চাঁদপুর শহরের প্রাণকেন্দ্র, শহরের সবচে’ ব্যস্ততম এলাকা বলে খ্যাত চাঁদপুর কোর্ট স্টেশন এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেছে রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ সরোয়ার আলম। গতকাল ৮ জানুয়ারি বুধবার বিকেলে জিআরপি থানার পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিতে এ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়। এ সময় কোর্ট স্টেশন চত্বর সংলগ্ন রেল লাইনের দুপাশে থাকা ফলের দোকান, চায়ের দোকানসহ বিভিন্ন সামগ্রীর বেচা-বিক্রির অস্থায়ী ছাউনি তারা ভেঙ্গে দেয়। রেল লাইন সংলগ্ন স্থান জুড়ে রিক্সা ভ্যানে যে সকল দোকান গড়ে উঠেছিল সেগুলোও পুলিশ সদস্যগণ ঠেলে নিয়ে পাশর্^বর্তী রেলওয়ের পুকুরে ফেলে দেয়। অভিযান চলাকালীন সানমুন সিগারেটের একটি রিক্সা ভ্যান রেললাইন সংলগ্ন স্থানে রেখে সেলসম্যান চা খেতে গেলে পুলিশ অবৈধ স্থাপনা মনে করে সেটিও পুকুরে ফেলে দেয়। সেলসম্যান এ অবস্থা দেখে দৌড়ে এসেও তার ভ্যানটি রক্ষা করতে পারেননি। সেলসম্যান দুলাল কান্নাজড়িত নয়নে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকেন খালে ফেলে দেয়া তার রিক্সা ভ্যানের দিকে।
রেল পুলিশ সদস্যরা জানান, সকাল বেলা এসে দোকানদারদেরকে বলে দেয়া হয়েছেলো তাদের দোকানপাট সমেত অবৈধ সকল স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার জন্যে। কিন্তু কেউই বিষয়টি আমলে নেয়নি। যদি নিতো তাহলে আমাদেরকে ভাঙ্গতে হতো না। জিআরপি থানার অফিসার ইনচার্জ জানান, এ উচ্ছেদ অভিযান চলমান থাকবে। কিন্তু উচ্ছেদ অভিযান চলাকালীন উপস্থিত মানুষ বলছে ভিন্ন কথা। তাদের কেউ কেউ বলছে এটি লোক দেখানো অভিযান নয়তো? শহরে বহুবার বহু ধরনের উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা হয়েছে। কিন্ত ২ দিন পার হতে না হতে পুনরায় উচ্ছেদকৃত স্থানেই গড়ে উঠে আবার অবৈধ স্থাপনা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কারো না কারো ইন্ধনেই এ সকল স্থাপনা পুনরায় গড়ে উঠে। তাদের অনেকেই বলেন, কোর্ট স্টেশনের পশ্চিম দিকে অর্থাৎ বড় স্টেশন যাওয়ার দিকে রেললাইন জুড়ে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন দোকানপাট, যা একদিনে গড়ে উঠেনি। প্রথমে ২/১টি চায়ের দোকান গড়ে উঠলেও ধীরে ধীরে তা সংখ্যায় বেড়ে ২৫/৩০টিতে রূপ নেয়। ফলে এ স্থানটি বেশ জমজমাট হয়ে উঠে। এমনকি প্লাটফর্মের উপর ও পশ্চিম দিকের হোটেল রেস্তোরাঁ ঘেঁষেও অনেকেই ব্যবসার পসরা সাজিয়ে বসেন। ফলে ফুটপাত দিয়ে চলাচলের স্থান দিনে দিনে সংকীর্ণ হয়ে পড়ে। এসব স্থাপনার জন্যে ট্রেন আসলে ট্রেনে উঠতে অনেককেই প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়তে হয়। এ অবস্থা হতে পরিত্রাণ পেতে অনেকেই উচ্ছেদ অভিযানকে স্বাগত জানান।