ডাঃ এস.জামান পলাশ
ওভারি বা ডিম্বাশয় হচ্ছে জরায়ুর দুই পাশে অবস্থিত দুটি ছোট গ্রন্থি, যা থেকে মহিলাদের হরমোন নিঃসরণ হয় এবং ডিম্বাণু পরিস্ফুটন হয়। এভাবে এই গুরুত্বপূর্ণ অর্গানটি মেয়েদের মাসিক হতে ও বাচ্চা হতে সাহায্য করে। ওভারিয়ান সিস্ট হলো ওভারিতে পানিপূর্ণ থলে। ঋতুবতী মেয়েদের ক্ষেত্রে প্রায়ই এই সিস্ট দেখা যায়। ওভারিয়ান সিস্ট অনেক রকম হয়ে থাকে, সবচেয়ে বেশি হয় সিম্পল বা ফাংশনাল সিস্ট।
কেন হয়
ওভারি থেকে কোনো কারণে ডিম্বস্ফুটন না হলে অথবা ডিম্বস্ফুটন হওয়ার পরও ফলিকলগুলো চুপসে না গেলে সিস্ট তৈরি হতে পারে।
ফাংশনাল সিস্ট ছাড়াও ওভারিতে আরো অনেক রকম সিস্ট হতে পারে, যেমন-
পলিসিস্টিক ওভারি
অনেক দিন ধরে ক্রমাগত ডিম্বস্ফুটন না হলে ওভারিতে ফলিকলগুলো জমতে থাকে। এর সংখ্যা ১০ বা এর অধিক হলে পলিসিস্টিক ওভারি বলা হয়।
এন্ডমেট্রিওটিক সিস্ট
এই সিস্ট থাকলে মাসিকের সময় অনেক পেইন হয় এবং রোগী বন্ধ্যাত্ব সমস্যায় ভুগে থাকে।
ডারময়েড সিস্ট
এটি এক ধরনের ওভারিয়ান টিউমার, যাতে শরীরের অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মতো টিস্যু থাকে। শুনতে অবাক লাগবে, কিন্তু এ ধরনের সিস্টে থাকতে পারে দাঁত, চুল ইত্যাদিও।
লক্ষণ
ফাংশনাল সিস্টের কোনো লক্ষণ থাকে না, এটি সাধারণত রুটিন আলট্রাসাউন্ড পরীক্ষায় ধরা পড়ে। তবে মাঝেমধ্যে পেটে ব্যথা, মাসিকের অনিয়ম নিয়েও কেউ কেউ আসতে পারে।
পরীক্ষা
পেটের আলট্রাসাউন্ড পরীক্ষায় ওভারিয়ান সিস্ট দেখা গেলে এটি আসলেই ফাংশনাল সিস্ট কি না তা অনেক সময় বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হতে হবে। এসব পরীক্ষার মধ্যে আছে ট্রান্স-ভেজাইনাল আলট্রাসাউন্ড, ল্যাপারস্কপি ও বায়োপসি এবং ক্যান্সার অ্যান্টিজেন টেস্ট।
চিকিৎসা
কোনো লক্ষণ না থাকলে এবং এর সাইজ ৫ সে.মি.-র নিচে থাকলে রোগীকে দুই থেকে তিন মাস পর্যন্ত অবজারভেশনে রাখা হয়। সাধারণত এ সময়ের মধ্যে ফাংশনাল সিস্ট অপসারিত হয়।এ রোগের জন্য হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা উত্তম।