মিজান লিটন ॥ চাঁদপুর জেলার উপজেলা পর্যায়ে চাষীদের মাঝে লাভজনক হয়ে উঠেছে খিরাই চাষ। কম খরচে ও আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহার করে বছরে একই জমিতে ২বার খিরাই চাষাবাদ শুরু করেছে কৃষকরা। এ বছর বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষের জন্য ৫হাজার হেক্টর জমি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে জেলা কৃষি বিভাগ। এর মধ্যে ২হাজার হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়েছে খিরাই। শুধুমাত্র মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলায় খিরাই চাষ হয়েছে ৫শ’ হেক্টর জমিতে। সরেজমিন মতলব দক্ষিন ও মতলব উত্তর উপজেলা ঘুরে দেখাগেছে কৃষকরা আশ্বিনমাসে যে সব জমিতে খিরাই চাষ করেছে, সে সব খিরাই একাধিকবার তুলে বিক্রি করা হয়েছে। খিরাই গাছগুলো নির্দিষ্ট সময়ে আর ফলন না হলে অধিকাংশ কৃষক পুনরায় জমি প্রস্তুত করে দ্বিতীয়বার খিরাই চাষাবাদ করে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এবং পোকার আক্রমন থেকে রক্ষা করতে পারলে খিরাই চাষে অন্য কোন ধরনের সমস্যা হয় না। মতলব উত্তর উপজেলার বৈদন্যতাপুর ও উটারচর গ্রামে খিরাই চাষাবাদ এখন খুবই জনপ্রিয়। ওই গ্রামের চাষী জহির উদ্দিন জানায়, এ বছর সে ১০শতাংশ জমিতে খিরাই চাষাবাদ করেছে। খরচ হয়েছে ৫হাজার টাকা। দুই দফায় বিক্রি করে তারা খরচ উঠেছে। সে আশা করছে বাকী খিরাই বিক্রি করে কমপক্ষে ৩গুন লাভ করতে পারবে। আরেক কৃষক মোঃ কবির হোসেন জানান, গত ১২/১৩ বছর ধরে তাদের অঞ্চলে এ খিরাই চাষ শুরু হয়। লাভজনক হওয়ায় এবং কৃষি অফিসারদের পরামর্শক্রমে পোকার আক্রমন থেকে রক্ষায় আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করে করে অনেকেই খিরাই চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে। প্রতিবছরই বৃদ্ধিপাচ্ছে খিরাই চাষ। এ বছর এই গ্রামের মনির হোসেন, ফারুক সর্দার, শহীদ উদ্দীন, জহির উদ্দিন ও আক্কাছ হোসেন প্রায় ৫ হেক্টর জমিতে খিরাই চাষাবাদ করেছে। কৃষক ফারুক সর্দার জানান, এ বছর মতলব বৈদন্যতাপুর, উটারচর ও আশপাশের এলাকায় প্রায় ১০ হেক্টর জমিতে খিরাই চাষাবাদ হয়েছে। খিরাইগুলো বিক্রির উপযোগী হলে বস্তা হিসেবে বিক্রি করি। এ বছর প্রতিবস্তা খিরাই ৭শ’ থেকে ৮শ’ টাকা বিক্রি হচ্ছে। তবে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে কোন ধরনের বিষক্রিয়া নেই এসব খিরাইগুলোতে। কৃষক আমির হোসেন জানায়, আশ্বিন মাসের শুরুতে জমি প্রস্তুত করে খিরাই চাষ শুরু হয়। ৩৫ থেকে ৪০দিনের মধ্যে ফলন শুরু হয়। তবে অধিকাংশ কৃষকই এখন ২বার খিরাই চাষাবাদ করে। উচুঁ জমি থাকলে খিরাই চাষাবাদ করা সম্ভব। প্রাকৃতিক দূর্যোগ ছাড়া খিরাই চাষে কোন ধরনের সমস্য হয় না। লাভজনক চাষাবাদ হিসেবে কৃষি কর্মকর্তাদের সাথে পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ নিয়ে খিরাই চাষ করা যেতে পারে। তারা নিজেদের জমির খিরাই থেকে বীজ সংরক্ষণ করে। জেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. ফয়েজ উদ্দিন জানান, এ বছর আবহাওয়া অনুকুলে থাকার কারণে চাঁদপুর জেলায় মৌসুমি সব্জি চাষা বেশ ভালো হয়েছে। তবে মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলায় খিরাই চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে কৃষকরা। কৃষি বিভাগের তত্ত্বাবধানে আগামীতে খিরাই চাষবাদ আরো বৃদ্ধিপাবে।
শিরোনাম:
বৃহস্পতিবার , ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ , ২৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।