গার্মেন্টসহ সব রপ্তানিমুখী শিল্প ও কলকারখানা আজ থেকে খুলছে। সেই সঙ্গে শ্রমিকদের ঢাকায় আসার জন্য আজ দুপুর ১২টা পর্যন্ত সব ধরনের গণপরিবহন খোলা রাখা হচ্ছে। গার্মেন্ট ও কলকারখানা খুলে দেওয়ার সরকারি ঘোষণার পরপরই গতকাল ঘাটে ঘাটে ঢাকামুখী মানুষের স্রোত দেখা গেছে। মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ও মাদারীপুরের শিবচরের বাংলাবাজার ঘাটে সকাল থেকেই ছিল মানুষের উপচে পড়া ভিড়। লকডাউনে লঞ্চ ও স্পিডবোট বন্ধ থাকায় চাপ ছিল ফেরিতে। যাত্রীরা গাদাগাদি করেই উত্তাল পদ্মা পার হচ্ছেন।
সড়কপথেও ঢাকামুখী যাত্রীদের চাপ ছিল গতকাল। বিভিন্ন সড়কে দেখা গেছে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। সারা দেশ থেকে ট্রাক, প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, পিকআপ ও ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেলসহ যে যেভাবে পারছেন ঢাকায় ফিরছেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। উপচে পড়া ভিড়ের মধ্যে উধাও হয়ে গেছে স্বাস্থ্যবিধি। মাস্ক না পরেই, গাদাগাদি করে যানবাহনে উঠছেন যাত্রীরা। লকডাউনের কারণে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে বিড়ম্বনা মাথায় নিয়ে বিভিন্ন উপায়ে ঢাকায় ফিরছে মানুষ।
বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান গতকাল সন্ধ্যায় বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এখন থেকে আগামীকাল (আজ রবিবার) দুপুর ১২টা পর্যন্ত শ্রমিকদের যাতায়াতের জন্য সরকার সব ধরনের গণপরিবহন চালু রাখার সিদ্ধান্তের কথা বিজিএমইএকে জানিয়েছে। এদিকে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন গতকাল গণমাধ্যমকে বলেছেন, করোনা সংক্রমণ রোধে আগামী ৫ আগস্ট পর্যন্ত যে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে, তা শিথিল করার চিন্তা করছে সরকার। মানুষের জীবন-জীবিকার কথা চিন্তা করে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। তবে সবকিছুই নির্ভর করছে প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনার ওপর।
তিনি বলেছেন, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে করোনার সংক্রমণ কমানো আমাদের মূল লক্ষ্য। কী উপায়ে কাজ ঠিক রাখা যায়, আবার সংক্রমণ কমানো যায়, এমন সব বিকল্প উপায় নিয়ে চিন্তা করা হচ্ছে। ব্যবস্থা নিতে একটু সময় লাগবে। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘কঠোর বিধিনিষেধ মানে সবকিছু বন্ধ থাকবে। যেহেতু শিল্পকারখানা খুলে দেওয়া হয়েছে- তাহলে তো কঠোর থাকল না। অন্যান্য অফিস পুরো খুলবে নাকি সীমিত পরিসরে খোলা রাখা যাবে, সেসব বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। পরিস্থিতি বিবেচনা করে ৩ কিংবা ৪ আগস্ট এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে। তবে সবকিছুই নির্ভর করছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনার ওপর।’
আজ দুপুর পর্যন্ত চলবে লঞ্চ : পোশাক কারখানাসহ রপ্তানিমুখী শিল্পকারখানায় কাজে যোগ দিতে শ্রমিকদের পরিবহনের জন্য যাত্রীবাহী লঞ্চ আজ দুপুর ১২টা পর্যন্ত চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। গতকাল রাতে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) জনসংযোগ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।