চাঁদপুরে মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার গতকাল সন্ধ্যায় স্মৃতিচারণ মঞ্চে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, কুমিল্লা অঞ্চল এফএফ কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা খালেকুজ্জামান ভূইয়া। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, বাংঙ্গালী জাতির ইতিহাস ১২ শ’ বছরের ইতিহাস। ইংরেজদের বিরুদ্ধে বাংলার কৃষক সাধারণ বিদ্রোহ করেছে। বাংলাদেশের এমন কোন জায়গা নেই যে খানে ইংরেজদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ হয়নি। কোন জাতি যদি তার ৫ হাজার বছরের ইতিহাস না জানে, সে জাতি কখনো এগুতে পাবেনা। গণতান্ত্রিক অধিকার হচ্ছে জনগন এদেশের মালিক। বাংলাদেশকে ৩শ’ ভাগে ভাগকরা হয়েছে। সে ৩শ’ ভাগ থেকে ভোট দিয়ে জনগণ নির্বাচিত করে ৩শ’ জনকে। যারা নির্বাচিত করে তারা ক্ষমতার মালিক নয়। ক্ষমতার মালিক হচ্ছে জনগণ। ১৯৪৭ সালে এদেশ ভাগ হয়ে যাবার পর। এক ভাগ হয়ে গেলো ভারতীয় জাতি, আরেক ভাগ হলো পাকিস্তানি জাতি। কিন্তু আমরা হয়ে গেলাম জাতিহীন। তা থেকে আমাদের আন্দোলন শুরু হয়েছে। স্বাধীনতা অর্থ হচ্ছে শোষণ মুক্ত সমাজ, মৌলিক অধিকার, সমাজতন্ত্র, ধর্মের নামে ভন্ডামি নয় এবং গণতন্ত্র। মুক্তিযুদ্ধের সময় বিত্তশালীলা যুদ্ধ করেনি, যুদ্ধ করেছে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। আমাদের সন্তনরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এগিয়ে যাবে। এ বিজয় দিবসে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আমরা এখন ঐক্য বদ্ধহতে চাই, একত্রিত হয়ে কাজ করতে চাই। বর্তমান প্রজন্মকে স্বাধীনতার ইতিহাস, ৩০ লাখ শহীদের রক্ত ও ২লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলার স্বাধীনতার কথা জানাতে হবে। জানাতে হবে কারো দয়া বা দানে আমরা বাংলাদেশ পাইনি। আমাদের বাঙালি জাতির ২টি গর্বের বিষয় আছে। তা হলো আমরা আমাদের ভাষার জন্য ও স্বাধীনতার জন্য রক্ত দিয়েছি। আমরা বীরের জাতি। আমাদের দেশে বর্তমানে ৩০ হাজার টাকা বেতনে আমলারা তাদের সন্তানদের মাসে ৯৬ হাজার টাকা বেতনে পড়া লোখা করাচ্ছে, তার নামইকি স্বাধীনতা। এাঁর নাম স্বাধীনতা নয়। এক জন আমলা মাসে বেতন পায় ৩০ হাজার টাকা তার সন্তানের স্কুলের বেতন ৯৬ হাজার টাকা, তাহলে তার বাকি টাকা আসে কোথা থেকে। মুক্তিযুদ্ধের গৌরবকে ধারণ না করলে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। আমাদেরকে এবং আমাদের প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের গৌরবকে লালন করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, ৭১ সালে রাজাকার, আলবদর, পাকিস্তানি ছাড়া কোন বাঙ্গালি, কোন বাঙ্গালিকে হত্যা বা ধর্ষণ করেনি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দাঁড়িয়ে দেশ শাসন করতে পারলে, দেশ আরো এগিয়ে যেতো। যারা দেশের মা বোনের ইজ্জতের জন্য মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। তারা আজ স্কুল, কলেজ এবং রাস্তা-ঘাটে মেয়েদের ইভটিজিং করে, বিরক্ত করে। তার কারণ তাদেরকে ভুলপথে শিক্ষা দিচ্ছে এবং সঠিক পথ দেখাচ্ছে না। যে জাতির ভাষা এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস রয়েছে তাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে। আমাকে এ বিজয় মেলা মঞ্চে বক্তব্য দেওয়া সুযোগ করে দেওয়ার জন্য আমি আয়োজকদের ধন্যবাদ জানাই।
বিএলএফ কমান্ডার হানিফ পাটওয়ারীর সভাপতিত্বে এবং বিজয় মেলার মহাসচিব অ্যাড. বদিউজ্জামান কিরণের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন, বিজয় মেলার স্মৃতিচারণ পরিষদেও সদস্য সচিব আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা মহসীন পাঠান। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, জেলা বাসদের সমন্বয়ক শাহাজাহান তালুকদার।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, মুক্তিযোদ্দা সংসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য সচিব নাঈম জাহাঙ্গীর, কেন্দ্রীয় গণফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাক আহম্মেদ, বিজয় মেলার স্মৃতিচারণ পরিষদের সদস্য সচিব মুক্তিযোদ্ধা ইয়াকুব আলী মাস্টার।
শিরোনাম:
রবিবার , ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ , ২৪ ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।