স্টাফ রিপোর্টার:
কেন্দ্র দখল, জাল ভোট প্রদান ও সন্ত্রাসী হামলার অভিযোগ এনে চাঁদপুর সদর উপজেলার ছয় ইউনিয়নে বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থীরা নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় চাঁদপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তারা নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন। এ সময় তারা সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে পুনঃনির্বাচনের দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে চাঁদপুর সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামছুল ইসলাম মন্টুসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলন।
ভোট বর্জনকারী চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন– চাঁদপুর সদর উপজেলার তরপুরচণ্ডি ইউনিয়নের সরদার রফিকুল ইসলাম, কল্যাণপুর ইউনিয়নের সাইফুল আলম খান, আশিকাটি ইউনিয়নের দেলোয়ার হোসেন মাস্টার, বাগাদী ইউনিয়নের মোহাম্মদ আলী পাঠান, চান্দ্রা ইউনিয়নের শাহজাহান খান ও রামপুর ইউনিয়নের জাকির হোসেন তালুকদার।
এর আগে, চাঁদপুর সদর ও হাইমচর উপজেলার ১৮টি ইউনিয়নে শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ শুরু হলেও সকাল ১০টার পর থেকে দুই উপজেলার কয়েকটি কেন্দ্রে ব্যালট পেপার ছিনতাই ও জাল ভোটকে কেন্দ্র করে ভোটগ্রহণ স্থগিত রাখা হয়।
এর মধ্যে সকাল ১০টায় চাঁদপুর সদরের মৈশাদী ইউনিয়ন পরিষদ কেন্দ্রে নৌকার সমর্থরা কেন্দ্র দখল করে জাল দিয়ে ব্যালট বাক্স ভর্তি করে। পরে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আতাউর রহমান ভোটগ্রহণ বন্ধ ঘোষণা করেন। একই সময় সদর উপজেলার লোধেরগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের লোকজন কেন্দ্র দখল করার চেষ্টা করলে ১২ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।
একই সময় কল্যাণপুর কেন্দ্র থেকে আওয়ামী লীগের লোকজন ভোটারদের বের করে দিয়ে তাদের দখলে নেয়। এ সময় তারা কিছু ব্যালটে সিল মারে। খবর পেয়ে কর্তব্যরত ম্যাজিস্ট্রেট র্যাব ও বিজিবি সহযোগিতায় তাদের সেখান থেকে বিতাড়িত করেন। তবে ঘণ্টা খানেক পর র্যাব-বিজিবি চলে গেলে তারা আবারও কেন্দ্র নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়।
এছাড়া সফরমালী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রেও একই সময় দখলে নেয় আওয়ামী লীগের কর্মীরা। খবর পেয়ে কর্তব্যরত ম্যাজিস্ট্রেট সেখানে গেলেও প্রিজাইডিং অফিসারের অসহযোগিতায় দখলদারদের বিতাড়িত করা যায়নি।
একই সময় সদর উপজেলার তরপুরচণ্ডি, আশিকাটি, কল্যাণপুর, রামপুর, বাগাদী ও চান্দ্রা ইউনিয়নে নৌকা মার্কার সমর্থকরা বিভিন্ন কেন্দ্র দখল করে সিল মারায় বিএনপি চেয়ারম্যান প্রার্থীরা দুপুর ১২টা থেকে নির্বাচন বর্জন করার ঘোষণা দেন।
হাইমচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সারওয়ার কামাল জানান, হাইমচরের চরভৈরবী ইউনিয়নের আজিজিয়া মাদরাসা কেন্দ্রে জাল ভোট দেয়া ও প্রিজাইডিং অফিসারকে মারধর করার অভিযোগে স্থায়ীভাবে নির্বাচন স্থগিত করে দেয়া হয়। এ সময় সেখানে পুলিশ দুই রাউন্ড গুলি ছুঁড়ে।
চাঁদপুরের পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার জানান, বিভিন্ন কেন্দ্রে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে। এ সময় বেশ কয়েকজনকে আটকও করা হয়েছে।