চাঁদপুর নিউজ রিপোর্ট
চাঁদপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী পরিবর্তন হচ্ছে এটা অনেকটা নিশ্চিত। কারণ, দল সমর্থিত প্রার্থী লেঃ কর্নেল (অবঃ) আবু ওসমান চৌধুরী তাঁর ভোটার স্থানান্তর করতে পারেন নি। তিনি বর্তমানে ঢাকার ভোটার। কিন্তু নির্বাচন বিধিমালা অনুযায়ী প্রার্থীকে সংশ্লিষ্ট জেলার ভোটার হতে হবে। এ কারণে তিনি নির্বাচন করতে না পারার আশঙ্কা দেখা দেয়ায় দলের প্রার্থী পরিবর্তন করতে হচ্ছে। দলের নির্ভরযোগ্য বিভিন্ন সূত্র থেকে এ তথ্য জানা গেছে। এদিকে আবু ওসমান চৌধুরী নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর ভোটার স্থানান্তর করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তা বিধি বহির্ভূত হওয়ায় তা আর সম্ভব হয়নি। ভোটার পরিবর্তনের একটা সম্ভাবনা গতকাল পর্যন্ত থাকলেও গতকাল রাত পর্যন্ত তা হয়ে উঠেনি বলে বিভিন্ন সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এদিকে মনোনয়ন বোর্ডের প্রধান আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা গতকাল দেশের বাইরে গেছেন। এ অবস্থায় প্রার্থী পরিবর্তনের বিষয়টি ঝুলে থাকবে কি না তা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে না।
এদিকে গতকাল রাতে চাঁদপুর শহরে ব্যাপকভাবে প্রচার হতে থাকে যে, আবু ওসমান চৌধুরীর পরিবর্তে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম দুলাল পাটওয়ারী চেয়ারম্যান পদে দলের সমর্থন পেয়েছেন। তবে এ খবরটি নিশ্চিত হওয়া হয়নি। দলের নির্ভরযোগ্য বিভিন্নজনের কাছে ফোন করলেও তাঁদের পাওয়া যায়নি এবং এ ব্যাপারে আবু নঈম দুলাল পাটওয়ারীর বক্তব্য নেয়ার জন্যে তাঁকে একাধিকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি। এদিকে আবু ওসমান চৌধুরী নির্বাচন করতে পারবেন না, তাই তাঁর পরিবর্তে অন্য কাউকে দেয়া হবে এমন সংবাদে দলের সমর্থন প্রত্যাশীরা আবারো নড়েচড়ে বসে। তাঁরা দৌড়ঝাঁপ দিতে থাকেন। আবু নঈম দুলাল পাটওয়ারী, আলহাজ্ব ওচমান গণি পাটওয়ারী, ইউসুফ গাজী ও মতলব উত্তরের নূরুল আমিন রুহুল দলের সমর্থন পেতে পারেন এমন কথা শোনা যায় বিভিন্ন সূত্র থেকে।
তবে দলের একটি অংশ আবু ওসমান চৌধুরীকে চাঁদপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান করার জন্যে শেষ চেষ্টাটি চালিয়ে যাচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে। ভোটার সংক্রান্ত জটিলতার কারণে শেষ পর্যন্ত তিনি যদি নির্বাচন নাও করতে পারেন তাহলে জেলা পরিষদ নির্বাচন অধ্যাদেশে উল্লেখিত ‘চেয়ারম্যান পদে সরকার যে কাউকে সরাসরি নিয়োগ দেয়ার ক্ষমতা রাখে’ অনুযায়ী হয়ত তাঁকে সরকার সরাসরি নিয়োগও দিয়ে দিতে পারেন। আবার এও শোনা গেছে যে, আবু ওসমান চৌধুরী তাঁর ভোটার পরিবর্তন সংক্রান্ত যে আবেদন বাতিল হয়েছে এ বিষয়ে আজ তিনি কমিশনে আপীল করবেন।
উল্লেখ্য, আবু ওসমান চৌধুরী ঢাকার ভোটার। তিনি জেলা পরিষদ নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর ভোটার স্থানান্তর করার ব্যাপারে জেলা নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করেন। কিন্তু তা বিধি বহির্ভূত হওয়ায় জেলা অফিস অপারগতা প্রকাশ করলে তিনি নির্বাচন কমিশনে যান। জানা গেছে, ভোটার তালিকা আইন ২০০৯-এর ১৫নং অনুচ্ছেদে রয়েছে নির্বাচন কমিশনের অধিকাংশজনের মতামতের উপর ভিত্তি করে যে কাউকে যে কোনো সময় ভোটার স্থানান্তর করার অনুমতি দিতে পারে। আবার নাও দিতে পারে। এটা কমিশনের এখতিয়ার। এ সুযোগটিই আবু ওসমান চৌধুরী নিতে চাচ্ছেন।
শুক্রবার রাতে তিনি এ বিষয়ে আশ্বস্ত করেন যে, তাঁর ভোটার স্থানান্তর হয়ে গেছে। রোববার হালনাগাদ ভোটার লিস্ট হাতে পাবেন। কিন্তু গতকাল রাত পর্যন্ত তিনি তা পাননি। এ ব্যাপারে তাঁর সাথে কথা বলতে গতকাল রাতে তাঁকে একাধিকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি। শেষ পর্যন্ত চাঁদপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের পরিবর্তিত প্রার্থী কে হচ্ছেন তা চূড়ান্তভাবে জানতে আজ অথবা আরো কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে।