কিছুদিন আগেই কাটা হয়েছে বোরো ধান। ইতিমধ্যে বাজারে নতুন চালও আসতে শুরু করেছে। তবে এই ভরা মওসুমেও লাফিয়ে বাড়ছে চালের দাম। খুলনায় শুধুমাত্র একমাসেই চালের দাম বেড়েছে তিনবার। মানভেদে প্রতিকেজি চালের দাম বেড়েছে ২ থেকে ৮ টাকা পর্যন্ত। চালের দাম বৃদ্ধিতে খুলনার ব্যবসায়ীরা একে-অপরকে দুষছেন। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ-ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে বাড়িয়েছে চালের দাম। নগরীর কয়েকটি বাজার ঘুরে জানা গেছে, প্রতিকেজি নতুন সরু মিনিকেট চাল ৬৮ টাকায় বিক্রি করছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। অনুরূপভাবে মাঝারি নতুন মিনিকেট ৬৫ টাকা, বাঁশমতি ৮০ টাকা, নাজিরশাইল ৭০ টাকায় বিক্রি করছেন তারা। অথচ একসপ্তাহ আগেও একই চাল বিক্রি করেছেন ব্যবসায়ীরা ৬০ টাকায়।
অনুরূপভাবে মাঝারি মিনিকেট চাল ৫৬ টাকা, বাঁশমতি ৭২ টাকা, নাজিরশাইল ৬৫ টাকায় বিক্রি করেছেন। যদিও দাম বৃদ্ধির জন্য খুচরা ব্যবসায়ী ও পাইকাররা একে-অপরের ওপর দোষারোপ করছেন। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জনা গেছে, বড় চাল মালিকদের অতিমাত্রায় ধানের মজুতনীতির কারণে দফায় দফায় বেড়ে চলেছে চালের দাম।
খুলনা ধান-চাল বণিক সমিতির সভাপতি মনির আহমেদ বলেন, ‘পাইকারি বা খুচরা ব্যবসায়ীরা ধান বা চাল মজুত রাখেন না। ধান-চালের মজুত ও দাম সব নিয়ন্ত্রণ করে থাকে অটোরাইস মিলগুলোর মালিকরা। তারাই এখন ধান-চালের রাজত্ব করেন। ভরা মওসুমে এইভাবে চালের দাম বাড়তে আগে কখনো দেখিনি। খাদ্য বিভাগের দাবি, জেলায় দুই শতাধিক লাইসেন্সধারী হাসকিং চালকল ও ১৪টি অটোরাইস মিল নিয়মিত পরিদর্শন করা হচ্ছে।
দিনাজপুর ভাণ্ডারের মালিক মো. ফারুখ আহমেদ বলেন, সরকার মিল মালিকদের কোটি কোটি টাকা লোন দিচ্ছে। এ টাকা দিয়ে তারা হাজার হাজার মণ ধান কিনে মজুত করছে। চালের সংকট দেখা দিলে তারা মজুত করা চাল বাজারজাত করবেন। সিলেটের বন্যার কথা বলে তারা চালের দাম বৃদ্ধি করছে।
খুলনা ধান-চাল বণিক সমিতির সভাপতি মনির আহমেদ বলন, পাইকারি বা খুচরা ব্যবসায়ীরা ধান বা চাল মজুত রাখেন না। ধান-চালের মজুত ও দাম সব নিয়ন্ত্রণ করে থাকে অটোরাইস মিলগুলোর মালিকরা। তারাই এখন ধান-চালের রাজত্ব করে। তবে ভরা মওসুমে এই রকম চালের দাম বাড়তে কখনো দেখেননি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
খুলনা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ বাবুল হোসেন জানান, জেলায় দুই শতাধিক লাইসেন্সধারী হাসকিং চালকল রয়েছে। এ ছাড়া ১৪টি অটোরাইস মিলও আছে। ‘সরকারি আইন অনুসারে, আমরা নিয়মিত ওই মিলগুলো পরিদর্শন করছি। আমাদের কয়েকটি দল বিভিন্ন মিল পরিদর্শন করেছে। একই সঙ্গে লাইসেন্সধারী পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের গোডাউনও আমরা নিয়মিত পরিদর্শন করছি।’ মজুত আইনে যা আছে, তার বেশি ধান বা চাল খুলনার কোনো মিলে এখনও পাওয়া যায়নি বলেও দাবি করেন তিনি।