স্টাফ রিপোর্টার:
॥ চাঁদপুর জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার সকাল ১০ টায় জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সবুর মন্ডল। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, আসন্ন ঈদে কোনো অপ্রিতিকর ঘটনা না ঘটে এব্যাপারে সর্বোচ্চ সর্তকতা থাকতে হবে। লঞ্চঘাটে যাত্রী উঠা নামার সময় সন্দেহ জনকের ব্যাগ তল্লাশি করতে হবে। ম্যাজিষ্ট্রেট, পুলিশ ও নৌ-পুলিশ সমন্বয়ে কন্ট্রোল রুম থাকবে। বিআইডাব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষকে সার্বক্ষনিক ঘাটে ডিউটির রোষ্টার তৈরি করতে হবে। নৌ ও বাস র্টামিনালে যাতে চাঁদাবাজি না হয় এই বিষয়টিও আইন শৃঙ্খলা বাহিনির সদস্যরা দেখবেন। ঈদের ছুটিতে অনেকটাই ফাঁকা পেয়ে অপরাধ সংঘঠিত হয়। এই সময়ে পুলিশের পাশাপাশি পাড়া মহল্লা বাসিকে সর্বদা সজাগ এবং সর্তক থাকতে হবে। তাহলেই আমরা সবাই মিলে জেলাবাসীকে আসন্ন ঈদকে শান্তিপূর্ন উপহার দিতে পারব।
সভায় বিগত মাসের কার্যবিবরণী পাঠন করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আয়শা আক্তার। সভায় স্ব স্ব বিভাগের বিভিন্ন দিকের বর্তমান অবস্থান তুলে ধরে কর্মকর্তাগণ।
ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠন ও রূপকল্পে-২০২১ বাস্তবায়নে তিনি বলেন, বর্তমান সরকার ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের মাধ্যমে রূপকল্প ২০২১ অর্জনের লক্ষে সকল বিভাগের সেবা প্রদান কার্যক্রম দ্রুত করতে হবে। জনসেবা জনগনের দৌড়গোড়ায় পৌছে দেওয়ার জন্য অনলাই ভিত্তিক কার্যক্রম চালু এবং অফিসের যাবতীয় কার্যক্রম ডিজিটালাইজ করার বিষয়ে স্ব স্ব বিভাগের কর্মকর্তাগণকে নির্দেশ দেন।
ইউডিসি কার্যক্রম সংক্রন্ত প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক বলেন, ২০০৯ সাল থেকে ইউডিসি কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। বিভিন্ন দপ্তর ইউডিসি কে সাহায্য করছে। যে সকল বিভাগীয় কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায় অফিস রয়েছে তারা বিভিন্ন কাজকর্মে ইউডিসির সাহায্য নিতে পারেন। ইউডিসিতে কম খরচে ভালো সেবা পাওয়া যায়। বর্তমানে চাঁদপুর জেলার সকল ইউডিসি এর কার্যক্রম সুষ্ঠভাবে পরিচালিত হচ্ছে। তিনি সকল বিভাগীয় প্রধানগণকে ইউডিসি এর মাধ্যমে বিভিন্ন সেবা গ্রহণ করার অনুরোধ জানান।
স্বাস্থ্য বিভাগ প্রসঙ্গে বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগীয় কার্যক্রম যথারীতি চলমান। জেলায় প্রস্তাবিত ২৯১টি কমিউনিটি ক্লিনিকের মধ্যে বর্তমানে ২১২টি চালু রয়েছে। এপ্রিল মাসে ৭টি ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর প্রসঙ্গে বলেন, সারের মূল্য ও বিতরণ ব্যবস্থা স্বাভাবিক রয়েছে। বর্তমানে ইউরিয়া সার মজুত রয়েছে ২৮৯৪ মে:টন, টিএসপি সার মজুত রয়েছে ৩৯২ মে:টন, এমওপি সার মজুত রয়েছে ১৩৮ মে:টন, ডিএপি সার মজুত রয়েছে ৭৩ মে:টন। বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষকদের প্রশিক্ষণ, মাঠ দিবস, প্রদর্শনী ও উদ্বুদ্ধকরন চলমান রয়েছে। বর্তমানে সারের কোন সংকট নেই।
পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ প্রসঙ্গে বলেন, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের এপ্রিল মাসে চাঁদপুর জেলার সার্বিক কাজের মান সন্তোষ জনক। এপ্রিল মাসে ২৯ জন পুরুষ ও ১২৫ জন মহিলা স্থায়ী পদ্ধতি, ২৬৫ জন আইইউডি এবং ৪০০ জন ইমপ্ল্যান ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর প্রসঙ্গে বলেন, এলজিইডির আওতায় পল্লী সড়ক, কালভার্ট মেরামত, পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন, প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন, গ্রামীন সড়ক ও হাট বাজার উন্নয়ন সহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের আওতায় ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরে মোট ৫৫০ টি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য কর্ম পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত ১৭৭ টি স্কীম সমাপ্ত হয়েছে। ৩৭৩ টি প্রকল্প চলমান রয়েছে, যার অগ্রগতি প্রায় ৬৭ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। জেলায় ১৭টি ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণের অনুমোদ পাওয়া গেছে। এ সকল প্রকল্প বাস্তবায়নে নিয়মিত বিভাগীয় তদারকি রয়েছে।
এসময় বক্তব্য রাখেন, সভায় বক্তব্য রাখেন, স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল হাই, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আশ্রাফুজ্জামান, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার এমএ ওয়াদুদ, স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত নারী মুক্তিযোদ্ধা ডা. সৈয়দা বদরুন নাহার চৌধুরী, চাঁদপুর সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ এএসএম দেলওয়ার হোসেন, ফরিদগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান আবু সাহেদ সরকার, ফরিদগঞ্জ পৌর মেয়র মাহফুজুল হক, চাঁদপুর সদর ইউএনও কানিজ ফাতেমা, কৃষি অফিসার আলী আহম্মদ, এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী জিএম মুজিবুর রহমান প্রমুখ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, চাঁদপুর জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. প্রদীপ কুমার দত্ত, চাঁদপুর সরকারী মহিলা কলেজের উপাধ্যক্ষ মাসুদুর রহমান, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন বিভাগের ইন্সপেক্টর মো. তাজুল ইসলাম, সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার একেএম সাইফুল হক, মার্কেটিং অফিসার রেজাউল করিম, জেলা তথ্য অফিসার নূরুল হক, জেলা কালচারাল অফিসার আবু সালেহ মো. আব্দুল্লাহ, জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা কাউছার হোসেন সহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা।