চাঁদপুর: শত বছরের পুরানো চাঁদপুর পৌরসভায় আধুনিকতার ছোঁয়া দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমান মেয়র মোঃ নাছির উদ্দিন আহামেদের যোগ্যতর নেতৃত্বে বর্তমান পৌর পরিষদ চাঁদপুর পৌরসভাকে দেশের মধ্যে একটি মডেল পৌরসভায় রূপ দিতে নানা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। এরই মধ্যে ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে এ পৌরসভায়। সামনে আরো উন্নয়ন কার্যক্রম হবে। এখন এই পৌরসভার জন্য ‘নগর ভবন’ করার পরিকল্পনা রয়েছে। আর এটি হবে চাঁদপুর পুরাতন বাস স্ট্যান্ড এলাকায়। ১০তলা ভিত্তির উপর এ নগর ভবন করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চাঁদপুর আসলেই তাঁকে দিয়ে এটির ভিত্তিফলক উন্মোচন করা হবে। এরপরই শুরু হবে ‘নগর ভবন’ নির্মাণের কাজ।
শত বছরেরও অধিক পুরানো চাঁদপুর পৌরসভার সীমানা ৯ বর্গ কিলোমিটার থেকে বেড়ে এখন ২২ বর্গ কিলোমিটার। বর্তমান পৌর পরিষদের সময়ই এটি করা হয়েছে। এ সীমানা বৃদ্ধি করতে গিয়ে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে বর্তমান পৌর পরিষদ তথা মেয়রকে। সকল কিছু মোকাবেলা করে তিনি তাঁর অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছেন। পৌরসভার সীমানা বৃদ্ধির ফলে এ পৌরসভাটি ইউজিআইআইপিতে অন্তর্ভুক্ত হয়। এতে করে বাংলাদেশ সরকার এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক, কেএফডবিস্নউ জার্মান, জিটিজেড জার্মানসহ নানা দাতা সংস্থা থেকে চাঁদপুর পৌরসভার জন্য উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ আসতে থাকে। এ পৌরসভাকে আধুনিক মডেল পৌরসভায় রূপ দিতে মাস্টার প্লান করা হয়। পৌরসভার উন্নয়ন কাজের সাথে জনগণকে সম্পৃক্ত করে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা করার লক্ষ্যে নগর সমন্বয় কমিটি, ওয়ার্ড সমন্বয় কমিটি, কমিউনিটি ভিত্তিক সংগঠন, জেন্ডার কমিটি, নগর পরিকল্পনা ইউনিট ইত্যাদি গঠন করা হয়েছে। নগর সমন্বয় কমিটিতে চাঁদপুর শহরের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার প্রতিনিধিদের রাখা হয়েছে। প্রতি তিন মাস অন্তর অনত্দর এ নগর সমন্বয় কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় পৌরসভার উন্নয়নে এবং কাজের গুণগত মান নির্ণয়ে নানা পরামর্শ নেয়া হয় এবং বিভিন্ন সমস্যাবলি ওই সভায় সরাসরি বলা হয়। সে অনুযায়ী পৌরসভার উন্নয়ন কাজ পরিচালিত হয়। এ ছাড়া পৌরসভার সকল অফিসিয়াল কার্যক্রম কম্পিউটারাইস্ড করা হয়েছে এবং আর্থিক লেনদেন ব্যাংকিং পদ্ধতিতে করা হয়েছে। এতে কার্যক্রম অনেকটা দুর্নীতিমুক্ত হয়েছে এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হওয়া গেছে।
আধুনিক চাঁদপুর পৌরসভার উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় এখন ‘নগর ভবন’ করা হবে। এটি করার জন্য পুরাতন চাঁদপুর বাস স্ট্যান্ড এলাকাকে নির্ধারণ করা হয়েছে। যেখানে বর্তমানে মাইক্রো স্ট্যান্ডসহ দোতলা ভবন রয়েছে। এ ব্যাপারে সোমবার পৌর মেয়র মোঃ নাছির উদ্দিন আহামেদের সাথে কথা হয়। তিনি জানান, পুরাতন বাস স্ট্যান্ড এলাকায় ৭ থেকে ৮ হাজার স্কয়ার ফুটের মধ্যে এ ‘নগর ভবন’ করা হবে। ১০তলা ভিত্তির উপর এটি করা হবে। পৌরসভার সকল প্রশাসনিক কার্যক্রম এ ‘নগর ভবন’ থেকে পরিচালিত হবে। আর বর্তমান পৌর ভবন তথা পৌরসভা কার্যালয়টিকে শত বছরের পুরানো ঐতিহ্য হিসেবে পৌরসভার জন্যই অন্য কাজে লাগানো হবে। যেমন সেখানে পৌরসভার বিভিন্ন ইউনিটের কার্যক্রম পরিচালিত হতে পারে। মেয়র জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চাঁদপুর আসলেই তাঁকে দিয়ে ‘নগর ভবনে’র ভিত্তিফলক উন্মোচন করা হবে। এরপর কাজ শুরু হবে।
চাঁদপুর পৌরসভার সীমানা বৃদ্ধি করায় বর্তমান পৌর ভবনটি বলতে গেলে শহরের এক পাশে পড়ে গেছে। এটি এখন পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডে অবস্থিত। এখান থেকে স্থানান্তর করে বাস স্ট্যান্ড এলাকায় নেয়া হলে এটি শহরের মাঝখানেই হবে। এটি পৌরবাসীর জন্য ভালো হবে বলে মনে করেন শহরবাসী। শহরের যানজট থেকেও অনেকটা মুক্ত থাকা যাবে। এ দিকে পুরাতন বাস স্ট্যান্ড এলাকায় পৌর মার্কেটে এখন যারা রয়েছেন তাদেরকে ‘নগর ভবন’ করার পর সেখানেই পুনর্বাসন করা হবে বলে জানানো হয়।