শওকত আলী :
চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ঠান্ডা জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন শত-শত শিশু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন, হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডাঃ মোঃ বেলায়েত হোসেন। শিশু বিভাগে ৪২টি ব্যাড থাকলেও প্রতিদিন গড়ে ১৫০ জন থেকে ২শ জন শিশু ভর্তি হচ্ছে। এদেরকে ব্যাড দিতে না পেরে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে ফ্লোরে ও কোলে রেখে। তবে শিশুদের অভিভাবকরা জানিয়েছে, তারা হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা সেবার কোন ঔষধ পাচ্ছে না। তারা বাহির থেকে ঔষধ ক্রয় করে শিশুদের চিকিৎসা সেবা নিচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলেছেন শিশুদের চিকিৎসার জন্য যে ঔষধ প্রয়োজন তা সরবরাহ নেই। শিশুদের অভিভাবকের অভিযোগ যেসব রোগী নগদ অর্থ দিচ্ছে এবং যারা প্রভাব বিস্তার করতে পারে তাদের জন্য হাসপাতাল থেকে ঔষধ দেওয়া হচ্ছে।
সরজমিনে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে জানাযায়, হঠাৎ করে ঠান্ডা বেশি পড়ায় চাঁদপুর শহরতলী ও উপজেলা গুলি থেকে প্রতিদিন গড়ে ১৫০ থেকে ২শ জন শিশু রোগী ভর্তি হচ্ছে। এদের মধ্যে ৩ মাস থেকে ৬ মাস ও ১ বছর বয়সের শিশু রোগী বেশি রয়েছে। এরা জর, শ্বর্দি, কাশি, নিমোনিয়া, রোটাঃ ভাইরাস, ব্রংকাইটিজ, কনভেনশন, থেলামাইশিয়া, রোগে আক্রান্ত শিশু অধিকাংশরাই। শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার শফিউল্যাহ মামুন জানান, হঠাৎ করে গত কয়েকদিন যাবৎ শিশু রোগী বেশি ভর্তি হচ্ছে। অভিভাবকরা বাসায় শিশুদের ঠিকমত পরিচর্যা না করায় তাদের বুকে ঠান্ডা লেগে, ও মায়েরা ঠান্ডার মধ্যে কাজ করে শিশুদেরকে বুকের দুধ পান করানোর ফলে শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে বেশি।
হাসপাতালে আসন সংখ্যার থেকে বেশি রোগী ভর্তি হচ্ছে। এতো বেশি শিশু ভর্তি হচ্ছে এদের চিকিৎসা দিতে ব্যাগ পেতে হয়। হাসপাতালে বর্তমানে গতকাল পর্যন্ত ৫শতাধিক শিশু ভর্তি রয়েছে। ব্যাড রয়েছে মাত্র ৪২টি বাকিদেরকে ফ্লোরে, হাসপাতালের বারান্দায় ও শিশুদের পিতা-মাতা কোলে রেখে চিকিৎসা দিচ্ছে। গত শনিবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ১৩৮ জন শিশু ভর্তি হয়েছে। গতকাল রোববার দুপুর পর্যন্ত শিশু বিভাগে ভর্তি ও চিকিৎসা নিয়েছে ১৫৬ জন।
চাঁদপুর জেলার ৮টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শিশু চিকিৎসক না থাকায় শত-শত শিশু আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা সেবার উপর নির্ভর করছে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপতালে। এব্যাপারে হাসপাতালের সেবিকা রোকেয়া বেগম ও ভিভা মজুমদার জানান, গত ১ সপ্তাহ যাবৎ স্বাভাবিকের চাইতে ৩-৪ গুন শিশু বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হচ্ছে। এদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে প্রয়োজনীয় ঔষধ রয়েছে। ব্যাড সংকট রয়েছে। যার ফলে শিশুদের অভিভাবকরা কস্ট শিকার করে তাদের সন্তানদের চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।