পৌর এলাকার অন্যান্য স্থানে যেভাবে সৌন্দর্য মণ্ডিত ও উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে তুলনামূলকভাবে পুরাণবাজারে সেভাবে নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধি পায়নি। গড়ে উঠেনি নতুন কোনো স্থাপনা। তবে পৌর মেয়রের আন্তরিক প্রচেষ্টায় পুরাণবাজারের রাস্তাঘাটসহ বস্তি উন্নয়নে ব্যাপক উন্নতি সাধিত হয়। কিন্তু পৌর পাঠাগারসহ নতুনভাবে কমিউনিটি সেন্টার গড়ে উঠেনি। তবে পৌর মেয়র পুরাণবাজারে পৌরসভার লোহারপুলের নিকট প্রভাতী মার্কেটসহ রয়েজ রোডস্থ পৌর কমিউনিটি সেন্টারটি বহুতল ভবন করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন বলে জানা যায়। কিন্তু তা কবে নাগাদ শুরু হবে সে ব্যাপারে স্পষ্ট করে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। বর্তমান পৌর কমিউনিটি ভবনটিতে সকল প্রকার আচার অনুষ্ঠান নিরাপত্তার স্বার্থে বন্ধ করে দেয়া হলেও থেমে নেই তার কার্যক্রম। গত ২৯ নভেম্বর শনিবার রাতেও দেখা যায় পরিত্যাক্ত পৌর কমিউনিটি সেন্টারটিতে আনন্দ উল্লাসের মধ্য দিয়ে চলছে ভৌভাত অনুষ্ঠান। যে অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছে কয়েকশ’ অতিথিবর্গ। বিদেশী অতিথিসহ আগত আমন্ত্রিত ব্যক্তিবর্গরা হয়তো জানেন না তারা কোন্ ভবনে মনের আনন্দে আতিথিয়েতা গ্রহণ করছে।
গত ২৯ নভেম্বর এ ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই অনুষ্ঠিত হয় স্থানীয় ঘোষপাড়ার বাসিন্দা উপানন্দ ঘোষের পুত্র প্রদীপ ঘোষের বিবাহত্তোর বৌভাত অনুষ্ঠান। অথচ এ বৌভাত অনুষ্ঠানের জন্য পৌর কমিউনিটি সেন্টার ব্যবহারের কোন ছাড়পত্রের সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি পৌর কমিউনিটি সেন্টারের দায়িত্বে থাকা লাইব্রেরিয়ান খালেদুর রহমান রানার কাছে।
গতকাল ৩০ নভেম্বর পুরাণবাজার পৌর কমিউনিটি সেন্টারের অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয় পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী আশুতোষ দত্তের কাছে। তিনি স্বীকার করেন ভবনটির বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দেয়ায় ভবনটিতে সকল প্রকার আনুষ্ঠানিকতা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু অনুষ্ঠানাদি সম্পন্ন হওয়ার ব্যাপারে তার কিছুই জানা নেই। পরবর্তীতে এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হয় পৌর সচিব আবুল কালাম ভূঞার কাছে। তিনি পৌর কমিউনিটি সেন্টারে এখনো অনুষ্ঠান হচ্ছে শুনে অবাক হয়ে যান। সাথে সাথে কমিউনিটি সেন্টারের দায়িত্বে থাকা খালেদুর রহমানের মুঠোফোনে ঘটনাটি জানতে চেষ্টা করেন এবং অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠান সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে বলেন, কোনোরূপ অঘটন হলে এর দায়িত্ব কে নিবে এবং লিখিত অনুমতি ব্যতীত কেন হলো ব্যবহার করতে দেয়া হলো তার জন্যও কৈফিয়ৎ তলব করেন। আমরা কেউই রানা প্লাজার মতো দৃশ্যের অবতারণা দেখতে চাই না। চাইনা কেউ পৌরসভার ঊর্ধ্বে উঠে ব্যক্তি সুবিধা হাসিলের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার মধ্য দিয়ে পৌর কমিউনিটি সেন্টার ব্যবহারে উৎসাহী হোক। এ অতি উৎসাহী ব্যক্তিদের জন্য পৌর পরিষদ বিভিন্ন প্রশ্নের সম্মুখীন হবেন তাও পৌরবাসীর কাম্য হতে পারে না। ভবনটি একান্তই ঝুঁকিপূর্ণ বলে এখনই সতর্কীকরণ সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেয়া হোক। যাতে কেউ আর ভবন ব্যবহারে উৎসাহী না হন। মাত্র ১০ বছরের মাথায় পৌর কমিউনিটি সেন্টারটি ব্যবহারের অযোগ্য হওয়ায় অনেকেই হতাশা ব্যক্ত করেন। তৎকালীন পৌর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ফজলুল হকের তত্ত্বাবধানে পৌরসভার উন্নয়ন তহবিলের ২৩ লাখ ৫৭ হাজার ৬শ’ ৯টাকা ব্যয়ে ২০০৪ সালে পৌর পরিষদ তা পূনঃনির্মাণ করেন এবং এ পুনঃনির্মাণ কাজটি সম্পন্ন করেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মোঃ নুরুল ইসলাম মিয়াজী এবং ২০০৪ সালের ১৫ জুলাই এ কমিউনিটি সেন্টারটির শুভ উদ্বোধন করেন তৎকালীন পৌর পরিষদের চেয়ারম্যান সফিকুর রহমান ভূঁইয়া। পৌরবাসীর প্রত্যাশা, পুরাণবাজারে অচিরেই নির্মাণ করা হবে সকল সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন আধুনিক পৌর কমিউনিটি সেন্টার বা পৌর মিলনায়তন। যা থেকে উপকৃত হবে পৌরবাসী।