মনির হোসেন
বাজারে শুধুই দুঃসংবাদ। মানুষের দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজন এমন সব ধরনের পণ্য ও সেবার মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে নিত্যপণ্যের। তেল, চাল, ডাল, আটা, ময়দা, মাছ-মাংস, পেঁয়াজ ও শাক-সবজিসহ এমন কোনো পণ্য নেই যার দাম সহনীয় মাত্রায় আছে।
গত ৩ মাসে এসব পণ্যের দাম লাগামহীন। এছাড়াও বেড়েছে বাড়িভাড়া, পরিবহণ ব্যয়, চিকিৎসা ও শিক্ষা উপকরণের দাম। কিন্তু আয় বাড়েনি। ফলে জীবনযাত্রায় বাড়তি ব্যয়ের জাঁতাকলে রীতিমতো পিষ্ট মানুষের জীবন। এসব দেখার যেন কেউ নেই। বিশেষ করে হাঁপিয়ে উঠেছে মধ্যবিত্ত।
এক্ষেত্রে নিম্নবিত্তের মানুষ সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় বিভিন্ন সরকারি সুবিধা পেলেও বাড়তি ব্যয়ের চাপে পড়েছে মধ্যবিত্তরা। ফলে মানুষের জীবনযাত্রার মান কমেছে। অনেককে সঞ্চয় ভেঙে দৈনন্দিন চাহিদা মেটাতে হচ্ছে। এক্ষেত্রে সরকারি তথ্যের সঙ্গে বাস্তবতার মিল নেই।
কারণ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে এবং মানুষের আয় বাড়ছে। এদিকে জাতিসংঘ মহাসচিব মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, এক বছরে বিশ্বে খাদ্যের দাম ৩০ শতাংশ বেড়েছে। আর এখনই ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধ না হলে বিশ্বে দুর্ভিক্ষ দেখা দেবে। ফলে সামনে আরও দুর্বিষহ সময় অপেক্ষা করছে।
অর্থনীতিবিদ ও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিশ্ববাজারে দাম বৃদ্ধি ও ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে পণ্যের দাম বাড়ছে। আর দাম কমা তো দূরের কথা আগামীতে আরও বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। জানতে চাইলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, জিনিসপত্রের দাম কমার তেমন কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। বরং তা আরও বাড়তে পারে। কারণ বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম বাড়লে তা সরাসরি প্রভাব পড়বে নিত্যপণ্যের ওপর। তিনি চলতি অর্থবছরের বাজেটে কর্মসংস্থান ও মানুষের আয় বাড়ানোর নানামুখী কর্মসূচি নিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। উলটো পণ্যমূল্য ও সেবার দাম বেড়েছে। এছাড়া চড়া মূল্যস্ফীতি মানুষের আয় খেয়ে ফেলার তাদের ক্রয় ক্ষমতাও কমেছে।
সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্যে দেখা গেছে, এক বছরে পামঅয়েলের দাম ৬১ শতাংশ বেড়েছে। আটা-ময়দার দাম বেড়েছে ৫৮ শতাংশ, সয়াবিন তেল ৫৬ শতাংশ, মসুর ডালের দাম ৪৭ শতাংশ, অ্যাঙ্কর ৩১ শতাংশ, ডিমের দাম বেড়েছে ২৯ শতাংশ, খোলা আটা ২৫ দশমিক ৮১ শতাংশ, ব্রয়লার মুরগি ১০ দশমিক ৮৫ শতাংশ, ফ্রেশ মিল্ক পাউডার ১০ শতাংশ, রুই মাছ ৯ দশমিক ০৯ শতাংশ, প্যাকেট লবণ ৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ, চিনি ৭ শতাংশ, আলু ৫ দশমিক ২৬ শতাংশ এবং পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৪ দশমিক ১৭ শতাংশ।
চলতি অর্থবছরে বিদ্যুৎ ও গ্যাস বিল, নিত্যপণ্য, বাড়ি ভাড়া, যাতায়াত ব্যয়, সন্তানের লেখাপড়ার খরচ এবং পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসা ব্যয় খাতে বেশি মাত্রায় খরচ বেড়েছে। এই বাড়তি ব্যয় মেটাতে গিয়ে কমে গেছে সঞ্চয়। নিম্ন আয়ের মানুষ বড় কোনো অসুখ না হলে চিকিৎসা নিচ্ছেন না। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, আরও দুর্দিন আসছে। কারণ প্রতিবার বাজেটের পর বিভিন্ন জিনিসের দাম এমনিতেই বাড়ে।
চলতি অর্থবছরের বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৩ শতাংশের মধ্যে রাখার কথা বলা হয়েছিল। তবে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) বলছে, মূল্যস্ফীতি হবে ৬ দশমিক ২২ শতাংশ। অর্থাৎ সরকারের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে মূল্যস্ফীতি সামান্য বেশি। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পরিস্থিতি একেবারে ভিন্ন।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য মনে করেন মূল্যস্ফীতির তথ্যের সঙ্গে বাস্তবতার সঙ্গে আদৌ সঙ্গতিপূর্ণ নয়। সরকারের তথ্যে আরও কৌতূহলের বিষয় হলো শহরের চেয়ে গ্রামে মূল্যস্ফীতি বেশি। গ্রামে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৭ শতাংশ। মোট মূল্যস্ফীতির চেয়ে বেশি। একইসঙ্গে খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের চেয়ে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি বেশি।
অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয়র মতে, অনেকেই বলেন বাংলাদেশের আমদানিকৃত পণ্যের দাম প্রতিবেশী দেশের তুলনায় কম। কিন্তু এই তথ্যও সঠিক নয়। কারণ বর্তমানে দেশে প্রতিকেজি পামঅয়েলের দাম ১৮৩ টাকা। ভারতের সঙ্গে তুলনা করে দেখা গেছে সেখানে দাম ১৭৩ টাকা। অর্থাৎ দেশটির চেয়ে বাংলাদেশে দাম কেজিতে ১০ টাকা বেশি। এছাড়াও আটা-ময়দায় ভারতের সঙ্গে পার্থক্য ৯ টাকা এবং মসুর ডালে ১০ টাকা।
তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতির ক্ষেত্রে বিবিএস ২০০৫-০৬ ভিত্তি বছর ধরে। অর্থাৎ ২০০৫-০৬ অর্থবছরে ভোক্তারা যে পণ্য ও সেবা ব্যবহার করতেন, তাকে ভিত্তি ধরে মূল্যস্ফীতির হিসাব করছে। কিন্তু গত ১৭ বছরে মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা ও খাদ্য অভ্যাসের অনেক পরিবর্তন হয়েছে। ফলে ৬ শতাংশ মূল্যস্ফীতির যে কথা বলা হচ্ছে, বাস্তবে এটি ১২ শতাংশ হওয়া অসম্ভব কিছু না। আগামীতে পরিস্থিতি আরও কঠিন হবে। কারণ সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম যে হারে বেড়েছে, সেই উচ্চমূল্যের পণ্য এখনও বাংলাদেশে আসেনি।
কেস স্টাডি : প্রভাতী ইন্স্যুরেন্সে চাকরি করেন জাহিদুল ইসলাম (৪৫)। সবমিলিয়ে মাসিক আয় ৩৩ হাজার টাকা। ১২ হাজার টাকায় মুগদায় দুই রুমের একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকেন। ছেলে নাহিদ মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে এবং মেয়ে মুগদায় আরেকটি স্কুলে চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী। বর্তমানে নিত্যপণ্যসহ সবকিছুর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিবারটি ঢাকায়র টিকে থাকা অত্যন্ত কষ্টকর।
কিন্তু ছেলেমেয়ের কথা চিন্তা করে ফ্যামিলি দেশে পাঠাতে পারছেন না। মেয়ের নামে প্রতিমাসে ৫০০ টাকার একটি ডিপিএস ছাড়া আর কোনো সঞ্চয় নেই। বড় কোনো অসুখ না হলে সহজে ডাক্তারের কাছে যান না। বিশেষ কোনো সংকট দেখা দিলে গ্রামের জমি বিক্রি করা একমাত্র ভরসা। ৪৫ হাজার টাকা বেতনে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকে চাকরি করেন রেজাউল। থাকেন কমলাপুরের জসীম উদ্দিন রোডে। আয়ের তুলনায় ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় তার অবস্থাও বেহাল। নিত্যপণ্যসহ এক বছরে খরচ যেভাবে বাড়ছে, তা মোকাবিলার সক্ষমতা নেই।
জাতিসংঘের মহাসচিবের মন্তব্য : বুধবার এক অনুষ্ঠানে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্থোনিও গুতেরেস বলেছেন, এক বছরে খাদ্যের দাম প্রায় ৩০ শতাংশ বেড়েছে। এ সময়ে তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্বে খাদ্য সংকট সৃষ্টি হতে পারে। ক্রমবর্ধমান দামের কারণে দরিদ্র দেশগুলো খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় পড়তে পারে।
বিশ্বব্যাংক খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা মোকাবিলায় ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের তহবিল ঘোষণার দিনই জাতিসংঘ মহাসচিব এই মন্তব্য করলেন। তিনি বলেন, ইউক্রেনের রপ্তানি যদি যুদ্ধ-পূর্ব পর্যায়ে নিতে না পারলে বিশ্ব দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি হতে পারে। যা বছরের পর বছর ধরে চলতে পারে।
মানুষের আয়ের সঙ্গে মিলিয়ে সম্প্রতি কয়েকটি পণ্যের তুলনামূলক পর্যালোচনা করেছে সিপিডি। সেখানে দেখা যাচ্ছে, ঢাকায় একজন মানুষের মাসিক গড় আয় ১৪৯ মার্কিন ডলার। কিন্তু এক লিটার দুধের দাম ৮০ টাকা, এক ডজন ডিম ১২০ টাকা এবং এক কেজি পেঁয়াজের দাম ৫৫ টাকা। কিন্তু চেক রিপাবলিকের অস্ট্রাবা শহরের মানুষের মাসিক গড় আয় ১ হাজার ৩৩১ ডলার।
সেখানে প্রতি লিটার দুধ সেখানে ৬২ টাকা। স্পেনের মালাগা শহরে একজনের মাসিক আয় ২ হাজার ২২৭ ডলার। সেখানে দুধের লিটার ৬২ টাকা। আবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওহিও রাজ্যের ডেটন শহরে একজন নাগরিকের মাসিক আয় ৩ হাজার ৯৫৫ ডলার। যা বাংলাদেশের চেয়ে ২৭ গুণ বেশি। কিন্তু সেখানে এক ডজন ডিম ১০৩ টাকা। অর্থাৎ আয় ২৭ গুণ বেশি হলেও ডিমের দাম প্রতি ডজনে ৭ টাকা কম।
মালয়েশিয়ার সেলানগর শহরের মানুষের মাসিক গড় আয় ৬৬৯ ডলার। সেখানে প্রতি ডজন ডিম ৮৫ টাকা। সার্বিয়ার বেলগ্রেড শহরে একজনের মাসিক গড় আয় ৩৩৫ ডলার। সেখানে এক কেজি পেঁয়াজের দাম ৪০ টাকা। আজারবাইজানের বাকু শহরে প্রতি নাগরিকের মাসিক গড় আয় ৩০৭ ডলার। সেখানে প্রতিকেজি পেঁয়াজের দাম ৩৭ টাকা। অর্থাৎ উন্নত দেশগুলোর চেয়ে বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি পণ্যের দাম বেশি।
বাড়িভাড়া : অনেকেরই অভিযোগ, ঢাকায় বছরে দুবার বাড়িভাড়া বাড়ে। বছরের শুরুতে অর্থাৎ জানুয়ারিতে একবার, আর জুনে নতুন বাজেট ঘোষণার পর আরেকবার। গত এক বছরে বাড়িভাড়া বেড়েছে ১২ শতাংশ। গত বছর যে বাড়ির ভাড়া ছিল ১০ হাজার টাকা। বর্তমানে গড়ে ওই বাড়ির ভাড়া হয়েছে ১১ হাজার ২শ হাজার টাকা। অন্যদিকে ঢাকার ১০টি জোনের মধ্যে ৩ স্তরের বাড়ি ভাড়া নির্ধারণ করেছে ডিসিসি।
এগুলো হলো মেইন রোডের পাশে, গলির ৩০০ ফুটের মধ্যে এবং গলির ৩০০ ফুটের বাইরে। বাড়ির ক্ষেত্রেও ৩টি স্থর রয়েছে। এগুলো হলো পাকা, সেমি পাকা এবং কাঁচা। পাকা বাড়ির ক্ষেত্রে প্রতি স্কয়ার ফুটে সর্বোচ্চ ভাড়া ১০ থেকে ১১ টাকা। এ হিসাবে এক হাজার স্কয়ার ফুটের বাসার সর্বোচ্চ ভাড়া হওয়া উচিত ১০ থেকে ১১ হাজার টাকা। কিন্তু বর্তমানে এরকম বাসার ভাড়া ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করা হচ্ছে।
বিদ্যুৎ ও গ্যাস বিল : বর্তমান কয়েক দফা বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া বাড়ানো হয়েছে গ্যাসের দামও। সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে। বিদ্যুৎ বিল আরও ৫৮ শতাংশ বাড়ানোর জন্য ইতোমধ্যে প্রস্তাব করা হয়েছে।
যাতায়াত ভাড়া : ৩ নভেম্বরে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়িয়ে ৮০ টাকা করে সরকার। এতে যানবাহনের ভাড়া ২৭ শতাংশ বেড়েছে। যানবাহনের ভাড়া বৃদ্ধি পাওয়ায় এর প্রভাব পড়েছে নিত্যপণ্য ও সব ধরনের সেবার ওপর।
লেখাপড়ার খরচ : শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বেতন ও কোচিং সেন্টারের খরচসহ সন্তানের লেখাপড়ার খরচ বেড়েছে পাল্লা দিয়ে। লেখাপড়ার খরচের মধ্যে ভর্তি ফি এখন অনেক অভিভাবকের জন্যই বোঝা। একই সঙ্গে স্কুলের বেতন বেড়েছে ব্যাপক হারে। আগে যে স্কুলে বেতন ছিল ৩ হাজার টাকা, এখন তা হয়েছে ৫ হাজার টাকা। নতুন ভর্তির ক্ষেত্রে ডোনেশনের নামে নেওয়া হচ্ছে বাড়তি টাকা।
চিকিৎসা ব্যয় : গত এক বছর ধরে অব্যাহতভাবে বাড়ছে ওষুধের দাম। একইসঙ্গে ডাক্তারের ফি, ল্যাবরেটরি টেস্টের খরচ বেড়েছে। ফলে এক বছরে চিকিৎসা ব্যয় ২৫ শতাংশের বেশি বেড়েছে।
পরিস্থিতি আরও নাজুক হচ্ছে : বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম ক্রমেই বাড়ছে। রাশিয়ার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত থাকলে আগামীতে তেল পাওয়া কঠিন হবে। এছাড়াও ডলারের সংকটের কারণে আমদানি ব্যয় বাড়ছে। এতে সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়বে। অন্যদিকে পাশের দেশ ভারত ইতোমধ্যে গম রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে। যুদ্ধের কারণে রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে গম আসা আগে থেকেই বন্ধ।
এতে আটা-ময়দার দাম বাড়তে শুরু করেছে। গমের দাম বাড়লে গরু ও মাছের খাদ্য হিসাবে গমের ভুষির দাম বাড়বে। এতে মাছ ও মাংসের দাম বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। আটা-ময়দার সরবরাহ কমলে চালের ওপর চাপ পড়বে। ফলে চালের বাজারে অস্থিরতা তৈরি হবে। দাম বাড়বে ময়দা দিয়ে তৈরি বিস্কুট, পাউরুটি, হোটেলের পরোটাসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম।
অর্থনীতিতে বৈষম্য সীমাহীন : অর্থনীতিতে যে সূচক দিয়ে আয় ও সম্পদের বৈষম্য পরিমাপ করা হয়, তাকে বলে গিনি কো-ইফিসিয়েন্ট। ওই সূচক অনুসারে ২০১০ সালে সবচেয়ে দরিদ্র ৫ শতাংশের আয় ছিল দেশের মোট আয়ের দশমিক ৭৮ শতাংশ। ২০১৬ সালে তা কমে মাত্র দশমিক ২৩ শতাংশে নেমে এসেছে। অন্যদিকে ২০১০ সালে সবচেয়ে ধনী ৫ শতাংশের আয় ছিল মোট আয়ের ২৪ দশমিক ৬১ শতাংশ।
কিন্তু ২০১৬ সালে তা বেড়ে ২৭ দশমিক ৮৯ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এর মানে হলো ধনীদের আয় বাড়ছে। কিন্তু আয় কমছে গরিবের। এছাড়া শুধু আয় নয়, সম্পদে বৈষম্য আরও বেশি। ২০০৫ সালে নিম্ন শ্রেণির ৫ শতাংশ মানুষের সম্পদ ছিল মোট সম্পদের মাত্র দশমিক ০৬ শতাংশ। ২০১০ সালে তা কমে দশমিক ০৪ শতাংশে নেমে এসেছে। অন্যদিকে ২০০৫ সালে উচ্চ শ্রেণির ৫ শতাংশের সম্পদ ছিল মোট সম্পদের ৪৭ দশমিক ৯৯ শতাংশ। ২০১০ সালে তা আরও বেড়ে ৫১ দশমিক ৩২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।