আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে জ্বালানি তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ ও সারের বিক্রয়মূল্য বাড়ানোর ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। তবে এসব পণ্য ও সেবার মূল্য একসঙ্গে বা বেশি হারে বাড়ানো হবে না। পর্যায়ক্রমে ও স্বল্প আকারে সমন্বয় করা হবে।
বাজেটে বলা হয়, করোনার পর হঠাৎ চাহিদা বাড়ার কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যমূল্য বেড়েছে। এর সঙ্গে গত ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হলে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রায় সব পণ্যের দামই বাড়তে শুরু করেছে।
সম্প্রতি অপরিশোধিত তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়ে ব্যারেলপ্রতি ১১৩ মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে। অপরদিকে প্রাকৃতিক গ্যাসের মূল্য বিশ্ববাজারে অন্তত ১২ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। তেল-গ্যাসের পাশাপাশি বৈশ্বিক আরও কয়েকটি পণ্যের ক্ষেত্রে রাশিয়া ও ইউক্রেন গুরুত্বপূর্ণ সরবরাহকারী দেশ। ফলে ওইসব পণ্যের দামও বেড়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির হার প্রায় ৬৫ শতাংশ, ইউরিয়া সারের মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে ১১৪ শতাংশ, গ্যাসের মূল্যও অস্বাভাবিক গতিতে বেড়েছে। এসব পণ্য আমদানি করতে আগের চেয়ে এখন দ্বিগুণের বেশি বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করতে হচ্ছে। বেশি দামে আমদানি করে কম দামে বিক্রি করতে হলে সরকারকে মোটা অঙ্কের ভর্তুকি দিতে হচ্ছে।
ইতোমধ্যে ওই তিন খাতে ভর্তুকি দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। এতে বাজেট ব্যবস্থাপনা চাপে পড়েছে। এই চাপ কমাতে আগামী অর্থবছরে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও সারের দাম সমন্বয় করার কথা বলা হয়েছে।
বাজেটে আরও বলা হয়, তবে এসব পণ্যে ও সেবার দাম একসঙ্গে বেশি হারে সমন্বয় করে জনগণের কাঁধে চাপিয়ে দেওয়া হবে না। পর্যায়ক্রমে ও সহনীয়ভাবে সমন্বয় করা হবে।
এদিকে অর্থনীতিবিদরা বলেছেন, সারের দাম বাড়ানো হলে কৃষি উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। কৃষি উৎপাদন বাড়ানোর যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে, তা অর্জিত হবে না। সারের দাম বাড়ানো হলে কৃষক পর্যায়ে ভর্তুকি বাড়াতে হবে।
গত নভেম্বরে যখন জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়, তখন আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি ব্যারেলের দাম ছিল ৮০ ডলারের নিচে। এখন তা বেড়ে ১১৩ থেকে ১১৫ ডলারে উঠেছে। জাহাজ ভাড়া বেড়েছে কয়েকগুণ। ফলে তেল আমদানি খরচ বেড়েছে কয়েকগুণ। এর দাম বাড়ানো হলে সব খাতে উৎপাদন ও সেবার ব্যয় বেড়ে যাবে। একই অবস্থা হবে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হলেও।