রফিকুল ইসলাম বাবু।
চাঁদপুর জেলার জাটকা ও মা ইলিশ সংরক্ষণ করার জন্য সরকারের ঘোষিত মার্চ-এপ্রিল এবং চলতি অক্টোবর মাসে ১ থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত সরকার সব ধরনের মাছ আহরণ নিষিদ্ধ করেছে। বর্তমানে ধার দেনা নিয়ে কাজ না থাকায় বেকার জেলে পরিবারগুলোর দিন কাটছে খুবই দুঃখ কষ্টে। সরকারের কাছ থেকে কোন সহতা পায়নি এখন পর্যন্ত। চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলা থেকে শুরু করে দক্ষিণে হাইমচর উপজেলা পর্যন্ত প্রায় ৪২ হাজার পরিবার জীবন জীবীকা নির্বাহ করে মৎস্য আহরণ করে। জেলে পাড়াগুলো ঘুরে দেখা গেছে, শত শত জেলেরা এখন নৌকা ও জাল নিয়ে মেরামত করেই সময় পার করছেন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত। জেলেরা বলেন মাছ ধরা বন্দ মুসুমে সরকারের কাছ থেকে কোন সহতা পায়নি এখন পর্যন্ত । জেলেরা তাদের বিকল্প কর্মসংস্থান তৈরী এবং সরকারি সহায়তা বৃদ্ধির জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন । পদ্মা-মেঘনা নদীতে জেলেরা পুর্বে গুটিজালসহ নিজেদের তৈরী করা জাল দিয়ে ইলিশসহ অন্যান্য মাছ আহরণ করলেও সময়ের পরিবর্তনে এক শ্রেনীর জেলে কারেন্টজাল দিয়ে মাছ নিধন করেন। এ কারণে প্রকৃত জেলেরা সারা বছরেই প্রশাসনের কড়া নজরদারিতে থাকেন। দরিদ্র জেলে পরিবার মাছ আহরণ এর জন্য কয়েক লাখ টাকার জাল ও নৌকা সংগ্রহের জন্য জড়িয়ে পড়েন মহাজনী দাদন পথায়। এ কারণে দাদন নিয়ে তাদের মাছ আহরণের সরঞ্জাম ক্রয় করতে হয়। আবার অনেকেই এনজিও কিংবা সমিতি থেকে ঋন নিয়ে তাদের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ক্রয় করেন। এ কারণে তাদের বছর জুড়ে ঋন পরিশোধের চাপ লেগেই থাকে। সংসার ও সন্তানদের লেখা পড়ার খরচ চালাতে হিমশিম খেতে হয় প্রতিনিয়ত। এরপর আবার মাছ আহরণ নিষিদ্ধ করায় বার্তি চাপে দিশে হারা হয়ে উঠছে জেলে পরিবারগুলো। চাঁদপুর জেলার ৪২ হাজার জেলে পরিবারের সহায়তা বৃদ্ধিতে সরকার যেমন এগিয়ে আসবে, তেমনি মা ইলিশ রক্ষায় সব শ্রেনী পেশার মানুষ সহযোগিতা করলে জাতীয় সম্পদ ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে এমন প্রত্যাশাই করছেন সকলে। সরকার ঘোষিত মা ইলিশ রক্ষায় বদ্ধ পরিকর জেলা ট্রাস্কফোর্স। জেলার ৬০ কিলোমিটার নদী এলাকায় চলছে প্রশাসনের অভিযান। জেলেদের সহায়তা ও সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানিয়েছেন জেলা মৎস্য বিভাগ। তবে আইন অমান্য করে কোন জেলে মা ইলিশ নিধন করলে কোন প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা।