মিজান লিটন:
চাঁদপুরে অবরোধ ও হরতালে প্রতিদিন কমপক্ষে ৫-৬ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। আর এই ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে বাস, লঞ্চ, বিপনী বিতান, মুদি, স্টেশনারী ও চাল ও ভুষা মালের আড়ৎদাররা। এসব ব্যবসায়ীদের সাথে আলাপ করে জানাগেছে, স্বল্প সংখ্যক স্থানীয় ক্রেতা ছাড়া অবরোধকালীন সময়ে শহরের বাহিরের কোন ক্রেতাই আসতে পারে না। এ কারণে প্রতিদিন মূলধন থেকে টাকা খরচ করে কর্মচারী ও নিজেদের খরচ মিটাতে হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা জানায়, অবরোধের কারণে কোন কোন ক্ষেত্রে স্বাভাবিকের চেয়ে অর্ধেক আবার অনেক ব্যবাসয়ীদের মোটেই বিক্রি নেই। পরিসংখ্যানে জানাগেছে, চাঁদপুর শহরের হাকিম প্লাজা, মীর শপিং কমপ্লেক্স, পূরবী, মিয়া ম্যানশন, নূর ম্যানশন, নিউ মার্কেট ও হকার্স মার্কেটসহ অন্যান্য মার্কেটগুলোতে প্রতিদিন কমপক্ষে ১ কোটি টাকা বিক্রয় নেই। পুরাণ বাজার ব্যবসায়ীক কেন্দ্র, পালবাজার, বিপনীবাগ বাজার, নতুন বাজারসহ বিছিন্ন মার্কেটগুলোতে বিক্রয় কমেছে প্রায় ২ থেকে আড়াই কোটি টাকা। এছাড়া চাঁদপুর থেকে ঢাকা ও নারায়নগঞ্জ গামী ৪০-৪৫টি লঞ্চে ৫০ লাখ এবং চাঁদপুর আন্তঃনগর বাস টার্মিনাল থেকে যাতায়াতকারী প্রায় শতাধিক বাস বন্ধ থাকায় প্রতিদিন ২ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে।
চাঁদপুর শহরের সবচেয়ে বড় ব্যবসায়ী কেন্দ্র হচ্ছে পুরাণ বাজার। পুরাণ বাজার থেকে নৌ-পথে কিছু মালামাল পরিবহন ও বিক্রয় হলেও সড়ক পথে বিক্রয়কৃত মালামাল সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ। প্রতিদিন পুরাণ বাজার থেকে সড়ক পথে চাল, লবন, চা-পাতা, ভোজ্য তেল, চিনি, আটা, ময়দা, পেয়াজ, রশুন, আদা ইত্যাদি মালামাল বিক্রয় হয়ে আসছিলো। এসব মালামালের অন্যতম বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান হচ্ছে: মেসার্স সহদেব ট্রেডার্স, কার্তিক, বেঙ্গল, রাখাল বনিক, গোপি সাহা, নেপাল সাহা, নারায়ন স্টোরসহ আরো অনেকে। এসব প্রতিষ্ঠানগুলো এখন কোটি কোটি টাকা লেন-দেন থেকে বঞ্চিত।
সোমবার শহরের বিপনীবাগ মুদি ব্যবসায়ী মানিকের সাথে আলাপ করে জানাগেছে, সে সকাল থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বিক্রয় করেছে ১৭০টাকা। তবে সন্ধ্যার পর কিছু ক্রেতা বাজারে আসে।
রহমান স্টোরের মালিক রহুল আমিন জানায়, শহর ছাড়া কিছু বাহিরের ক্রেতা এখানে আসতো। অবরোধের কারণে এখন ক্রেতার দেখা মিলে না। মূলধন থেকে খরচ করে সংসার চালাতে হচ্ছে। আলাউদ্দিন স্টোরের মালিক মো. আলাউদ্দিন জানায়, অবরোধ ছাড়া তার দোকানে স্বাভাবিক বিক্রি হতো গড়ে ৩০ হাজার টাকা। এখন ৫ থেকে ৭হাজার টাকা বিক্রয় হচ্ছে।
এন.ইসলাম ট্রেডার্সের চালের আড়ৎদার জাকির হোসেন জানায়, অবরোধ ছাড়া প্রতিদিন সে কমপক্ষে ২৫-৩০বস্তা চাল বিক্রি করতো। এখন ৫-৭বস্তা চাল বিক্রি করছে। সে গত ১০দিন পূর্বে নওগাঁও থেকে ২ট্রাক মাল ক্রয় করলেও অবরোধের কারণে আনতে পাছে না। এতে তার চলতি ব্যবাসীয় লেন-দেন ব্যাহত হচ্ছে।
সরেজমিন ঘুরে চাঁদপুর শহরের বিপনী বিতান, বাসস্ট্যান্ড ও লঞ্চঘাটের শ্রমিক ও কর্মচারীদের অলস সময় কাটাতে দেখা গেছে। এসব মানুষগুলো নি¤œ মধ্যবিত্ত শ্রেনীর হওয়ার কারণে দৈনন্দিন অভাবের সম্মুখীন হচ্ছে। তারা দিন দিন ধার দেনা করে সংসারের খরচ মিটালেও দুঃশ্চিন্তা কমেনি। দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের অমিমাংসিত ইস্যুতে অজানা আতংকে দিন কাটছে খেটে খাওয়া এসব মানুষ।
শিরোনাম:
বৃহস্পতিবার , ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ , ২৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।