মাহফুজ মল্লিক:
মতলব দক্ষিণ নারায়ণপুরে ফাহাদ নামে ৮ বছরের শিশুর স্বপ্নে পাওয়া গুপ্তধন চুরি নিয়ে এলাকায় তুলকালাম কা- ঘটেছে। এলাকায় একাধিকবার সালিস করেও চুরি হওয়া অমূল্য ধন কেউই উদ্ধার করতে পারেনি। পরে মতলব দক্ষিণ থানা পুলিশকে অবহিত করা হলে তারাও ব্যর্থ হয়। গত ৩১ মার্চ দুপুরে উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের পূর্ব বারীগাঁও গ্রামে এ চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ঐ গ্রামের আঃ ছাত্তার প্রধানিয়ার ছেলে ফাহাদ হোসেন (৮) গত বছর রোববার দুপুরে তাদের বাড়ির পশ্চিম দিকে একটি খাল থেকে মূল্যবান এ গুপ্তধনটি উদ্ধার করে উপরে নিয়ে এলে আসমা আক্তার (১৫) নামের এক স্কুল ছাত্রী গুপ্তধনটি ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
গুপ্তধন পাওয়া শিশু ফাহাদ হোসেন জানান, গত শুক্র ও শনিবার স্বপ্নে দেখে বাড়ির পশ্চিম দিকে আনুমানিক আড়াই শ’ গজ দূরে খালের মাঝখানে একটি কুমড়া আছে, সেটি নিয়ে আসার জন্য। পরপর দু’দিন স্বপ্নে দেখার পর রোববার (২৪ মার্চ) দুপুর আনুমানিক ১২টায় তার ছোট ভাই রাকিবকে (৭) নিয়ে ঐ খালের মাঝখানে কাঁদা-মাটির নিচে দেখতে পায় কুমড়ার অবিকল একটি বস্তু ঝিকমিক করছে। পরে বস্তুটি খালের নিচ থেকে তুলে উপরে নিয়ে এলে পার্শ্ববর্তী সারপাড় গ্রামের টমটম চালক তাফাজ্জল বেপারীর মেয়ে নারায়ণপুর পপুলার উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী আসমা আক্তার ঐ পথ দিয়ে যাওয়ার সময় শিশুটির হাতে গুপ্তধনটি দেখে তা ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
ঘটনাটি শিশু ফাহাদ বাড়িতে এসে তার বাবা-মাকে জানালে প্রথমে বিষয়টি গুরুত্ব দেয়নি তারা। পরে এ গুপ্তধনের বিষয়টি ঐ শিশুটিকে আবারো স্বপ্নে দেখানো হয় তা উদ্ধারের জন্য। এ ব্যাপারে ফাহাদ তার বাবা-মাকে জানালে তারা বিষয়টি এলাকাবাসীকে অবহিত করেন। ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে প্রতিদিন শ’ শ’ মানুষ ফাহাদের বাড়িতে ভিড় জমাতো। ফাহাদের তথ্যের ভিত্তিতে নারায়ণপুর এলাকায় একাধিকবার সালিস হয়। তবে গুপ্তধনটি উদ্ধার না হওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে নানা গুঞ্জনের সৃষ্টি হয়। কেউ বলেছে কোটি টাকার গুপ্তধনটি আত্মসাৎ করার জন্য এলাকায় নাটক সৃষ্টি করেছে একটি বিশেষ মহল। আবার কেউ কেউ বলছে বিষয়টি গুজব। ঘটনাটি নিয়ে নারায়ণপুরে ব্যাপক তুলকালাম সৃষ্টি হলে পুলিশ আঁচ করতে পেরে গত ৫ এপ্রিল মতলব দক্ষিণ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বে এএসআই মনির নারায়ণপুর সারপাড় ও বারীগাঁও এলাকা পরিদর্শন করেন। পরে ঘটনার রহস্য জানার জন্য ফাহাদ ও তার ছোট ভাই রাকিব ও আসমাকে থানায় নিয়ে আসা হয়।
ফাহাদ হোসেনের তথ্য অনুযায়ী নারায়ণপুর বাজার ও বণিক সমিতির সভাপতি সফিকুল ইসলাম স্বপন মজুমদার, ব্যবসায়ী সুরুজ খানসহ তাদের উভয়ের অভিভাবকদের উপস্থিতিতে চুরি হওয়া গুপ্তধনের বিষয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ জাহাঙ্গীর আলম জানতে চাইলে এ সম্পর্কে কিছুই জানে না বলে মেয়েটি অস্বীকার করে। পরে নারায়ণপুর বাজারের সভাপতিসহ অন্যান্যদের জিম্মায় তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়। বলা হয়, ৩ দিনের মধ্যে এর প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করার জন্য।
শিরোনাম:
বুধবার , ২৩ এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ১০ বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।