দালাল নির্ভর হয়ে চলছে চাঁদপুর শহরের অধিকাংশ প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। শহরের হাতে গোণা ক’টি প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার ছাড়া বাকি বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো চলছে দালাল নির্ভর হয়ে। শহরের আনাচে কানাচে গড়ে ওঠা এসব প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে নেই যেমন মানসম্মত চিকিৎসা ব্যবস্থা তেমনি নেই চিকিৎসক ও নার্সসহ প্রয়োজনীয় জনবল। আর এসব হাসপাতাল অনেকটা চলছে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের কিছু স্টাফ, দালাল ও রিঙ্া চালকদের উপর ভরসা করে। চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের ক’জন স্টাফ ও দালাল শহরের বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক ও স্টাফদের সাথে রোগী পাঠানোর ক্ষেত্রে যোগসাজশের মাধ্যমে অত্যন্ত চতুরতার সাথে কমিশন বাণিজ্য করে থাকে। যারা তাদেরকে বেশি কমিশন দেয় তাদেরকে তারা রোগী দিয়ে থাকে। সরকারি হাসপাতালের এক উঠতি বয়সী যুবক স্টাফকে গভীর রাত পর্যন্ত বিভিন্ন হাসপাতালে রোগীদের অপারেশন করাতে নিয়ে যেতে দেখা যায়।
জানা যায়, রোগী অথবা রোগীর লোকজন হাসপাতালে স্টাফদেরকে চিকিৎসা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেই তারা বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যোগাযোগ করে থাকে এবং সরকারি হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগী চিকিৎসা করানোর জন্যে নিয়ে যায়। এর বিনিময়ে সে পেয়ে থাকে হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের কমিশন আর রোগীর লোকজনও খুশি হয়ে ৫০০/১০০০ টাকা তাদের দিয়ে থাকে। এতে প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার মালিকগণও যেমনি লাভবান হচ্ছে তেমনি ওই দালালও লাভবান হয়ে থাকে। পরনির্ভরশীল হয়ে যদি প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো না চলতো তাহলে অনেক পূর্বেই এসব বন্ধ হয়ে যেতো। আর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে রোগীর চাপও বৃদ্ধি পেতো।
একটি সূত্র জানায়, হাসপাতালের ক’জন স্টাফ ও দালাল অনেক রোগীর লোকদের ভুল বুঝিয়ে প্রাইভেট হাসপাতালে রোগী বাগিয়ে নিচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। এ বিষয়টি কর্তৃপক্ষ জানার পরও না জানার ভান করে আসছেন। ওই সূত্রটি আরো জানায়, প্রভাবশালী একটি চক্রের সহযোগিতায় এসব অপকর্ম করার কারণেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে না। যার ফলে দিন দিন দালাল ও হাসপাতাল থেকে রোগী ফুসলিয়ে প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডাগায়নস্টিক সেন্টারে নিয়ে চিকিৎসা করানোর প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এ ব্যাপারে চাঁদপুর আড়াইশ’ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ প্রদীপ কুমার দত্ত বলেন, বিষয়টি আপনার কাছে এখন মাত্র জেনেছি। এ রকম কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
চাঁদপুর প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ডাঃ শফিকুর রহমান জানান, নির্ভরযোগ্য কোনো প্রমাণ নেই হাসপাতালের স্টাফরা রোগী নিয়ে আসে। আর নির্ধারিত কোনো তথ্য নেই দালালরা রোগী নিয়ে যায় প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। মূলত রোগীরা তাদের পছন্দের হাসপাতালে যায়।