প্রত্যেক বাসা-বাড়ির তথ্য এবং বসবাসকারী সবার তথ্য পূরণ করে সংশ্লিষ্টদের মাধ্যমে পুলিশ সুপারের অফিসে পাঠাবেন। পুলিশের দেয়া ঐ তথ্য ফরমে বাড়ির মালিকের যেসব তথ্য প্রদান করতে বলা হয়েছে তা হচ্ছে : বাড়িতে নাইটগার্ড আছে কি-না, থাকলে কত জন। কমিউনিটি পুলিশিংয়ের চাঁদা প্রদান করা হয় কি-না। ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংগ্রহ করছেন কি-না ও তথ্য সংগ্রহের তারিখ। এছাড়া বাড়ির সীমানা প্রচীর আছে কি-না, বাড়ির গেইট আছে কি-না এবং রাতে প্রয়োজনীয় সিকিউরিটি বাল্ব জ্বালানো হয় কি-না।
তবে তথ্য প্রদানের ক্ষেত্রে কোন নারী বা ১২ বছরের নিচে কোন ছেলে-মেয়ের নাম প্রদান করার প্রয়োজন নেই বলে আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া ভাড়াটিয়াসহ বাড়ির মালিকদের যেসব ব্যক্তিগত তথ্য প্রদান করতে বলা হয়েছে তা হচ্ছে : নাম, বয়স, বাবার নাম, বাসা নং, পেশা ও ফোন নম্বর। ভাড়াটিয়ার নাম, ভাড়াটিয়ার বাবার নাম, বয়স, স্থায়ী ঠিকানা, পেশা, ছেলের নাম, বয়স ও পেশাসহ যোগাযোগের মোবাইল নম্বর। তবে এমন তথ্য সংগ্রহ নিয়ে পৌর এলাকার বেশ কিছু মানুষের মাঝে রয়েছে কম-বেশি মিশ্র প্রতিক্রিয়া। তাদের আশঙ্কা রয়েছে ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করে থানা পুলিশ অনেক সময় এসব তথ্য ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে পারে। তাছাড়া অজ্ঞাত কোন ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে অনেককে আটক করে হয়রানি করা হবে কি-না। কারণ, আগে-পরে দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করতে এবং ভুলবশত বিনা কারণে আটক করে নির্যাতন করে অনেককে চিরতরে পঙ্গুও করে দিয়েছে। পরবর্তীতে এর বিচার তো দূরের কথা বিচার চাইতে গিয়ে আরো বেশি হয়রানির শিকার হয়েছে অনেকে। সর্বসাধারণের এমন আশঙ্কা ও তথ্য সংগ্রহ প্রসঙ্গে চাঁদপুরের পুলিশ সুপার শামছুন্নাহার বলেন, নিরাপত্তার স্বার্থেই এসব তথ্য চাওয়া হয়েছে। তবে এ তথ্যের মাধ্যমে কারো হয়রানি হওয়ার আশঙ্কা নেই বলেও পুলিশ সুপার জানান।