প্রতিনিধি
চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথের মিশন রোড এলাকার রেলওয়ের লেকে মাছ চাষের কারণে রেলপথ সংলগ্ন বিস্তির্ণ এলাকা মাটি ধসে পড়ছে। এতে করে এ পথে প্রতিদিন চলাচলাকারী যাত্রীবাহী ১২টি ট্রেন যেকোন মুহূর্তে বড় ধরণের দূর্ঘটনার আশঙ্কা বিরাজ করছে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষ থেকে কোন ধরণের পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না বলেও অভিযোগ পাওয়া যায়।
চাঁদপুর-লাকসাম ৫৪ কিলোমিটার রেলপথের চাঁদপুর কোর্টস্টেশন এলাকা থেকে প্রায় ২শ’ গজ দূরত্বের মধ্যে শহরের মিশন রোড সংলগ্ন রেলওয়ের যে বড় লেকটি রয়েছে, সেই লেকে বহু বছর যাবৎ মাছ চাষ করে আসছে মিশন রোড এলাকায় বসবাসকারী মনু হাজী নামে ব্যক্তি। রেললাইন লাগোয়া লেকটির পাড় সংরক্ষণ না করেই এখানে চাষ করায় চাঁদপুরের রেলওয়ের লাইন সংলগ্ন অনেকাংশ এলাকা মাটি ধসে পুকুরে তলিয়ে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে মাছ চাষী ও রেলওয়ের কর্মকর্তাদের কোনো প্রকার মাথা ব্যাথা নেই।
বিগত বছরগুলোতে মনু হাজী এ লেকে তেলাপিয়া, নাইলটিকা মাছ চাষ করেছিলো। কিন্তু এ বছর তেলাপিয়া, নাইলটিকার পাশাপাশি পাঙ্গাস মাছ ও কারফিউ মাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাটি খেকো মাছের চাষ করার কারণে রেললাইনের পাশ ঘেঁষে পুকুরের নিচের মাটি চাষকৃত মাছ খাবারের সন্ধানে ধ্বংস করে ফেলছে। এতে করে দেখা যায়, মিশন রোড সংলগ্ন রেলওয়ের যে লেকটির রেললাইন সংলগ্ন বিস্তির্ণ পাড়ের সকল অংশের পারের মাটি পুকুরে তলিয়ে যাচ্ছে। রেললাইন সংলগ্ন এ পাড়ের বিস্তৃতি বিগত কয়েক মাস পূর্বেও অনেকাংশে বৃদ্ধি ছিলো। কিন্তু বর্তমানে মাটি ধসে কোন কোন স্থানে একেবারে রেল লাইনের স্লিপারের কাছাকাছি চলে এসেছে। মাটি ধস প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে যেকোন মুহূর্তে এ লাইনে চলাচলকারী ট্রেন বড় ধরণের দূর্ঘটনার কবলে পরে জনগণের জানমালের ক্ষতির আশঙ্কা করা যাচ্ছে।
এ বিষয়ে রেলওয়ের লেক সংলগ্ন রেল গেটম্যান মোঃ আলী আশরাদ বলেন, বর্তমানে এ পুকুরে পাঙ্গাস মাছ চাষ করা হয়েছে। তিনি দেখেছেন রেল লাইন সংলগ্ন বিস্তৃর্ণ এলাকার মাটি পুকুরে তলিয়ে যাচ্ছে। তিনি লাইনের ইনচার্জকে বিষয়টি জানিয়েছেন। কিন্তু তারা লাইন সংলগ্ন পারের মাটি ধসে যাওয়া স্থানে বস্তা আর বাঁশ ও টিনের টুকরা অংশ দিয়ে জোড়াতালি দিয়ে রেখেছে। যেসব স্থানে জোড়াতালি দেয়া হয়েছে তার পাশের অংশ এখন ভাঙ্গছে।
এছাড়াও মাছ চাষকারি মনু হাজীর কাছে বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, এ বছর তিনি পাঙ্গাসের চাষ করেছেন। তবে পাঙ্গাস মাছ পুকুরের কোন ক্ষতি করে না। কারফিউ মাছ ক্ষতি করলেও তিনি এ মাছ চাষ করে না বলে জানান। তবে পুকুরে অন্যান্য মাছের সাথে কারফিউ মাছ থাকতে পারে। তিনি আরো জানান, বর্ষার পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে এ জলাশয়ের পানি অনেক বেড়ে গেছে। পািন অপসারণের জন্য যে ড্রেনেজ ব্যবস্থা রয়েছে তার মুখে মাছ রক্ষার জন্য ঢাকনা দেয়ায় পানি দ্রুত সরতে পারেনা যখন পানি একবারে কমে যায় তখন পানির টানে মাটি ধসে পড়ে।
চাঁদপুর-লাকসাম রেল পথের দায়িত্বে এসএসএ/ই পথ লিয়াকত আলী মজুমদার জানান, চাঁদপুরের এ বিষয়ের দায়িত্বে থাকা এস এসএ/ই পূর্ত চাঁদপুরকে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলা হয়েছে। তারা চটের ব্যাগের মাধ্যমে এর রক্ষার ব্যবস্থা করবেন বলে তিনি জানান। তবে ঘটনাস্থলে গিয়ে দীর্ঘ এ লেকটির সামান্য সংস্কারের চিহ্ন দেখা যায়। ছায়াবাণী মোড় থেকে শুরু করে মিশন রোড রেল ক্রসিং পর্যন্ত প্রায় দেড়হাজার মিটার এলাকার রেললাইন এখন সম্পূর্ণ ভাবে হুমকির সম্মুখিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। যতোই দিন যাচ্ছে ততোই মনু হাজীর লিজ নেয়া রেললাইন সংলগ্ন পাড় ভেঙ্গে পরছে। এই পার ভাঙ্গার কারণে এই স্থানের রেল লাইনটি মারাত্মক হুমকির সম্মুখিন হয়ে পরছে। তাই বড় ধরণের ট্রেন দুর্ঘটনার পূর্বেই রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন বলে মনে করছে সাধারণ মানুষ।
শিরোনাম:
বৃহস্পতিবার , ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ৩ মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।