শাহরিয়া খান কৌশিক ॥
চাঁদপুরে নৌ পুলিশের উপস্থিতিতে হাজীগঞ্জের এক স্বর্ন ব্যবসায়ীর ৪৭ ভরি স্বর্ন ছিনতাই করার ঘটনার ৩ দিন অতিবায়িত হলেও এখন পর্যন্ত কোন আসামী আটক ও ছিনতাই হওয়া স্বর্ন উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। ঘটনার তদন্তে চাঁদপুরে এসেছেন নৌ পুলিশের ডিআইজি মনিরুজ্জামান। স্বর্ন ছিনতাই হওয়ার ঘটনায় ৩ দফা মামলার এজেহার পরিবর্তনের পর অজ্ঞাত ৪ জনকে আসামী করে গত রবিবারে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা নং-০৮ ৬/৩/১৫। পুলিশ সুপার শামছুন্নাহারের নির্দেশে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি (তদন্ত) মোঃ মহিউদ্দিন মিয়া, ডিবির এসআই ইসমাইল খন্দকার, নতুস বাজার পুলিশ ফাড়ির পুলিশ পৃথক অভিযান চালিয়ে ছিনতাইয়ের ঘটনার সাথে জড়িতদের আটক করতে চেষ্টা করে। চাঁদপুর মাদ্রাসা রোড লঞ্চ টার্মিনালে ঈগল-১ লঞ্চের ৩য় তলায় সৌখিন থেকে নৌ পুলিশের উপস্থিতিতে ৪৭ ভরি স্বর্ন ছিনতাই হওয়ার ঘটনায় ও নৌ পুলিশ কর্মকর্তা এসআই মোশারফ ছিনতাইয়ের ঘটনার সাথে জড়িত রয়েছে কিনা তা তদন্ত করেন ডিআইজি মনিরুজ্জামান। এছারা মেঘনায় পদ্মা নদীতে নৌ সিমান্ত এলাকায় ছিনতাই,ডাকাতি ও অপরাধ কর্মকান্ড ঠেকাতে গতকাল বিকেলে নৌ পুলিশের এসপি শাহারিয়ার, এএসপি ফারুক, ইন্সপেক্টর আবুল হোসেন সহ নৌ পুলিশের সদস্যদের নিয়ে রাত পর্যন্ত অভিযান চালায় বলে নৌ পুলিশ সূত্রে জানা যায়।
উল্লেখ্য, স্বর্ন উদ্ধারে গত শনিবার রাতভর অভিযুক্ত নৌ পুলিশের এসআই মোশারফের নাটকীয় অভিযানে ব্যপক গুঞ্জনের সৃষ্টি হয়েছে। হাজীগঞ্জ নোয়ারদা গ্রামের মনোরঞ্জন সেনের ছেলে খাজা মার্কেটের নিচ তলার শ্যাম শিল্পালয়ের মালিক রতন সেন ৪৭ ভরি স্বর্ন নিয়ে শনিবার সকাল ৯ টায় ঢাকাগামী ঈগল-১ লঞ্চে রওনা হয়। স্বর্ন ব্যবসায়ী রতন সেন ঈগল লঞ্চের ৩য় তলায় সৌখিনে গিয়ে বসে। সকাল ৯টায় লঞ্চ ছাড়ার পূর্বে ঐ ২ চিহ্নিত সন্ত্রাস তাদের সহযোগীদের নিয়ে ব্যবসায়ী রতন সেনকে স্বর্ন চোরাকারবারী অপবাদ দিয়ে তাকে লঞ্চ থেকে নামিয়ে আনার চেষ্টা করে। সে ডাক চিৎকার করলে নিচে গিয়ে নৌ পুলিশের ইনচার্য মোশারফের সলাপরামর্শ করে তাকে নিয়ে পুনরায় লঞ্চের ৩য় তলায় যায়। স্বর্ন ব্যবসায়ী রতন সেন সন্ত্রাসী ও ছিনতাইকারীদের ভয়ে সাথে থাকা ৪৭ ভরি স্বর্ন ঐ লঞ্চের যাত্রী তার প্রতিবেশী হাজীগঞ্জের বিএনপি নেতা ইমাম হাজীর কাছে রক্ষিত রাখে। ঠিক ঐ সময়ে নৌ পুলিশ ও সোর্স পরিচয়ে ঐ ২ সন্ত্রাসী ভিতরে প্রবেশ করেই ব্যবসায়ী রতন সেনকে পাচারকারী বলে ব্যপক মারধর করে। নৌ পুলিশের ইনচার্য মোশারফের সামনেই তার সোর্সরা ইমাম হাজীর কাছ থেকে স্বর্ন ছিনিয়ে নিয়ে মোশারফের ইশারায় লঞ্চ থেকে নেমে পরে। পরে ব্যবসায়ী রতন সেনকে স্বর্ন পাচারকারী অপবাদ দিয়ে হাতে হ্যান্ডকাপ লাগিয়ে নৌ ফাড়িতে এনে বেধম মারধর করে।
এদিকে সন্ধ্যা ৬টায় আটক রতন সেনকে নৌ পুলিশ চাঁদপুর মডেল থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করলে ছিনতাই হওয়ার ঘটনাটি প্রকাশ প্রায়। স্বর্ন উদ্ধার করার কথা বলে ইনচার্য মোশারফ ৯ এসআইকে সাথে নিয়ে কোড়ালিয়া, প্রফসার পাড়া ও মাঝি বাড়ির এলাকায় মেঘনা নদীর পারে বালুর মাঠে নাটকীয় অভিযান চালায়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ঘটনার মাথে জড়িত কোন আসামী ও ছিনতাই হওয়া স্বর্ন উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।