স্টাফ রিপোর্টার:
চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের স্বাস্থ্য বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় সম্পদ ২টি মেশিন পাচারের ঘটনায় মত্রনালয়ের নিদের্শে গতকাল সোমবার বিকেলে ৬ সদস্যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা:প্রদীপ কুমার দত্ত। গঠিত কমিটি আগামী ৩ দিন কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতেও নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। এ ছাড়া পাচার কালে আটক ২টি মেশিন তত্ত্বাবধায়ক ডা:প্রদীপ কুমার দত্ত তার কার্যালয়ে জব্দ করে রেখেছেন। তদন্ত কমিটির সদস্যরা হচেছ, হাসপাতালের সহকারী –পরিচালক ডা:মোজ্জামেল হক ভুঁইয়া,সিনিয়ার কনসালটেন্ট ডা: সালেহ আহম্মেদ,জুনিয়ার কনসালটেন্ট ডা:সৈয়দ মো: নুরুল হুদা, আবাসিক সার্জন ডা:মাহমুদুন নবী মাসুম,ডা:বেলায়েত হোসেন ও ফামার্সিস্ট এ এইচ এম সুজাতউদ্দৌল্লা। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার (০৪ আগষ্ট) রাতে চাঁদপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি জেনারেল হাসপাতালের চত্ত্বরে। এ ঘটনার সাথে জড়িত রয়েছেন হাসপাতালের হেড ক্লার্ক সফিউল আজম ও স্টোর কিপার আবুল বাসার। ঘটনার পর এলাকাবাসী হাসপাতালের কর্মচারীকে গণপিটুনী কালে হেড ক্লার্ক ও স্টোর কিপার তাকে জনতার হাত থেকে ছিনিয়ে নেয়। এ ঘটনায় পুরো এলাকায় তাৎক্ষনিক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে গোডাউনে রক্ষিত (স্টোর রুমে) সরকারি সম্পদ জনসাধারণের স্বাস্থ্য পরীক্ষায়-নিরীক্ষার জন্য সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ কর্তৃক সরবরাহকৃত সিরাম ইলেকট্রনিক্স মেশিন (যার মূল্য ১০ লক্ষ টাকা) ও ফ্রিজিওথেরাপী মেশিন (যার মূল্য ৫লক্ষ টাকা)। দুটি মেশিন পাচারকালে এলাকাবাসী ও কতিপয় সংবাদকর্মীর হাতে আটক হয় হাসপাতাল কর্মচারী হারুন। পরে এ ঘটনার সাথে জড়িত হাসপাতালের হেড ক্লার্ক সফিউল আজম ও স্টোর কিপার আবুল বাসার, হাসপাতালের কর্মচারী (পদবী-ক্যাশ সরকার) মোঃ হারুনুর রশিদ হারুন কে জনতার হাত থেকে সোডিয়াম ও থেরাপি পরীক্ষার যন্ত্রাংশসহ ছিনিয়ে নিয়ে যায়। উক্ত ঘটনাটি তাৎক্ষনিক হাসপাতাল এলাকাসহ পুরো চাঁদপুর শহরে ছড়িয়ে পড়ে এবং এলাকায় ব্যাপক জল্পনা কল্পনা ও ঝড় উঠে। হাসপাতালের হেড ক্লার্ক সফিউল আজম জানান, হাসপাতালে নতুন মেশিন এসেছে। সেই মেশিন হাসপাতালে স্থাপনার কাজ চলছে। পাচারকৃত ২টি মেশিন দরকার নেই। যার ফলে হারুন মেশিন দুটি যে ঠিকাদার সরবরাহ করেছিল তার কাছে পাঠাতে যায়। তার কাছে পাঠানোর জন্য হাসপাতাল থেকে মেশিন দুটি বাহির করেছে। এটা সংবাদ কর্মী ও জনতার সাথে বসে মিমাংসা করা হয়েছে। এটি একটি ভুল বুঝাবুঝি মাত্র। রিপোর্ট করার দরকার নাই। এ ব্যাপারে হাসপাতালের থেরাপি চিকিৎসক ওমর ফারুক গোলাম রহমান (রুপম) ঘটনাস্থলে মেশিন দুটি দেখে মন্তব্য করেন, চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে সোডিয়াম পরীক্ষার জন্য মূল্যবান এ মেশিন ও থেরাপির মেশিন যে রয়েছে তা আমি ডাক্তার হয়েও এ পর্যন্ত জানি না। হাসপাতালের সিভিল সার্জন রথিন্দ্র নাথ মজুমদার জানান, ঘটনাটি শুনেছি, এ ব্যাপারে খোজখবর নিচ্ছি তত্ত্বাবধায়কের কাছে। তা যেন গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক প্রদীপ কুমার দত্ত জানান, ঘটনাটি আমি জানার সাথে সাথে হাসপাতালের সহকারি পরিচালক ডাঃ মোজাম্মেল হককে ঘটনাটি দেখার জন্য দায়িত্ব দিয়েছি। এ ধরনের মেশিন ঢাকা পাঠানো ব্যাপারে আমি অনুমতি দেইনি। হাসপাতালের সুনাম বিনষ্ট ও মালামাল পাচারকারী কর্মচারী হারুনের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।