শওকত আলী, ॥
ইদানিংকালে ডিমের দাম শতকরা আড়াইশ হতে ৩শ’ বৃদ্ধি পাওয়ায় এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীরা আসল ডিমের সাথে কৃত্রিম প্লাস্টিকের ডিম মিশিয়ে বিক্রি করে ক্রেতাদের সাথে প্রতারণার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ধরনের একটি ঘটনা ঘটে শহরের বিষ্ণুদী মাদ্রাসা রোডের সাজ্জাদ স্টোরে। গত ২ দিন পূর্বে ওই এলাকার সাইফুল ইসলাম এক ক্রেতা এক ডজন ডিম ক্রয় করে বাসায় নিয়ে যায়। পরে রান্না করতে গেলে একটি ডিম ভাঙতে না পাড়ায় এ ঘটনার প্রকাশ পায়। পরে সে সাজ্জাদ স্টোরে গিয়ে জানালে তারা একটি আসল ডিম দিয়ে দেয় এবং বলে সে শহরের পাল বাজারের পাইকারি বিক্রেতা বাবুলের নিকট থেকে শত শত ডিম এক সঙ্গে ক্রয় করে থাকে। ডিম পাইকারী বিক্রেতা বাবুল জানায় সে, ঢাকার গাজীপুর কাপ্পাসিয়া থেকে প্রায় ৫০ হাজার ডিম ক্রয় করে এনেছে। সেখানে হয়তো তারা এঘটনা ঘটিয়েছে।
খরব নিয়ে জানা গেছে, চাঁদপুর শহর শহরতলী বিভিন্ন হাট বাজারে শত শত খুচরা ডিম বিক্রি করে থাকে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। এসব ব্যবসায়ীরা শহরের নতুন বাজার, পুরাণবাজার ও পালবাজারের পাইকারী ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে শত শত ডিম খাচার মাধমে ক্রয় করে থাকে। দেশের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ও অভিরাম কয়েক মাস ধরে বৃষ্টি হওয়ায় কাঁচা শাক সবজি নষ্ট হওয়ায়, বাজারে সবজির দাম অনেক গুণ বৃদ্ধি পায়। এর সাথে সাথে রমযানের ঈদের পর থেকে প্রতি শত্ ডিমের বৃদ্ধি পায় আড়াইশ থেকে ৩শ’ টাকা। এদাম বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীদের সাথে যোগসাজসে, প্লাস্টিক কারখানার মালিকরা গোপনে অবিকল ডিমাকৃতির কৃত্রিম ডিম বানিয়ে আসল ডিমের সাথে মিশিয়ে বিক্রি করে নিজেরা লাভবান হচ্ছেন। দোকানী থেকে ক্রেতা এক কুড়ি ডিম কিনলে, তাতে ২/৩টি কৃত্রিম ডিম দিয়ে দেওয়া হয়। ক্রেতা বাড়িতে নিয়ে ডিম সিদ্ধ করার পর অনেকে বুঝতে পারে। আবার অনেকে বুঝতে পারে না। কৃত্রিম ডিম আসল ডিমের সাথে আগুনে সিদ্ধ হয়ে যায়। যারা ডিম ভাজি করে ভক্ষন করেন, তারা ডিম ভাজি করার সময় কৃত্রিম ও আসল ডিম বুঝতে পারে। এছাড়া বিভিন্ন হোটেল/রেস্টুরেন্টে আসল ভেজে বিক্রি করার সময় ডিমের খোসা রেখে সে খোসা এক শ্রেণির ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে দেয়। তারা এসব খোসার ভিতরে ডিমের লালার মত পদার্থ প্রবশে করে, অপর ভাঙ্গা ডিমের খোসা লাগিয়ে তা’ আইকা বা সাদা ঘাম দিয়ে জোড়া দিয়ে থাকেন। যা বুঝা যাওয়ার কোন উপায় থাকে না। খুব একটা কঠিনভাবে দেখলে বুঝা যাবে। এ ডিম ভাজলে অনেকটা রাবারের মত খাওয়ার সময় বুঝা যাবে। নাম না প্রকাশ করার সত্বেও এ তথ্য প্রদান করেন একজন ডিম ব্যবসায়ী ও একজন হোটেলের পরটা কারিকর। এসব প্রতারণা দীর্ঘদিন ধরে চলে আসলেও তা’ প্রকাশ পায়নি বা বাসা বাড়ির গৃহিনীদের কাছে সীমাবদ্ধ ছিল। ইদানিংকালে ডিমের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বা বেশি আকারে প্রতারণা হওয়ায় তা’ প্রকাশ পাচ্ছে।
একজন প্লাস্টিক কারখানার মালিক এ ব্যাপারে বলেন, এ ধরনের খেলা ডিম বহুবছর পূর্ব থেকে বানানো হয়ে আসছে। তবে এ ডিম আসল ডিমের পরিবর্তে বিক্রির জন্য নয়। এগুলো খেলনার জন্য ও সাজিয়ে রাখার জন্য তৈরি হয়। প্রতারণা যারা করছে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা করা একান্ত প্রয়োজন।
চাঁদপুর।
১০-০৯-২০১৫