মনিরুল ইসলাম মনিরঃ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে রিপ্রেজেন্টেটিভদের অত্যাচারে রোগীরা অতিষ্ঠ। বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানির রিপ্রেজেন্টেটিভরা হাসপাতালের নিয়মনীতি না মেনে যখন-তখন ডাক্তারদের চেম্বারে ভিজিট করেন। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত রিপ্রেজেন্টেটিভদের আনাগোনায় সময়মতো রোগীদের চিকিৎসা করতে পারছেন না ডাক্তাররা। এসময় রোগীরা অসহায় হয়ে পড়ে। এ পরিস্থিতিতে সাধারণ রোগীরা অনেক সময় কিছু বলতেও পারেন না।
চাঁদপুরের স্থানীয় পত্রিকাগুলোয় সদর হাসপাতালের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। হাসপাতালের নিয়মানুযায়ী প্রতি সপ্তাহে দু’দিন দুপুর ১২টার পর চিকিৎসকদের সাথে ভিজিট করার নির্দেশ দেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ম না মেনে রিপ্রেজেন্টেটিভরা যখন-তখন ঢুকে যায় ডাক্তারদের চেম্বারে। বিভিন্ন ধরনের সুযোগ কাজে লাগিয়ে রিপ্রেজেন্টেটিভরা ডাক্তারদের চেম্বারে প্রবেশ করে। এ সময় ডাক্তাররা রিপ্রেজেন্টেটিভদের সাথে খোশগল্পে ব্যস্ত থাকেন। ডাক্তারদের পাশে রিপ্রেজেন্টেটিভরা বসে থাকায় রোগীরা তাদের সমস্যার কথা বলতে পারেন না। ফলে তীর্থের কাকের মতো দীর্ঘসময় পর ডাক্তারের দেখা মিললেও সুচিকিৎসা বঞ্চিত হয়েই ফিরে যান অসহায় দরিদ্র রোগীরা।
চাঁদপুরে বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানীর প্রায় ৩ শতাধিক রিপ্রেজেন্টেটিভ কাজ করছেন। ৫০টিরও বেশি কোম্পানি তাদের মার্কেটিংয়ের লক্ষ্যে চাঁদপুর সদরে রিপ্রেজেন্টেটিভ নিয়োগ করে রেখেছেন। প্রতিদিনই এসব রিপ্রেজেন্টেটিভরা হাসপাতালের ভেতরে বিএমএ কার্যালয় ও প্যাথলজী বিভাগের সামনে তাদের মোটর সাইকেল রাখেন। ফলে হাসপাতালে কোন রোগী সিএনজি ও রিক্সা নিয়ে আসলে জরুরি বিভাগে সরাসরি প্রবেশ করতে পারে না। শহরের বাইরে থেকে মফস্বলের রোগীরা আসলে প্রথমে মনে করেন হাসপাতালের সামনের চত্বরটি যেন মোটর সাইকেলের গ্যারেজ। রিপ্রেজেন্টেটিভদের জন্য রোগী ও তাদের লোকজন হাসপাতালে বসার স্থানও পায় না। সময়-অসময়ে কোম্পানির লোকজন এসে হাসপাতাল চত্বরে দাঁড়িয়ে থাকলে সাধারণ লোকজন রোগী নিয়ে চলাচল করতেও সমস্যার সৃষ্টি হয়। রিপ্রেজেন্টেটিভরা দাঁড়িয়ে বা বসে খোশগল্পে মগ্ন থাকে।
ভুক্তভোগীরা মনে করেন সপ্তাহে ১ দিন বা ২ দিন নির্দিষ্ট সময়ে রিপ্রেজেন্টেটিভদের ভিজিটের নিয়ম করে দিলে রোগীদের হয়রানি থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব হবে। অন্যথায় রিপ্রেজেন্টেটিভদের দৌরাত্ম্যের সীমা ছাড়িয়ে যাবে। এ সমস্যা থেকে সমাধান পেতে চাঁদপুরের সিভিল সার্জন ও ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের সুদৃষ্টি কামনা করছেন ভুক্তভোগীরা।
শিরোনাম:
শুক্রবার , ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ২ ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।