শাহরিয়ার খাঁন কৌশিক ॥
চাঁদপুরে পদ্মা মেঘনার ইলিশ রক্ষায় জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন যখন আদা জল খেয়ে মাঠে নেমেছে ঠিক তখন পুরানবাজারের জাল ঘরগুলোতে জমে ওঠেছে কারেন্ট জালের রমরমা কেনাবেচা। জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে দোকানে মাল না রেখে গোডাউনে মজুদ রেখে দেদারছে চালাচ্ছে কারেন্ট জালের ব্যবসা। আর এ মহা বানিজ্যের নেতৃত্বে রয়েছে চাঁদপুর সুতা ব্যবসায়ী সমিতির শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দরা। এদিকে প্রতিদিন দিন রাত সমান তালে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও জেলা মৎস অফিস ষাটনল থেকে শুরু করে চরভৌরবী পর্যন্ত অভিযান দিয়ে প্রতিদিন ব্যপক কারেন্ট জাল, ঝাটকা ইলিশ ও জেলেদের আটক করছে। আটককৃত জেলেরা বলছে পুরানবাজারের জালঘর গুলো থেকেই তারা কারেন্ট জাল ক্রয় করছে। যদিও কারেন্ট জাল উৎপাদন, বিপনন ও সরবরাহের ব্যপারে হাইকোর্টের নিশেধেজ্ঞা রয়েছে। জানাগেছে, পুরানবাজারের ফলপট্রি এলাকায় অবস্থিত জেলার স্বর্ব বৃহৎ জালের বাজারে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকার জাল বিক্রি হয়ে আসছে। বেশি মুনাফার আশায় হাইকোর্টের নিশেধেজ্ঞা অমান্য করে কিছু ব্যবসায়ি দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্ন জালের পাশাপাশি কারেন্ট জালের ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। আর এ কারেন্ট জালের ব্যবসার নেতেৃত্বে রয়েছে চাঁদপুর সুতা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শ্রীরুপ বর্মন ও সাধারন সম্পাদক আশিষ দেবনাথ। প্রশাসনের চোখকে ফাকি দিতে অভিনব কায়দায় দোকানে বিভিন্ন বৈধ জালের প্রর্দশনী করে গোডাউনে কারেন্ট জালের মজুদ রেখে জেলেদের কাছে চড়া দামে কারেন্ট জাল বিক্রি করছে। এমনটাই জানিয়েছেন আটককৃত সকল জেলেরা। জেলেরা জানায়, তারা পুরানবাজারের ফলপট্রি এলাকার জাল ঘর গুলো থেকে কারেন্ট জাল ক্রয় করছে। দোকানগুলোতে কারেন্ট জাল ক্রয় করতে গেলে প্রথমে তারা নেই বলে জানায়। পরে জেলে কিনা যাচাই বাচাইয়ের পর তারা কারেন্ট জাল আছে বলে জানায় ও প্রশাসনের নজরধারীর অজুহাত দেখিয়ে বেশি দাম হেকে বসে। পরে দর দাম হলে জেলেদের দোকানে বসিয়ে রেখে গোডাউন থেকে কারেন্ট জাল এনে দেয়। পুরানবাজারের প্রত্যেকটি জালঘরের গোডাউনে বিপুল পরিমানে কারেন্ট জাল মজুদ রয়েছে বলে জানায় জেলেরা। এদিকে চাঁদপুর সুতা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক খোদ নিজেরাই কারেন্ট জাল বিক্রির নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। সকাল থেকে শুরু করে রাত পর্যন্ত প্রতিদিন পুরানবাজারে কারেন্ট জালের হরদম বেচাকেনা চলে। কিছু কিছু ব্যবসায়ী কিছু স্বনামধন্য রাজনৈতিক দলের নেতার নাম ভাঙ্গিয়ে দীর্ঘদিন দম্বের সাথে এ ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। প্রতিদিন গভীর রাতে লঞ্চ ও ট্রলার যোগে পুরানবাজারের দুদপট্রি এলাকার মদিনা মসজিদের পাশে মৌলভী ঘাট, পুরান ফায়ার ডিবির মোড়, ভূইয়ার ঘাট, ওরা পট্রি, মাছ বাজার এলাকার মেঘনা নদীর পারে কারেন্ট জালগুলো আনলোড হয়। এছাড়া সড়ক পথে হাইস গাড়ি ভাড়া নিয়ে পুরানবাজারের ব্যবসায়িরা মুন্সিগঞ্জ মুক্তারপুর থেকে কারেন্ট জাল নিয়ে মতলব হয়ে পুরানবাজরে প্রবেশ করে। তারা কয়লাঘাট ও ভূইয়ার ঘাট এলাকায় মালগুলো আনলোড করার পর কিছু মাল গুদামজাত ও বাকিগুলো ইঞ্জিন চালিত নৌকা দিয়ে চলন্ত লঞ্চে ওঠিয়ে দেয়। ধারাবাহিক প্রতিবেদনে এসকল কারেন্ট জাল ব্যবসায়িদের নাম ও মজুদ করা গোডাউনের নাম প্রকাশ করা হবে।
এ ব্যপারে চাঁদপুর সুতা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শ্রীরুপ বর্মন জানায়, পুরানবাজারে কারেন্ট জাল বিক্রি হয় তা সত্য। তবে যতদিন সভাপতি পদে আছি পত্রিকায় এ সংক্রান্ত কোন সংবাদ প্রকাশ না করার অনুরোধ করছে। আপনাদের প্রতি নজর থাকেবে।
সুতা ব্যবসায়ি সমিতির সাধারন সম্পাদক আশিষ দেবনাথ জানায়, দোকানীরা অনান্য জালের পাশাপাশি কিছু কারেন্ট জাল বিক্রি করে তা অস্বিকার করার সুযোগ নেই। কারন সকল কিছুর খোজখবর আপনারা রাখেন। তবে ব্যবসায়ীদের সাথে যোগাযোগ করে আপনাদের সম্মানের ব্যবস্থা করবো। প্লিজ পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করবেন না করলে ব্যবসায়িদের সমস্যা হবে।