রফিকুল ইসলাম বাবু ।
ইলিশ রক্ষায় জেলেদের খাদ্য সহায়তা ও পুনর্বাসণ ছাড়াই গত ১ মার্চ থেকে দু’মাস পদ্মা-মেঘনার অভায়শ্রমে সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ অবস্থায় জেলেদের মাঝে চরম হতাশা দেখা দিয়েছে। এদিকে নিষিদ্ধের সময় বিগত বছরগুলোতে জেলেদের মাঝে চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ ব্যাপক। ফলে নদীতে মাছ ধরতে জেলেরা বাধ্য হচ্ছে জাটকা রক্ষায় দুই মাসের অভয়াশ্রমের কারণে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় মাছ শিকারে নামছে না জেলেরা এ অবস্থায় জেলেদের মাঝে চরম হতাশা দেখা দিয়েছে। ইলিশের পোনা জাটকা রক্ষায় সরকার মার্চ-এপ্রিল দু’মাস অভায়শ্রম ঘোষণা করে পদ্মা-মেঘনা নদীতে সব ধরণের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে। ইতিমধ্যে জেলেরা তাদের নৌকা ও জাল ডাঙায় তুলেছে। কিন্তু জেলেদের খাদ্য সহায়তা ও পুনর্বাসনে এখনো কোনো বরাদ্দ মিলেনি। এ অবস্থায় জেলেদের মাঝে চরম হতাশা দেখা দিয়েছে। এদিকে নিষিদ্ধের সময় বিগত বছরগুলোতে জেলেদের মাঝে চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ । মেঘনা নদীর চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে লক্ষীপুর জেলার চর আলেক জেন্ডার পর্যন্ত ১শ’ কিলোমিটার এলাকার জেলেরা মাছ ধরা থেকে বিরত রয়েছেন। দুই মাস পর অভয়াশ্রম শেষ হবে। তারপর শুরু হবে ইলিশ শিকার। তাই জেলার ৪১ হাজার জেলে পরিবার এখন জাল তৈরী, নৌকা মেরামতসহ মাছ ধরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কিন্তু এই দুই মাস জেলে পরিবারগুলোর বিকল্প কোন কর্মসংস্থান না থাকায় কর্মহীন হয়ে পড়েছে। পাশপাশি পরিবারের খরচ মিটাতে হিমশিম খাচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে জাটকা আহরণে বিরত রাখা জেলে পরিবারদের জন্য বিশেষ ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় খাদ্যশস্য বরাদ্দ আসার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত এসে পৌঁছায়নি। তবে জেলা প্রশাসন থেকে এই বিষয়ে ত্রান মন্ত্রণালয়ে চাহিদা প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানাগেছে। জেলে ও তাদের পরিবারের লোকজন জানিয়েছে সরকার দুই মাস মাছ আহরণ নিষিদ্ধ করলেও তাদেরকে এখন পর্যন্ত আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে না। তাদেরকে সহযোগিতা করার জন্য সরকারের প্রতি আহবান। চাঁদপুর জেলার ৪১হাজার ৪২টি জেলে পরিবারকে সরকার বিশেষ ভিজিএফ এর আওতায় এনেছেন। মার্চ থেকে জুন মাস পর্যন্ত প্রতিমাসে প্রত্যেক জেলে পরিবারকে ৪০ কেজি করে চাল সহায়তা দেয়ার জন্য ইতোমধ্যে ত্রান মন্ত্রণালয়ে চাহিদা প্রেরণ করা হয়েছে। বরাদ্দ আসলে খুব দ্রুত এই সহায়তা পৌঁছানো হবে। জাতীয় সম্পদ ইলিশ রক্ষায় মাছ শিকার থেকে বিরত থেকে আইনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন চাঁদপুরের জেলেরা। মৎস্য সম্পদ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে অসহায় জেলে পরিবারগুলোকে সঠিক সময়ে খাদ্য সহায়তা প্রাপ্তিই এখন তাদের দাবী। এদিকে মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও বিগত বছরগুলোতে জেলেদের মাঝে চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ স্বীকার করে এবার ৪০ কেজির ইনটেক্ট বস্তায় চাল বিতরণের প্রস্তাব দিয়েছেন বলে জানান। এবার শুধুমাত্র চাঁদপুরেই ৪১ হাজার জেলে পরিবার জেলেকে পুনর্বাসন করা হবে। এছাড়া জাটকা রক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসক মোঃ আব্দুর সবুর মন্ডল বলেন, তারা জেলেদের আরো বেশি সহায়তা দেবার চেষ্টা করছেন। ৪০ কেজির বদলে ৮০ কেজি করে চাল দেবার প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। জেলেরা জানায়, সময় মতো খাদ্য সহায়তা ও পুনর্বাসন করা না হলে এবং কারেন্ট জাল ফ্যাক্টরিতে উৎপাদন বন্ধ না হলে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনার অভয়াশ্রমে জাটকা প্রতিরোধ কর্মসূচি সফল হবে না।